• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় (পর্ব- ১৫)

মাস্টার অফ অ্যানালেটিক্যাল থিংকিং, জ্যাক অফ নান

  অধিকার ডেস্ক    ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:৫৯

উপন্যাস প্রকাশন
ছবি : সম্পাদিত

একজন ব্যতিক্রমী মননের মানুষ মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়। ব্যতিক্রমী তার লেখার ধারা। কেউ কেউ মনে করে তিনি বিচিত্র রঙের গল্পকার। কারও কাছে সুচিন্তিত সমালোচক, আবার কারও কাছে সূক্ষ্ম বিশ্লেষক। অনেকের কাছে অবশ্য তিনি বর্তমান সময়ের সেরা ক্রিকেট বোদ্ধা হিসেবে পরিচিত।

সম্প্রতি তিনি পাঠক মহলে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছেন ‘নামহীন দামহীন’ শীর্ষক বিশ্ব ব্যতিক্রমী এক আত্মজীবনীর মাধ্যমে। আসলে কেমন মানুষ হিমালয়? কাছের মানুষদের চোখে তার ব্যক্তিত্ব কেমন? ব্যতিক্রমী চিন্তার এই মানুষটিকে নিয়ে লিখেছেন তার সঙ্গে কিংবা আশেপাশে থাকা কিছু নিকটবর্তী মানুষ। তাদের বলা কথাগুলো নিয়েই ‘উপন্যাস প্রকাশন’ এর উদ্যোগে ‘দৈনিক অধিকার’ এর ধারাবাহিক আয়োজন, ‘আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়'

আজ প্রকাশিত হচ্ছে ধারাবাহিক এ আয়জনের ১৫তম পর্ব। এ পর্বে লেখক হিমালয়কে নিয়ে লিখেছেন- অন্যরকম গ্রুপের কর্মকর্তা তাকভীর রেজা

“বুঝছি তো!”

ধরেন, আপনি যা-ই বলেন আর যা-ই করেন, আমি তো ভাই বুঝছি আপনার উদ্দেশ্য-বিধেয়। আমার বুঝ তো ভাই আমার কাছে, নাকি?

আমি হতে পারি নদীর এপারের মানুষ, তাই বলে নদীর ঐপারে কি হয়-কেন হয়-কার জন্য-কীভাবে হয় সব বুঝ তো আমার আছে, তাই না? কারণ আমি ওখানে না থাকলেও ওখানকার বহু মানুষের সাথে তো আমার যোগাযোগ আছে, কথা হয়, দেখা হয়, তারে-বেতারে শব্দ-ধ্বনি'র আদান-প্রদান তো হয়!

এমনই এক কন্সেপ্টের প্র্যাক্টিস বর্তমান সময়ে আমরা করছি সারাক্ষণ। আপনি যে ইন্টেশনেই কোনো কাজ করেন না কেন বা কিছু সময় কোনো ইন্টেনশন ছাড়াই কিছু করেন বা বলেন না কেন, সেটা থেকে ‘প্রকৃত’(!) অর্থ নিজের মতো করে ইন্টারপ্রেট করার জন্য সদা প্রস্তুত আপনার চারপাশের সবাই; সবাই মানে সবাই!

তবে বেঁচে থাকতে হলে যেমন শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতেই হবে, ঠিক তেমনই ‘মানুষ’-এর সাথেও ডিল করতেই হবে। আর মানুষের সঙ্গে ডিল করার মতো চ্যালেঞ্জিং+এক্সাইটিং কাজ দুনিয়াতে আর সম্ভবত নেই। এই চ্যালেঞ্জ ওয়ার্মলি নিতে পারলে পুরো জীবনটাই এক্সাইটিং এক রোলার কোস্টার রাইড হতে পারে।

আর মানুষ চেনা কিন্তু সহজ কাজ না!

উপরের এই লাইনগুলো একটা বইয়ের ব্যাপারে (আমার ব্যক্তিগত) রিভিউ/জিস্ট/ফিডব্যাক। বইটা সাইজে বেশ বড়, ৬১৯ পৃষ্টা। প্রায় বছরখানেক সময় নিয়ে লিখেছেন হিমালয় ভাই। অনেকের ভাষ্যমতে এটা তার বায়োফিকশন, তার ভাষ্যমতে হিউম্যান বিহেভিয়ার নিয়ে কৌতূহলী ও বিশ্লেষণী ক্ষমতার অধিকারী যেকোনো মানুষের জন্য একখানা চিন্তার খোরাক।

বইটা পড়ার পর অনেকের অনেক মতামত! (তাই তো হবার কথা)

আগের পর্ব পড়তে : হিমালয় ভাই নিজেকে একজন চিন্তাশীল ব্যক্তি মনে করেন

এই ভাষা না ব্যবহার করলেও হতো, সেই ঘটনা না উল্লেখ করলেও হতো, আরও নানান ইস্যু/আবদার। আমার কথা হলো, লেখক যা বলতে চায় সেটা বুঝানোর জন্য যা দরকার মনে করেছে লিখেছে এখন আপনার বুঝ আপনার কাছে।

আগেই তো বলেছি আমাদের সবার রেডিমেড বুঝ তো ভাই আছেই, লেখকও অবশ্য এর আওতার বাইরে না। আর একজন লেখক তো তার চলার পথকে আশ্রয় করে নিজের চিন্তাভাবনা ব্যাখ্যা করতে গেলে তার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো চলে আসবেই সেটাই তো স্বাভাবিক, তাই না? সেটা টক-মিষ্টি-তেতো-নোনতা স্বাদ লাগবে, এতে অবাক হবার তো কিছু নেই। সে তার বুঝ বুঝছে, আসেন আপনি-আমি আমাদেরটা বুঝি!

এখন বলি হিমালয় ভাইয়ের কথা।

হিমালয়

মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়ের সঙ্গে তাকভীর রেজা

উনিশ মাহফুজ ও তেইশ মাহফুজ যেদিন পৃথিবীর বুকে ওদের ফিজিক্যাল এক্সিস্টেন্সের জানান দিয়েছিলো সেদিন আমি মূলত এই মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় নামের মানুষটার সাথে পরিচিত হই। যদিও সে ঘটনার ৯ মাস আগে থেকে তার সাথে আমার কাজের সম্পর্ক ছিল কিন্তু ঐ মোমেন্টামটা ছিল আমার জন্য ব্যাক্তি ‘হিমালয়’-কে চেনার প্রথম ধাপ!

এক লাইনে আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় হলো ‘মাস্টার অফ এনালেটিক্যাল থিংকিং, জ্যাক অফ নান’।

এই লাইনের ব্যাখ্যা তার পরিচিত মানুষের গণ্ডির সকলের কাছেই সম্ভবত নিস্প্রয়োজন। কোনো বিষয়ে তার চিন্তার ব্যাপ্তি যে কিরূপ হতে পারে তা তার লেখা পড়ে বোঝার চেষ্টা করা যেতে পারে। তবে অবশ্যই তার কথা শুনে বা কাজ দেখে সেটা আঁচ করার চেষ্টা না করাই শ্রেয়, তাহলে ধোঁকা খাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

বেশ কিছু মানুষের সহচার্যে থাকলে আমি মেন্টালি খুবই রিল্যাক্সড ফিল করি, হিমালয় ভাই তাঁদের একজন। যদিও তাদের একেক জনের সাথে একেক কারণে থাকলে এই ফিলিং হয়। হিমালয় ভাইয়ের সাথে আড্ডার সময়টা আমাকে জাগতিক চিন্তা থেকে দূরে রাখে। বা বলা যায় জাগতিক চিন্তাকে চ্যালেঞ্জ করতে ইনফ্লুয়েন্স করে।

লেখার শুরুতে যে দুটো নাম ছিল ওরা এই হিমালয় ভাইয়েরই জমজ কন্যাদ্বয়। প্রিম্যাচিউর দুই মেয়েকে হাসপাতালে রেখে নিজের এরোগেন্স আর ইনভেস্টমেন্টের উপর যে বাজি সে খেলেছিলো তারপর থেকেই মূলত আমি শিওর হয়েছি যে সে নিরুপায় হয়ে ‘জাতে ঠিক থাকলেও তালে মাতাল’। ইনভেস্টমেন্টের ইস্যুতে বলে রাখা ভালো যে তার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস হলো ‘সময়’।

এমন একজন মানুষকে খুব কাছ থেকে এক্সপেরিয়েন্স করার জন্যই কিনা তাঁর থেকে নিতে পারিনি তেমন কিছুই, আসলেই সে সময়টাতে বুঝতেই পারিনি ঠিক-ঠাক! আর এই না বুঝার কারণেই কিনা জানি না তাকে কাছ থেকে দেখা আমার জীবনের রেয়ারেস্ট টেলেন্ট বলে মনে হয়।

অবশ্য দিনশেষে যোগবিয়োগ করলে তাকে তেমন আর পাত্তা দিতে মন চায় না, কারণ এই চিন্তা-আইডিয়া-পাগলামি দিয়ে কি হবে যদি কাগজের নোটের বন্দোবস্ত পাকাপোক্ত না হয়?

তার পরিচিতদের বেশিরভাগই (মাঝে মাঝে সে নিজেও) বলে যে, উন্নত বিশ্বে তার চিন্তা বা কাজের মূল্যায়ন হতে পারে। তবে আমার কাছে মনে হয় না, কারণ এই ‘দুনিয়ার বাইর’ টাইপ লোকটার কাজকর্ম যে কারণে এদেশে এখনো মূল্যায়িত হয়নি বিলেতেও সেই একই কারণে সেগুলো কাজ করবে না। এর কারণ হিসাবে আমার কাছে মনে হয়, মূলনীতিতে এই বিশ্বের সবখানেই অর্থনীতি-রাজনীতি-দর্শন-সমাজ ব্যবস্থা অভিন্ন।

তবে যাই হোক না কেন, আমি শুধু তার হিউমার প্রীতির কারণেই বিশেষভাবে স্মরণ রাখতে পারি আজীবন। তার সাথে ননসেন্স হিউমার প্র্যাক্টিস করার সময়গুলো বেশ এক্সাইটিং লাগে আমার কাছে। সে সূত্রেই দু’টি লাইন-

আমড়া কাঠের দামড়া খাটে কামড়াকামড়ি সতীনে বড় হাটে সাহেব-লাটে ফালাফালি ট্রাম্প-পুতিনে

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড