• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাণ্ডুলিপির অব্যক্ত কথা

এক জীবন ইতিহাসের নাম ‘অবলা’

  মাহবুব নাহিদ

১৭ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৪৩
কবিতা
প্রচ্ছদ : উপন্যাস ‘অবলা’

‘অবলা’ উপন্যাসটি শুধু একটি উপন্যাস নয়। এটি একটি জীবন ইতিহাস কিংবা একটি বাস্তব গল্পের অবাস্তব প্রতিবিম্ব। হয়তো একটি কাল্পনিক ঘটনা মনে হতে পারে। কারো জীবনে একই সঙ্গে এই সকল ঘটনা ঘটেনি।

জানি না উপন্যাসের নামকরণ সবার কাছে কেমন লাগবে। কিন্তু আমি নামটি দিয়েছি একদম শেষ মুহূর্তে। পুরো উপন্যাস শেষ করে যখন প্রকাশনীতে দিব, তখন দিলাম নামটা। নাম দিয়ে হয়তো বোঝা যাবে যে এটা নারীদের নিয়ে লেখা। আমাদের সমাজের এক শ্রেণির মানুষ নারীদের অবলা করে রাখতে চায়। নারীদের রান্নাঘরে দেখতেই পছন্দ করে। নারীদের প্রতি নিষ্ঠুর হতে একদম কুণ্ঠাবোধ করে না। এসব মানুষরূপী পশুদের জন্য এই উপন্যাসটি একটি প্রতিবাদস্বরূপ।

বেশ কয়েক বছর আগে ধর্ষণ নিয়ে একটি গল্প লিখেছিলাম। সেই গল্পটাই এখন বড় হয়ে উপন্যাস হয়ে গেছে। গত বছর বইমেলা শেষে পরিকল্পনা করেছি যে ধর্ষণ নিয়ে পরিসংখ্যানসমৃদ্ধ একটা প্রবন্ধ লিখব। কিন্তু সেই পরিকল্পনা আর পালে হাওয়া পায়নি। চিন্তা করলাম একটি উপন্যাস লিখে ফেলি যেখানে নারীদের জীবনে যতো সমস্যা হয় সবকিছু দেখাব আর তার মাঝেই দিয়ে দিব সেই পরিসংখ্যান।

উপন্যাসে সকল চরিত্রই কাল্পনিক। কিন্তু প্রতিটি ঘটনাই বাস্তবে ঘটে। বাস্তব জীবনে আমার দেখা সেইসব ঘটনাই ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি এই উপন্যাসে।

সবচেয়ে মজার বিষয় হলো এই উপন্যাসের অধিকাংশই মোবাইলে লেখা। ২৮ হাজার শব্দের মধ্যে ২৫ হাজারই সম্ভবত মোবাইলে লেখা। যেখানে যখন যা মনে পড়েছে লিখে রেখেছি। কোথায় বাসে বা ট্রেনে যাচ্ছি তখন না ঘুমিয়ে লিখেছি। কারো জন্য অপেক্ষা করছি, কয়েক লাইন লিখে ফেললাম। গরমের মধ্যে সবাই বাসে বা ট্রেনে বসে অস্থির কিন্তু আমি একমাত্র ব্যক্তি যে এক মনে লিখে যাচ্ছি। উপন্যাসটি লিখতে গিয়ে নির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা পেয়েছি আমার দীক্ষাগুরু প্রিয় ছোটমামা লেখক খালিদ ফেরদৌসের।

আমরা জানি আমাদের সমাজে নারীরা জন্মের আগ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত অনেক বিড়ম্বনার শিকার হয়। অনেকের কাছে মনে হতে পারে জন্মের আগেই কীভাবে? আসলে একজন মায়ের গর্ভে যখন কন্যা সন্তান আসে, আর সেটা যখন সবাই জানতে পারে তখন কটুকথা শোনা শুরু হয়ে যায় সেই মায়ের। মেয়েটার জন্ম হবার পর শুরু হয়ে যায় ভয়ঙ্কর জীবনযাপন। সমাজের চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মানুষরূপী সাপের ক্রমাগত ছোবলে হাঁপিয়ে ওঠে মেয়েটা।

যতবার জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে চায়, ততবারই দেখা দেয় নতুন একেকজন শিকারির। একটা জীবনে এতো এতো হিংস্র পশুর থাবা মেনে নিতে পারে না তার মা, বাবা কেউই। অভিমান আর কষ্টে বিদায় নেয় একে একে সবাই। এরপর জীবনটা শুধুই তার একার। একা লড়াই করতে এগিয়ে যায় বহুদূর। তার খুব বেশি দূরে আগাতে পারে না।

কারণ, আগাতে আগাতে তো আর পৃথিবীর বাহিরে যাওয়া যায় না। পৃথিবীর বাহিরে যেতে হলে তো একদম বিদায় নিয়ে যেতে হবে। আর যেতে হলে হার মানতে হবে। হার তো মানতে রাজি নয় মেয়েটা। বিদায় কেউই নিতে চায় না, বিদায় হয়ে যায়। হিংস্রদের হিংস্রতম থাবা আর কড়াল কষাঘাতে একদিন বিদায় নেয়ার উপক্রম হয়ে যায় মেয়েটার। গল্প হয়তো এখানেই শেষ হয়ে যাবে কিন্তু থেমে থাকবে না পশুরা, বন্ধ হবে না তাদের ধ্বংসলীলাও....

আরও পড়ুন- জীবনের গল্প ‘রুবি রহস্য’

ওডি/এসএন

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড