• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয় (পর্ব- ৮)

হিমালয় ভাইয়ের কাছে প্রতিটা সিচুয়েশনই এক একটি স্যাম্পল মাত্র

  অধিকার ডেস্ক    ১২ ডিসেম্বর ২০১৮, ১২:২৩

উপন্যাস প্রকাশন
ছবি : সম্পাদিত

একজন ব্যতিক্রমী মননের মানুষ মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়। ব্যতিক্রমী তার লেখার ধারা। কেউ কেউ মনে করে তিনি বিচিত্র রঙের গল্পকার। কারও কাছে সুচিন্তিত সমালোচক, আবার কারও কাছে সূক্ষ্ম বিশ্লেষক। অনেকের কাছে অবশ্য তিনি বর্তমান সময়ের সেরা ক্রিকেট বোদ্ধা হিসেবে পরিচিত।

সম্প্রতি তিনি পাঠক মহলে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি করেছেন ‘নামহীন দামহীন’ শীর্ষক বিশ্ব ব্যতিক্রমী এক আত্মজীবনীর মাধ্যমে। আসলে কেমন মানুষ হিমালয়? কাছের মানুষদের চোখে তার ব্যক্তিত্ব কেমন? ব্যতিক্রমী চিন্তার এই মানুষটিকে নিয়ে লিখেছেন তার সঙ্গে কিংবা আশেপাশে থাকা কিছু নিকটবর্তী মানুষ। তাদের বলা কথাগুলো নিয়েই ‘উপন্যাস প্রকাশন’ এর উদ্যোগে ‘দৈনিক অধিকার’ এর ধারাবাহিক আয়োজন, ‘আমার চোখে মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়'

আজ প্রকাশিত হচ্ছে ধারাবাহিক এ আয়জনের ৮ম পর্ব। এ পর্বে লেখক হিমালয়কে নিয়ে লিখেছেন- অন্যরকম গ্রুপের কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাসেল সনেট

২০১৪ সালের মার্চের ৫ তারিখে হিমালয় ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম দেখা, ঐ মাসেরই ২৯/৩০ তারিখে হিমালয় ভাই আমাকে পুত্র হিসেবে দত্তক নেয়। চিন্তাশীল টিম পার্ট-টাইম বেসিসে কাজ শুরু করি এপ্রিল ২০১৪ থেকে। এরপর টানা ২০১৮’র কোন এক মাস পর্যন্ত হিমালয় ভাইয়ার তত্ত্বাবধায়নেই কাজ করেছি। হঠাৎ হিমালয় ভাই উধাও, বাকিটা ইতিহাস... এই ইত্যাদিকার সম্পর্কের সূত্র ধরেই হয়তো আসলে আজকের এই লেখা।

(একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আগেই বলে রাখি, যেহেতু এটা একটা সাইটে আপ করা হবে এটা প্রায় নিশ্চিত তাই যারা শ্রুতি মধুর শব্দ শুনতে বা পড়তে চান তাঁরা এখান থেকেই উধাও হয়ে যান! আমি ভালো লেখক কিংবা উৎকৃষ্ট চিন্তক- এই দুইটার একটাও না। আমার লেখ্য ও কথ্য ভাষা প্রায় একই। লেখার সময় শব্দের অভাব যতটা না বোধ করি তা ব্যবহারের অনীহা তার চেয়েও ব্যাপক। তাই এটা পড়তে খুব বেশি আনন্দদায়ক হবে না। আর যারা পুরোটা পড়বেন, সময় নষ্টের জন্য অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি)

(এই লেখায় হিমালয় ভাই সম্পর্কে আজেবাজে কথাই বেশি থাকবে, কারণ হিমালয় ভাই সমালোচনা বা বিরোধিতাই পছন্দ করে আর আমি ওনাকে খুশি করতেই লিখছি।)

মানুষে মানুষে দেখার ব্যাপক পার্থক্য। সেক্ষেত্রে হিমালয় ভাইকে উপর থেকে দেখলে “টাক” দেখা যাবে, সামনে থেকে দেখলে ভুড়ি চোখে পড়বে, পেছন থেকে দেখলে লাটিমের মতোও লাগতে পারে! কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটা হচ্ছে কাছ থেকে দেখা এবং বিভিন্ন সময়ে তার আচরণ থেকে আমার ভেতরে তার সম্পর্কে উপলব্ধি। সেখানে হিমালয় ভাইকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আমি আবিষ্কার করেছি। সুতরাং কথা না বাড়িয়ে মূল কথায় চলে যাই-

২০১৪ সালে আমার এক ফ্রেন্ড “বীক্ষণ প্রান্ত” নামক একটা বই পড়তে দেয়। বই পড়েই লেখকের সাথে এক কাপ চা খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। বই এর আগেও অনেক লেখকের লেখা পড়ছি কিন্তু হিমালয় ভাইয়ের প্রতি আমার এতো আগ্রহের কারণ কী ছিল আসলে? আমি পরবর্তীতে এ নিয়ে কিছুটা চিন্তা করছি এবং এই সিদ্ধান্তে আসছি যে হিমালয় ভাইয়ের লেখা পড়ে আমি বুঝতে পারছিলাম লোকটা কিছুটা পাগলা কিসিমের আর পাগলা কিসিমের মানুষ আমার ব্যাপক পছন্দ। তাছাড়া এমন সব ক্ষুদ্র ও তুচ্ছ বিষয়কে চমৎকার ভাবে বর্ননা করে যে সেটা হঠাৎ ধাক্কা খাওয়ার মতোই।

অতঃপর ফেসবুকে ফ্রেন্ড হওয়া এবং তারই এক স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে ভাইয়ার সাথে কাজ করা। সাড়ে ৪ বছর অনেক সময়। এই সময়টাতে ভাইয়ার সাথে বিভিন্ন ধরণের কাজ করা হয়েছে এবং প্রচলিত ধ্যান ধারণার বাইরে গিয়ে নিজের মতো করে কাজ করতে পারার আনন্দ যে অনেক সেটা বুঝতে পারছিলাম।

প্রথম দিকে আমাদের বিভিন্ন ধরণের উদ্ভট সব কাজ দেয়া হতো। যেমন- আমার একটা এসাইনমেন্টের টপিক ছিল, কুকুরের লেজ সোজা করতে ঘি ব্যবহার করতে হয় কেন?- ৭ কারণ, ঘড়ির কাটা কেন বাম থেকে ডানে ঘোরে এর ৭ কারণ, ঢাকার শহর ঢাকা কেনো- ১১ কারণ ইত্যাদি... টপিক দেখেই বুঝা যাচ্ছে এটা উদ্ভট! এই সকল কাজগুলোর কোন ধরণের অর্থ বা ব্যাখ্যা হিমালয় ভাইয়ার কাছে আছে কিনা জানি না, তবে আমি কেন জানি সব কিছুর মধ্যেই একটা গভীর অর্থ খুঁজে পেতাম। হতে পারে আমার বোকামি! তাই হিমালয় ভাইয়ের উদ্ভট কাজ বা এসাইনমেন্টগুলা নিয়ে কেউ যখন অনেক বেশি অবাক হয় এবং অর্থহীন মনে করে তখন আমার কাছে সেটা খুবই স্বাভাবিক মনে হয়।

রিক্রুটমেন্ট ট্রায়াল বা আবাসিক বা অন্যান্য যত ধরণের কাজ আছে সব কিছুই কোন একটা পারপাস সার্ভ করে বলে মনে হতে থাকে আমার কাছে। কারণ, আমি একটা বিষয় বুঝতাম, যদি কেউ লেখার সময় বুঝতে পারে কোনো একটা লেখার প্রেক্ষিতে তার হাতের লেখা কেমন সেটা জাজ করা হবে, তখন মানুষ সচেতনভাবে সুন্দর করে লিখতে শুরু করবে। সেক্ষেত্রে আপাত দৃষ্টিতে মনে হওয়া উদ্ভট কাজগুলোই প্রকৃত মানুষটাকে বুঝতে সাহায্য করে। গদবাধা ফ্রেমে সেটা বেশ কষ্ট্যসাধ্যই বটে।

২০১৪ সালেই ভাইয়ার মনে হয় একটা ক্রিকেট টিম করা দরকার। যেমন চিন্তা তেমন কাজ! টিমের নাম দেয়া হলো টিম রকমারি। এই টিম রকমারি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ভাইয়ার সাথে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া হয়েছে। ঢাকার ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন জায়গায় আমরা টিম নিয়ে খেলতে যাই। আমরা লোকাল বাসে, লোকাল ট্রেনে সস্তা হোটেলে, তার চেয়েও সস্তা মেনুতে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার করেছি একই সাথে। বিভিন্ন স্টেডিয়ামের ছোট্ট রুমে কিংবা স্থানীয় কারো পরিত্যাক্ত ঘরে, যেখানে যেভাবে জায়গা পেয়েছি থেকেছি।

এই সময়টাতে হিমালয় ভাইয়াকে আলদা ভাবে আবিষ্কার করেছিলাম। ভাইয়া চাইলেই ভালো জায়গায় থাকতে বা খেতে পারতো, অফিশিয়াল স্ট্যাটাস বলি কিংবা তার আর্থিক সামর্থের কথাই বলি, সবই তার ছিল; কিন্তু ভাইয়া অন্য সবার মতোই সাধারণ ভাবেই ট্যুরগুলো শেষ করেছে। মাঝে মাঝে আমার ওনার জন্য মায়া হতো। কোন স্বার্থে এই মানুষটা এত কষ্ট করে হিসাব মিলাতে পারতাম না। কিন্তু এটাই হিমালয় ভাই। কিচ্ছু করার নাই। সে এমনই। অযথাই কষ্ট করবে, সে কথা আবার সবাইকে বলেও বেড়াবে, আবার এর বিনিময়ে কেউ কিছু দিতে চাইলেও নিবে না।

সালটা বোধয় ২০১৫/১৬! হিমালয় ভাই সিদ্ধান্ত নেয় পার্কে বসে অফিস করবে। আবারও যেই ভাবা সেই কাজ। ভাইয়া প্রায়ই বলে সে ডেডলাইন মিস করে না- এটা খুব সাধারণ কথা মনে হতে পারে; কিন্তু সত্যিকার অর্থেই ডেডলাইন মেইনিটেইন করাটা খুব সহজ কিছু না। আমি এর চাক্ষুষ সাক্ষী। যাইহোক, যেদিন থেকে পার্কে বসে অফিস করার কথা বলেছিলও আমি নিশ্চিত হয়ে যাই ঐদিন থেকে আমারও সেখানে থাকা বাধ্যতামূলক। সোহরোওয়ার্দি উদ্যানে বসে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাইয়া অফিস করে, আমি বসে বসে মশার কামড় খাই! আমার বিরক্ত লাগে। আমি হিমালয় ভাইয়ের উপর প্রায়ই বিরক্ত হতাম (এখনো হই!) কিন্তু কী এক অজানা কারণে এই মানুষটাকে আমি এড়িয়ে যেতে পারি নি কখনোই, এ এক অদ্ভুত মায়া! অপ্রিয় হলেও সত্য হিমালয় ভাই তা বুঝবে না। এ নিয়ে আমি অনেক সময়ই চিন্তা করেছি, কিন্তু যেহেতু আমার চিন্তার গভীরতা কম তাই বলা বাহুল্য আমি এখন পর্যন্ত এর কুল কিনারা করতে পারি নাই!

আগের পর্ব পড়তে : পুনর্জন্মে বিশ্বাস না রাখলে আপনার উপায় নেই জনাব হিমালয় পাই

হিমালয় ভাইকে আলাদা ভাবে আবিষ্কার করি, রিসেন্ট সময়ে মানে ২০১৮ সালে। তার ২টি মেয়ে এবং বলা বাহুল্য একজন স্ত্রীও আছে – এই অবস্থায় সে চাকুরী ছেড়ে দিয়ে অনিশ্চিতের পথে যাত্রা শুরু করে। আমি জানি না উনি কিসের আসায় বা কী চিন্তা করে এই কাজ করল। তবে আমি এতটুকু বুঝি মানুষ যেখানে মেহনত করবে, হিমালয় ভাইয়ের ভাষায় সময় দিবে সে সেখানেই সাফল্য লাভ করবে, সেটা ভালো খারাপ উভয় ক্ষেত্রেই জন্যই সত্য।

এই সময়টাতে ভাইয়ার আর্থিক সংকটে পড়ার কথা, পরেছেনও নিশ্চয়ই। কিন্তু তার সিম্প্যাথি সিকিং ট্যান্ডেন্সি কখনোই চোখে পরে নি। একটা মানুষ এতটা মনোবল কোথায় পায় এটা আমি এখনো বুঝে উঠতে পারি নাই। ভাইয়া যে কাজ শুরু করছে সেখানে তার সাফল্য পাওয়ার মতো ম্যারিট আছে এটা আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, হয়তো সাময়িক কিছু সময়ের জন্য স্থবিরতা আসতে পারে; কিন্তু ভাইয়ার মধ্যে যে এরোগেন্স আমি দেখছি এই পর্যন্ত তাতে তার সাফল্য নিশ্চিত। সরি, সাফল্য না সার্থকতা!

হিমালয়

মাহফুজ সিদ্দিকী হিমালয়ের সঙ্গে মুহাম্মদ রাসেল সনেট

আসুন সমালোচনা শুনি, (যা হিমালয় শুনতে চায়, কিন্তু কেউ বলতে চায় না)

২০১৫ সালে হিমালয় ভাইয়ার জন্মদিনের দিন সকালে তাকে কল দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। ঐদিন তার কিছু কথা থেকেই বুঝতে পারি তার কাছে সম্পর্ক বিষয়টা প্রতিশ্রুতির চেয়েও ভঙ্গুর এবং হিন্দি চুলের চেয়েও তাচ্ছিল্যের। তখন আমার মনে হয় ভাইয়ার জন্মদিনে ফেসবুকে এতো আয়োজন করে নোট লিখছিলাম ক্যান? চাকুরি পাওয়ার লোভে? হিমালয় কে? হিমালয়ের সাথে পরিচয় ক্যামনে? ভাইয়ার ৪১ এর কসম সে কোনদিন সম্পর্কের গভীরতা বুঝতে চেষ্টা করে নাই। তাই আমার মনে হয় যারা হিমালয় ভাইয়ের কোন কাজে আসবে এমন কোন সম্ভাবনা নাই তারা দিনশেষে একটি বাক্যই আওড়াবে “হায় সেলুকাস/তোরা খালি ধোঁকা খাস”! হিমালয় ভাইয়াকে সালাম দিলে সালামের উত্তর নেন না- এর কারণ হিসেবে ভাইয়া যা বলে, বেশির ভাগ মানুষই তাকে না তার পাওয়ার বা পজিশনকে সম্মান করেই কাজটা করে এবং সে এই কারণেই সালামের উত্তর দেয়ার ব্যাপারে এতটা কার্পন্য করে। কিন্তু কে মন থেকে সালাম দেয় সেটা হিমালয় ভাই-ই ঠিক করবে, এবং উনিই কেবল ঠিক করবেন কারা ওনাকে নিজ স্বার্থের কারণে শ্রদ্ধা করেন, কারা করেন না! এই বিষয়গুলো চিন্তা করলে আমার ২টা প্রশ্ন মাথায় আসে, ১। কোথা থেকে আসে আপনার এতো অহংবোধ? ২। মানুষ হিসেবে এতোটা নিচে কত বছরে কত হাজার কোটি সিড়ি বেয়ে আপনি নামছেন?

আমার ধারণা, মানুষ ভালো খারাপ অনেক কিছুই করে আবার রাত জেগে আবুল হাসানের কবিতাও পড়ে-

আমি যদি বোলতে পারতাম আমি এর কিছু নই। এই পাথরের চোখ পরচুলা নকল পোশাক, এসব আমার নয় এসব আমার নয়, প্রভু। আমি যদি বোলতে পারতাম

আসলে এই মানুষটার সাথে আমার অনেক অনেক স্মৃতি। হিমালয় ভাইয়ার সাথে পরিচয় হওয়ার পরেই আসলে আমি চিন্তা করতে শিখছি বলা যায়। আমার জীবনে হিমালয় ভাই এবং সোহাগ ভাইয়ের ইনফ্লুয়েন্স অনেক ব্যাপক। আমি এসে হিমালয় ভাইকে ১৪ বছর বয়সে পেয়েছি এখন তার বয়স কত হবে? সর্বোচ্চ ১৮! সত্যিই আমার মনে হয় সে ১৮ বছরের একজন তরুণ, যার মনে যা আসে তাই করে, নিজের চিন্তাকেই বেস্ট চিন্তা মনে করে। স্বাধীনতার নামে স্বেচ্ছাচারিতাও চালায় মাঝে মাঝে। নইলে নিজের মেয়ে আইসিইউতে থাকাকালীন টাকার প্রয়োজনে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কথা কোন পাগলের মাথায় আসতে পারে? (যেখানে সে চাইলেই কিছু উৎস হতে সহজেই সেই টাকা ম্যানেজ করতে পারতো)

হিমালয় ভাইয়ের কাছে প্রতিটা সিচুয়েশনই এক একটি স্যাম্পল মাত্র, সম্পর্কের গভীরতা উনি বুঝে না এমন কথা আমি বলবো না, তবে মাঝে মাঝে এই মানুষটারে আমার প্রচণ্ড আত্মকেন্দ্রিক লাগে, ভয়াবহ ধরণের আত্মকেন্দ্রিক। বীক্ষণ প্রান্ত বইয়ে একটা গল্প আছে “কর্মচারি যজ্ঞ” নামে, সেই গল্পের আফসার আহমেদের মতো আত্মকেন্দ্রিক, স্বাভাবিক ভাবেকেই তখন তার আশেপাশে আমি সব সোবাহান দেখি, দেখতেই থাকি... হিমালয় ভাই অন্যরকম ছেড়ে যাওয়ার সময় আমাকে ২টি লাইন দিয়ে যায়,

“দত্তক মানে ইথারে দেহ আমি পিতা তুমি পুত্র ৪ আর ৫ চৌদ্দ হলেই চুরি হবে না সূত্র”

লাইন ২টা পড়ে আমি প্রচণ্ড হার্ট হইছি। আমার কাছে এক নিমিষেই তার সাথে কাটানো সমস্ত সময়গুলো মিথ্যা মনে হইতে শুরু করে। একটা পর্যায়ে এমনও মনে হয় ভাইয়া শুধু নিজের কাজ হাসিল করার জন্য মানুষকে ইউজ করে হয়তো! ভারতীয় বাংলা একটা সিনেমায় একটা ডায়লগ ছিল এমন, “হতিই পারে, শিল্পী মানুষ বলে কতা!” আমিও ভাইয়াকে শিল্পী মানুষ ভেবে সব ভুলে গেছি ভাব নিয়ে বইসা আছি, বইসাই আছি...

হিমালয় ভাই ভালো থাকুক, তার সাথে কাটানো সময়গুলো আটুট থাকুক। সেখানে ৪ আর ৫ এ ১৪ মিলাইছি না ১৬ মিলাইছি সে হিসাবও ভাইয়ার কাছেই থাকুক; কারণ আমি বিশ্বাস করি ট্রেন (কিংবা হিমালয়) হিসাবে চলে, মানুষ না!

আর আমার চেয়ে হিমালয় ভাইর সাথে কতটুকু বেশি আজাইরা সময় কে কাটাইছে? আমি তো জানিই ভাইয়া বিশ্বাস করে পৃথিবীতে কেউই অপরিহার্য না!

ভাইয়ার শেষ বইটা (নামহীন দামহীন) নিয়ে আমার মধ্যে ভালো লাগা, খারাপ লাগা উভয় ধরণের বোধই কাজ করে। যেহেতু সেখানে বিভিন্ন অফিসিয়াল বিষয় খোলাখুলি উঠে আসবে তাই সেটা এখনে না বলি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রসঙ্গে সেটা উঠে আসবে আশা করি। তবে একটা বিষয়, আমার যতটুকু মনে পরে ভাইয়া বলেছিল এই বই কোন প্রকাশনীকেও দিবে না, হঠাৎ সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো কেনো এটা বোধগম্য হচ্ছে না। তবে আমি তার লেখার একজন অতি তুচ্ছ ভক্ত হিসেবে চাই তার এই বই যত বেশি সম্ভব ছড়িয়ে পড়ুক, মানুষ পড়ুক, হিমালয় ভাইয়াকে জানুক।

ভালো থাকুক হিমালয় পাই, সুস্থ থাকুক হিমালয় ভাই কিংবা দত্তক পিতা...

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড