• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাণ্ডুলিপির কবিতা

মা আমার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছিল

  অরণ্য আপন

১১ জানুয়ারি ২০২০, ১১:১১
ছবি
প্রচ্ছদ : কাব্যগ্রন্থ ‘মায়ের কবরের মতো আমি একা’

মা

মা আমার পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছিল মা চলে গেল তারপর অনেকে ধূসর মেঘের মতো এল আবার পাল তোলা নৌকার মতো চলেও গেল শুধু জুহিতাই থেকে গেল এ পৃথিবীর মতো মায়ের কবরে আজান হয়, আমি শুনি মায়ের কবরে যাবার জন্য আমি স্বপ্ন বুনি এ কবর জেগে থাকে আমার মাথার শিয়রে মগজের ভেতর এক নিঃশ্বাস দুঃখ অন্ধকার করে।

রক্তে

পাঞ্জাবিটা ভিজে গেছে বুকের কাছে রক্তে জুহিতা কখন এসেছিল জানি না বেগার পড়ে আছি এ পৃথিবীতে কবিতা নেই কোনো হাতে দিনটা ঘুরিয়ে দিলে রাত হয়ে যায় আকাশের কাছে আকাশ রেখে কতদূর যাওয়া যায় জীবনটা উলটে দিয়েছি চোখ পিছনে চলে গেছে সামনে আমি শুধু মানুষ, রাস্তা, খোদা পিছনে পড়ে গেছে অপেক্ষা কর শবের মতো আকাশ ডুব দিতে গেছে অদেখা এক পৃথিবী রোদ থেকে বের হয়েছে বিষ হয়ে গেছে জীবনের সমস্ত ভাষা বিষ হয়ে গেছে জীবনের সমস্ত আশা জলের স্তনে ডুবে গিয়ে জীবন হলুদ ঘাসের মতোই দুঃস্বপ্ন খায় পরের পাতান রাস্তা খায় পরের জ্বালান বিড়ি খায় পরের বাসি রাত খায় পরের দুর্গন্ধ জ্ঞান খায় তারপর জীবন অযু নিয়ে শেষ হয়ে যায় হাত আমাকে ঘুসি দেখায় পা আমাকে লাত্থি দেখায় হৃদয় শুধু আমাকে প্রেম দেখায় না চোখ শুধু আমাকে জুহিতাকে দেখায় না ঠোঁট শুধু আমাকে চুমু দেখায় না তোমরা হাতে মাটি নিয়ে থাকো দূরে দূরে কে কে আছে, ডাকো একটা জীবনপাখি ডানা ঝাপ্টে ঝাপ্টে মরে যাচ্ছে মরার পর হয়তো দেখব আমি জমিনে নয় আকাশে ঘুমিয়ে আছি হৃদয় দিতে গিয়ে যারা পাথর দিয়েছে তাদের দেখব ভুলে গেছি চোখটা জলে পুড়ে গেল হৃদয়টা হৃদয়ে থেকে গেল।

বার্তা

তোমার সাথে দেখা হলে ধান খাওয়াব পাখিদের একটা পাখি জানালার কার্নিশের ডালে বসে থেকে গেল ঠোঁট নড়াল ইতিউতি তাকাল তুমি কি ওকে আমার কাছে পাঠিয়েছিলে দাঁড়িয়ে থাকা ভোর খুলে দিয়েছিল দোর তারপর বসে পড়ল চোখের ভিতর চোখের জল খেয়ে বুকের খবর নিল তারপর ফরফরে করে উড়াল দিল তুমি কি বার্তা পেয়েছিলে এখনো চাকরিটা হয়নি আমার এখনো ঘুম কাটেনি খোদার বৃষ্টি পাঠিয়ে দিও, আজকাল বড্ড খিদে পায় চোখের জল ছাড়া আর কিছু পাই না ভাগ্যের থালায়।

মাছের চোখে

অনেকদিন পর একটা সকাল ঠোঁট খুলে কথা বলল ভালো লাগল এ জীবন অনেকদিন পর ভালো লাগল এ পৃথিবী ঢেকে দিল কবর এ জীবন গাছের তলায় বসে থাকল সময় ছেড়ে ঝরে পড়ল চোখে একটা গাছের হাসি একটা মেয়ে খলসে মাছের মতো হেসে বলল আমি মাছ ভালোবাসি হাতের রেখায় ছিল সীতার ধৈর্যের মতো নদী ছেড়ে দিল সহসা ডুবে গেল মৃত্যু ও খরা একটা ফর্সা গাছ খুলে দিল বুকের পাড়া হনহন করে হেঁটে গেল অন্ধকার জল বেয়ে পুরো পৃথিবীটা একটা মাছের চোখে আছে চেয়ে।

খিড়কি

ভালোবাসা হল শাদা সমুদ্রের মতো যেদিকে তাকাবে রাস্তা পেয়ে যাবে তুমি যদি আমার না হও অন্য কেউ আমার হবে ভালোবাসা বুকে নিয়ে কে মরেছে কবে এ হৃদয়কে হৃদয় করে মানুষ করতে আমার জীবন পার হয়ে গেল তার ভালোবাসার খিড়কি খুলতে খুলতে জীবনে কবর চলে এল জীবন তাকিয়ে থাকে মৃত্যুর দিকে কত রং তার এ জীবন থেকে বের হয়ে জন্মাব আবার তারপর ভালোবাসার হব প্রথম চোখ তারপর বিরহেরও হব প্রথম শোক প্রথম লাগাব হৃদয়ে হাত প্রথম বলব প্রণয়ের বাত প্রেমের স্কুল ভালো প্রেমের কলেজের চেয়ে সব পাখি ঘরে ফেরে বিরহের দানা খেয়ে।

তালাচাবি

একটা দিন গলির মোড়ে অযথা দাঁড়িয়ে থাকে একটা ফুল শুয়ে শুয়ে কথা বলে আমার সাথে এই ফাঁকে বালিশের নিচে একটা দুঃখ ছটফট করে একটা চিঠি ঘুমিয়ে গেছে বাতাসের ভেতরে একটা ব্যথা বুকের ভেতর জুহিতাকে নিয়ে নড়েচড়ে এ ব্যথাই তাকে বন্দি করে রেখেছে আমার ঘরে হে ঘর আমার খারাপ অবস্থা একটু বুঝার চেষ্টা কর আমি থক গিয়েছি দেখে রাখতে জানালা দরজা তোর একটা জীবন যার তালাও আমার না যার চাবিও আমার না এ জীবনের হিসেব আমি দিতে পারব না।

আরও পড়ুন- অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় নীহারিকাপুঞ্জের মতো বিচ্ছিন্ন দ্বীপে নিঃসঙ্গতা নামবে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড