• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় (পর্ব- ৯)

তিনি মানুষকে ‘স্তর’ দেখান এবং স্তরকে ভাঙতে সাহায্য করেন

  অধিকার ডেস্ক    ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৩

উপন্যাস প্রকাশন
ছবি : সম্পাদিত

একজন ব্যতিক্রমী মননের মানুষ মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়। ব্যতিক্রমী তার লেখার ধারা। কেউ কেউ মনে করে তিনি বিচিত্র রঙের গল্পকার। কারও কাছে সুচিন্তিত সমালোচক, আবার কারও কাছে সূক্ষ্ম বিশ্লেষক। অনেকের কাছে অবশ্য তিনি বর্তমান সময়ের সেরা ক্রিকেট বোদ্ধা হিসেবে পরিচিত।

সম্প্রতি তিনি পাঠক মহলে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছেন ‘নামহীন দামহীন’ শীর্ষক বিশ্ব ব্যতিক্রমী এক আত্মজীবনীর মাধ্যমে। আসলে কেমন মানুষ হিমালয়? কাছের মানুষদের চোখে তার ব্যক্তিত্ব কেমন? ব্যতিক্রমী চিন্তার এই মানুষটিকে নিয়ে লিখেছেন তার সঙ্গে কিংবা আশেপাশে থাকা কিছু নিকটবর্তী মানুষ। তাদের বলা কথাগুলো নিয়েই ‘উপন্যাস প্রকাশন’ এর উদ্যোগে ‘দৈনিক অধিকার’ এর ধারাবাহিক আয়োজন, ‘আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়'

আজ প্রকাশিত হচ্ছে ধারাবাহিক এ আয়জনের ৯ম পর্ব। এ পর্বে লেখক হিমালয়কে নিয়ে লিখেছেন- লেখক তাশমিন নুর

হিমালয় ভাইয়ের সঙ্গে প্রথম পরিচয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কিন্তু সেটাকে পরিচয় বলা যায় না। একটা অনুবাদ-প্রোজেক্টে কাজ করার কথা ছিল আমার। সেই সূত্রে ফেসবুক মেসেঞ্জারে কিছুক্ষণ আলাপ হয়েছিল এবং আমার সেই প্রথম আলাপের অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো ছিল না। শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কিন্তু খুব কড়া।’ কড়া মানুষদের আবার আমি খুব ভয় পাই। মনে মনে ভাবছিলাম, ‘এই লোকের সঙ্গে কাজ করা তো সহজ হবে না। দেখা যাবে, টেনে টেনে খুঁত বের করছে।’ অবশ্য কাছাকাছি সময়ে একটা চাকরির ইন্টারভিউ থাকায় এম্নিতেই সেই কাজ বাতিল করেছিলাম।

কিন্তু যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই যে সন্ধ্যে হয়, এতে কোনোই সন্দেহ নেই। অন্যরকমে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে আবার দেখা হিমালয় ভাইয়ের সঙ্গে। এই সাক্ষাৎ ভালো হয়নি। আমি খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম। হিমালয় ভাই এবং সেখানে উপস্থিত অন্য প্রার্থীদের দেখছিলাম, আর যাচাই করার চেষ্টা করছিলাম, আসলে আমার চাকরি পাবার সম্ভাবনা কতটুকু। চাকরিটা আমার ভয়াবহ দরকার ছিল। দরকার ছিল বলে দরকার ছিল। এবং দরকার ছিল আরও একটি কারণে।

আমি দেখলাম, তারা আমার সিভি দেখল না। সার্টিফিকেটও না। আমার মনে হচ্ছিল, যারা আমার সিভি আর সার্টিফিকেট না দেখে আমাকে চাকরি দেবে, সম্ভবত তাদেরকেই আমার দরকার। আমি একজন প্রোগ্রামার যদি হই, বারাক ওবামার দাদার বাবার নাম কী ছিল, তা দিয়ে আমার কী এসে যায়? আমার এসএসসিতে জিপিএ ৫ ছিল কিনা সেটাও কি গুরুত্বপূর্ণ সেক্ষেত্রে? সৃজনশীলতা জিপিএ’র বাইরের জিনিস।

এই একটা প্রতিষ্ঠানকে আমি দেখলাম, যারা ঠিক করে চিন্তা করছে। কাজেই এই চাকরি আমার চাইই। টাকা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুও আছে। আমি জানতাম, এই প্রতিষ্ঠান আমাকে বেশি বেতন দেবে না। তাও এখানে চাকরিটা পাওয়ার জন্য আমি শেষ চেষ্টাটুকুও করেছি।

চাকরিটা পাওয়া সহজ ছিল না। আমাকে একের পর এক এ্যাসাইনমেন্ট করতে হলো। (হিমালয় পাই (উনার ফেসবুক নিক তখন এটাই ছিল) লোকটা যে খুঁতখুঁতে, এই ব্যাপারে তখন আমি আরও বেশি করে নিশ্চিত)। এ্যাসাইনমেন্টগুলোও ছিল অদ্ভুত। যেমন, একটা ছিল- তাদের একটা প্রোগ্রাম আমাকে প্রত্যক্ষ করতে হবে, আর আমাকে সেই প্রোগ্রামের ওপর একটা প্রতিবেদন লিখতে হবে, এবং সেই প্রতিবেদনও হতে হবে অন্যরকম। লিখে দিলাম। বাতিল হলো। বলা হলো- ওটাতে অন্যরকম কিছুই নাই। আমি খুব হতাশ হয়ে পুরো প্রতিবেদনটা আবার লিখলাম। এবার লিখলাম ছড়ার ছন্দে। আর তারা সেটাই পছন্দ করল। মনে মনে বললাম, ‘ভালো তো!’

এই সব কিছুরই নাটের গুরু ছিলেন হিমালয় ভাই, যেহেতু তিনি তখন অন্যরকমের ক্রিয়েটিভ কনসালট্যান্ট ছিলেন। আমার ডিটেইলিং বাজে, আমি প্রচণ্ড পরিমাণে অন্তর্মুখী, ইন্টারভিউ-এর দিন আমি প্রায় কোনো কথাই বলছিলাম না, শুধু শুনছিলাম অন্যদের কথা। কিন্তু আপনি কি জানেন, এগুলো হিমালয় ভাইয়ের কাছে যোগ্যতা?

কে জানে, আমার চাকরিটা হয়ত শুধু আমার লেখালেখির সক্ষমতার জন্য হয়নি, এসব কারণেও হয়েছিল (হিমালয় ভাই ভালো জানেন)। আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করতে এসে জানলাম, এগুলো কোনো সীমাবদ্ধতা নয়! অথচ জীবনে আমাকে কত অপদস্থ হতে হয়েছে- বন্ধু, আত্মীয়-পরিজন, এমনকি প্রচণ্ড ভালোবাসার কোনো মানুষের কাছেও। তারা আমাকে দেখিয়েছে, আমি পারি না। আমার ‘স্তর’ এই পর্যন্ত, ঐ পর্যন্ত। অথচ, আমি লিখতে পারি। আমি ছবি আঁকতে পারি। আমি ভাবতে পারি। আমি একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা কিংবা ব্যাংকার কেন হতে চাইব, যদি সেটাকে আমি আমার ট্র্যাক মনে না করি? আর আমি এসব কিছু না হলে সেটা দিয়েই বা আমার লেভেল কেন বিবেচিত হবে? লেভেল কোনো স্থির ধারণা নয় নিশ্চয়ই?

হিমালয় পাই লোকটাকে দেখলাম, অন্য সবার মতো সে এগুলোকে এত বড় করে মোটেই দেখে না। সত্যি করে বলতে গেলে, তোয়াক্কাই করে না। হ্যাঁ, হিমালয় ভাই’ই সেই ব্যক্তি, যিনি আমাকে সবচে’ বেশি এপ্রিশিয়েট করেছেন, বুঝেছেন। হয়ত সেই জন্যই গত বছর আমার বয়স ছিল ২৭, কিন্তু এই বছর সেটা ৪০-৪৯। আমি বলতে চাচ্ছি, এপ্রিসিয়েশন মানুষকে কতখানি এগিয়ে দিতে পারে, সেটার গুরুত্ব হিমালয় ভাইয়ের চেয়ে বেশি করে আর কেউ বোঝে না।

হিমালয়

বাঁ'য়ে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়, ডানে তাশমিন নুর

অন্যরকমের সদস্যরা ট্যুর-এ যাবে। টি-শার্ট তৈরি হচ্ছে। ডিজাইনার ডিজাইন করে ফেলেছেন। শুধু টি-শার্টের সামনে দুটো লাইন হবে, সেটা বাকি আছে। আমাকে দায়িত্ব দেয়া হলো কিছু লিখে দেয়ার জন্য। এমন কিছু লিখতে হবে, যেখানে ‘মানুষ এবং বাংলাদেশ’ থাকবে। আমি লিখলাম, “মানুষগুলো বদলে গেলেই বদলে যাবে দেশ/ অন্যরকম হবেই হবে আমার বাংলাদেশ।“ তা, হিমালয় ভাই সেটা দেখে ডাক দিলেন। আমি ভাবলাম বলে বসেন কিনা আবার, ‘এই, তুমি এটা কী লিখছো? লেইম হইছে। আবার লেইখা নিয়া আসো, যাও।‘ কিন্তু হিমালয় ভাই জানালেন, “লাইন অতি উত্তম হয়েছে” এবং সঙ্গে সঙ্গে কাকে দিয়ে যেন একটা ডাব আনিয়ে দিলেন(আমি লিচুর জুস পাওনাদার, একটা ট্যাগ লাইনের জন্য)।

আপাতঃদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, এগুলো সাদামাটা ব্যাপার, নিছক মজা। কিন্তু আসলে এগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে সঙ্গে ‘লেইম হইছে’ কিংবা ‘অতি উত্তম হইছে’, কোনোটাই উনার মুখে আটকায় না। এবং ব্যক্তির উন্নয়নের জন্য দুটোই সমান পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশ্বাস করি।

এবং উনি সেটাই চান। তাই হিমালয় ভাই যখন পিঞ্চ করতেন, ‘তুমি আসলে একটা ঢঙ্গী মানুষ’, অথবা ‘তুমি তো এখনো ফাজিলই আছো’, তখন খারাপ লাগলেও চুপ করে থাকতাম। কারণ- এই একই মানুষ পরবর্তীতে আমাকে বলবেন, ‘ফোকাসড হলে তুমি জীবনে আনন্দের সন্ধান পাবে’। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, উনি চান, উনার আশেপাশের মানুষগুলো উন্নত হোক। যারা আপনাকে কথায় কথায় আপনার স্তর স্মরণ করিয়ে দিয়ে বোঝাতে চাইবে, আপনার আর অগ্রসর হওয়া উচিত নয়, তাদের আপনি ত্যাগ করবেন। কিন্তু যারা আপনাকে স্তর ডিঙোতে সাহায্য করবেন তাদের চিন্তা, চেতনা, উপদেশ, পরামর্শ এবং এপ্রিসিয়েশন দিয়ে, তাদের আপনি কখনো ত্যাগ করবেন না, তাই তো ঠিক?

আগের পর্ব পড়তে : হিমালয় ভাইয়ের কাছে প্রতিটা সিচুয়েশনই এক একটি স্যাম্পল মাত্র

মানুষ অন্যকে নিজের ছায়ায় দেখতে চায়; আরেকটু এগিয়ে গেলে সমাজের প্রতিষ্ঠিত কোনো মতবাদের ছায়ায়। তাই তার মনে হয়, একজন ম্যাজিস্ট্রেট, একজন ডাক্তার, একজন ইঞ্জিনিয়ার হতে পারাই জীবনের সাফল্য। হিমালয় ভাই তেমন মনে করেন না। তিনি মানুষকে ‘স্তর’ দেখান, এবং স্তরকে ভাঙতে সাহায্য করেন। তিনি কোনো মোটিভেশনাল স্পিকার নন। অনর্গল চটকদার কথা বলা তো দূরে থাক, একাধারে দশটা বাক্য বলতেই হোঁচট খান তিন থেকে পাঁচ বার। কিন্তু তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, ‘তোমার ক্যালিবার আছে।’ তিনি বলতে পারেন, ‘এই পরীক্ষায় পাশ করলে যে এ্যামাউন্টের বই চাও, পাবে।’

তিনি বলতে পারেন, ‘কর্মঘণ্টা বেশি মনে হলে বলো, এক ঘণ্টা কমিয়ে নাও।’ বলতে পারেন, ‘বোর ফিল করলে ইন্ডিয়া থেকে ঘুরে আসো, টাকা না হয় আমি দেব।’ আপনি যদি বলেন, ‘আপনি এত টাকা কই পাবেন?’ উনি বলবেন, ‘সেটা আমার চিন্তা। আমি বলছি যখন, সেটা আমি যেকোনো উপায়েই হোক, ম্যানেজ করব’।

হিমালয় ভাই ওয়ার্কিং আওয়ার এক ঘণ্টা কমিয়ে দিতে বললেই কি আপনি কমাবেন নাকি? আপনার টিমে একই কাজে রত অন্য কলিগরা নিজেদের আপনার চেয়ে ইনফেরিয়র মনে করুক, সেটা আপনি হয়তো চাইবেন না। অথবা, উনি টাকা দিতে চাইলেই সেই টাকা আপনি নেবেন কেন? কিন্ত আপনার চরিত্র বোঝেন বলে তিনি আপনাকে এসব বলেছেন, তা মোটেই নয়।

তিনি তাই বলেন, যা তিনি বিশ্বাস করেন; এবং তাই করেন, যা তিনি করবেন বলেন। উনার অনেক টাকা নেই, কিন্তু অনেক সাহস আছে। আর যদি বলেন, এগুলো গুরুত্বপূর্ণ কর্মী তৈরি করার কৌশল, তাহলেই বা মন্দ কী? ‘কী সাবরিনা, তুমি অসুস্থ নাকি?’, ‘কী তাশমিন, তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে জীবন যাপনের সমস্ত আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছ? হইছে কী?’, অথবা অফিসে ঢুকেই ‘কী রিয়াদ, কী শশীভূষন, কী তুহিনুল ভাই, কী হাসান মাহবুব ভাই’, জনে জনে এমন খবর নেয়ার মানুষই বা ক’জন থাকে? ক’জন পারে নির্মোহভাবে নিজের সমালোচনা করতে? ক’জন আছে, যারা ‘এমপ্লোয়ি’ কথাটা এড়িয়ে যেতে পছন্দ করেন? ক’জন বলতে পারে, ‘বৃহস্পতিবারে কোনো কাজ হবে না। এদিন রিল্যাক্স-ডে’।

কই, আজ সারাদিন যে কাটিয়ে দিলাম আরও কিছুটা ক্লান্তি আর যন্ত্রনায়, কেউ তো জিজ্ঞেস করেনি, ‘কী তাশমিন, কেমন আছো? তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?’ অথচ কেউ অস্বীকার করবে না, এই একটা বাক্যই মানুষকে অনেকখানি সুস্থ করে তুলতে পারে। প্রতিষ্ঠান তার কর্মীদের কাছ থেকে ভালো কিছু পেতে চায়। কিন্তু কর্মীদের কাছ থেকে ভালো কিছু পেতে হলে তাদেরও ভালো কিছু দিতে হয়। সেটা ক’জন বোঝে এবং মনে রাখে? আমার বয়সের হিসেব করলে আমার চাকরি জীবন দীর্ঘই বলা যেতে পারে। ২২ বছর বয়সে প্রথম চাকরিতে ঢুকেছি। অনেকগুলো চাকরি বদল করেছি। আমি উনার মতো দেখিনি খুব একটা।

হিমালয় ভাইকে পছন্দ করি, কারণ- দিনশেষে উনি ক্রিয়েটিভ কনসালট্যান্ট অথবা মেন্টরের চেয়েও, আমার মতো অসফল, অপগণ্ড, ইমম্যাচিওর এবং বস্তুবাদী জীবনের কচকচানিতে ক্লান্ত মানুষদের আত্মীয়। উনার সঙ্গে কাজ করার মধ্যে ক্লান্তি নাই। কিন্তু, কোনো কাজকে শেষ পর্যন্ত মসৃণ করে তোলার ধৈর্য না রাখলে, মানে, ‘মুই কি হনু রে!’ দৃষ্টিভঙ্গীর মানুষ হলে উনাকে আপনার ভালো নাও লাগতে পারে।

হিমালয় ভাই অন্যরকম ছেড়েছেন বেশ কয়েক মাস হলো, এবং উনার একটা স্টার্ট আপ আছে ‘হিউম্যান ল্যাব’ নামে। জানি, উনি কখনোই গতানুগতিক ‘মালিকপক্ষ’ হয়ে উঠবেন না। উনি সব সময় সহসদস্যদের বন্ধুই থাকবেন।

হিমালয় ভাইকে যেমন দেখেছি, যতটুকু বুঝেছি, তেমনই বললাম। বানিয়ে কিছুই বলিনি। আরোপিত যে কোনো কিছুই বিরক্তিকর এবং মর্যাদার জন্য ক্ষতিকর।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড