সুশান্ত হালদার
ভালোবাসার বাবলা কাঁটা
সৌন্দর্যের লাবণ্যতায় এখনো মুগ্ধ বিকেল তবুও গোধূলীলগ্নে চলছে আলো আঁধারীর খেলা সন্ধ্যামালতীর মনকষ্টে নিদারুণ এক জ্বালা, দূরে, বহুদূরে পাড়ভাঙা নদীবক্ষে কে যেনো ডাকছে করুণ সুরে ঠিক যেনো বিরহ ব্যথায় যেদিন রক্তাক্ত করেছিলে ভরা পূর্ণিমা ডুবে যাওয়া চাঁদে এখনো সূর্যের বিষণ্ণতা পোড়া বুকে খুঁজে না কেউ ভালোবাসা যেমন খুঁজে না আঁধারের বুকে ভরা পূর্ণিমা
দক্ষিণ জানালা খোলা আমার প্রতীক্ষার প্রহরে আজও অপেক্ষমাণ হাসনাহেনা কফিন কাপড়ে সঙ্গমরত উলঙ্গ বিছানা, মৃত্যুর দুয়ারে বসে তবুও মানুষ খুঁজেই চলছে সুখের ঠিকানা অথচ এই আমি! কাব্যিকতায় বেছে নিয়েছি ভালোবাসার বাবলা কাঁটা!
লাশকাটা ঘর
অতর্কিত হামলায় মেয়েটির খসে পড়েছে বুকের বামপাশ চোরাগুপ্তায় এবারও নিয়ে গেছে ভালোবাসার গুপ্তভাণ্ডার তবুও ধর্ষকের সিসি ক্যামেরায় নিবিড় পর্যবেক্ষণে পঁচিশ মার্চের ভয়াল কালোরাত সাদা হাতির বুকে তবুও নেকড়ের পৈশাচিক যৌনাত্যাচার তবুও জনমানবশূন্য এ অরণ্যে হিংসার আগুনে পুড়ে গেছে সদ্য ফোটা কামিনীর সোহাগি রাত
চাপাতির কোপে ছিন্নভিন্ন গতরাতের ব্লিডিং হার্ট রেড সিগন্যালে তবুও আসাদ গেটের জ্যামে ভিজে ওঠে সংসদ ভবনের সবুজ গালিচা এদিকে ধূর্ত শৃগাল লাশের পাহাড়ে বসিয়েছে কড়া পাহারা
মেয়ে, অমাবস্যার রাত! রাহুগ্রাসে চন্দ্রও উঠবে না কাল সূর্যের অগ্নিতে আত্মাহুতি দিয়েছে সাগর মহাসাগর গতকাল জানা কি আছে ভোরের সূর্য আনবে প্রভাত আগামীকাল ? যদি না জানো তবে উঠাও খড়গ তোমার লাশকাটা ঘরে এখনো জায়গা ছাপ্পান্ন হাজার বর্গ মাইল!
ভুল
বুননে করেছি ভুল, ধানি জমিতে মসুর প্রিয়ংবদা, উড়ালেতো সেই তো চুল শুধু ছিলো না এলোকেশে ঝরে পড়া গন্ধবিলাসী বকুল ছিলো নাকি কানে মিশরীয় দুল? মমির আস্তরণে এখনো লেখা নির্ভুল 'অর্থের প্রলোভনে নারীকে করেছিলো পুতুল'
ছেড়েছি রাজ্য, সে অতীত বহুকাল পিথাগোরাস যুগে যাকে দেখে আঁতকে ওঠেছিলো মহর্ষি দল ভেবেছিলো কায়েসের মতো হবে হয়ত কোনো প্রেমিক পাগল কত আফসোস!প্রেমের জন্য নিঃস্ব করেছে নিজের সব সম্বল
রুদ্র তাপে পোড়েনি জল, পুড়েছে অন্তর্বেদনার ফসল নগ্নদেহে তাই ফুটেছে কুসুম,রৌদ্রতাপে পাপড়ি- হবে হয়ত বিকল তবুও মৃতপাত্রে ফোটে যদি ফুল,ধরে নিও এ প্রকৃতিরই ভুল!
শ্রাবণী
কত কিছুইতো বুঝিনি শ্রাবণী এই যেমন ভাষা,চোখের ইশারা,রক্তক্ষরণে হৃদয়ের কান্না চকিত দুর্ভেদ্য পথের ঠিকানা,অস্পষ্টতায় ভরা তোমার দৃষ্টিহীন সীমানা
কত কিছুই তো বুঝিনি বিরহ ব্যথায় বিষণ্ণ গোধূলি, উৎসুক রাতের শিৎকার ধ্বনি ভোরের কুয়াশায় সঙ্গম প্রশান্তি,উলঙ্গ বুকে নির্লিপ্ত আঙ্গুলের হামাগুড়ি
অথচ দেখো শ্রাবণী মৌন বাতাসে কাঁকনের ঝঙ্কারধ্বনি শাড়ির আঁচলে খুঁজছে সুখ অনাহারী প্রজাপতি, আষাঢ় এলেই বুঝতে পারি - জং ধরা শিকে পুরনো প্রেমিকের হাতছানি!
রঞ্জনা
আমার স্ত্রী, যাকে রঞ্জনা বলে ডাকি রক্তিম অধরোষ্ঠ পিঙ্গল গালে ফুটেছে গোলাপ কুন্তলে মধুমালতী আষাঢ় গগনে কালোমেঘের আস্তানা কপালে লালটিপ পাকাধানে সোনারঙ দিগন্ত জোড়া কাঁচলহীন অনাবৃত স্তন সাদামেঘে গুণ্ঠিত নীলাম্বর উলঙ্গ হাতে কাঁকনের দোলা পাহাড়ের বুকে প্রাণোচ্ছল ঝরনা কাজল কালো চোখ হতাশার মাঝে নিরাশা বেঁধেছে আশার বাসা
আমার স্ত্রী, যাকে রঞ্জনা বলে ডাকি সে এখন বৃষ্টি ভেঁজা সন্ধ্যাতারা ইশারায় ডেকে দিয়েছে বিমূর্ত ভালোবাসা রামধনু রঙে তাই রাঙিয়েছি দিনান্তে গোধূলি বেলা কাকচক্ষু জলে এখনো একাকার মূর্ছিত বৃষ্টির ফোটা।
আরও পড়ুন- ভোর হতে ভুলে গেছে একাকী মধ্যরাত
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড