আব্দুল্লাহ আল ওয়াসিব
‘নিমগ্ন দহন’ নামের মাঝেই রয়েছে অন্যরকম সুঘ্রাণ। দহন কিভাবে সুঘ্রাণ হয় সেটাই ভাবছেন তো? কিছু কিছু ক্ষেত্রে দহন সুঘ্রাণ ছড়ায় তেমনি ব্যতিক্রম এই কাব্যগ্রন্থটি। গ্রন্থটি কবি প্রেম-বিরহ, দেশ প্রেম, মুক্তিযুদ্ধ, খাদ্যের জন্য একশ্রেণীর মানুষের হাহাকার এক কথায় আমাদের দেশের সামগ্রিক অবস্থা তার কবিতায় ফুটে তুলেছেন।
গ্রন্থটি পড়া খুব সহজ, তার থেকেও সহজ গ্রন্থটি পড়ে তা নিয়ে কিছু লেখা। কিন্তু কাব্যগ্রন্থ হলে কথা উল্টে যায়। কবির ভাব বুঝতে ঢুকে যেতে হবে কবির কবিতায়, পড়তে হবে বার বার তবেই কবিতার ভাব বুঝা যাবে। যতই মগজে ধারণ করবেন ততই কবির ভাব নিজের মধ্যে ফুটতে দেখবেন। তা না হলে কবিতা আপনার হবে কিভাবে? আপনাকে আটকে আটকে যেতে হবে গুটি কয়েক লাইনে। একটা পুরো উপন্যাস বহন করে দুই লাইনের একটা ছন্দ।
কবিতার বইটিতে রয়েছে ৬৪টি কবিতা। যার প্রত্যেকটি কবিতা ভালো লাগার, ভালোবাসার। হৃদয়ে দহন ধরাবে প্রত্যেকটি কবিতা। ‘নিমগ্ন দহন’ কাব্যগ্রন্থটি প্রথম কবিতা ‘মৌনতাই প্রতিবাদ’। প্রথম কবিতায় তিনি প্রিয়তমা, মাতৃভূমি নিয়ে যে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তা যদি কবির ভাবের সাথে ভাব মিলানো যায় তাহলে বুঝা যাবে কবিতাটি অমূল্য রতন।
কবির প্রত্যেকটি কবিতা হৃদয় ছুঁয়ে যায়। মনের মাঝে তোলপাড় করে দেয় মা-মাটির জন্য। তেমনি গুটি কয়েক কবিতা নাম - ‘স্বাধীনতার কাছে প্রশ্ন, অধিকার, রক্তস্নাত, রাহুগ্রাস, আবেদন, ঝরা বকুল,কৃতঘ্ন বন্ধু, নিমগ্ন দহন, শরণার্থী হৃদয়, মা আমার স্বর্গ, অন্ধকারের অন্তরালে, নিথর, স্বাধীনতার পিতা।’
কবির প্রত্যেকটি কবিতা হৃদয়ে দোলা দিয়েছে, ভাসিয়েছে আনন্দ বেদনার রাজ্যে। গুটি কয়েক লাইন আটকে গেছিলো মনপ্রাণ। তেমনি বিভিন্ন কবিতার গুটি কয়েক লাইন - ‘অধিকার বিবেচিত তাহলে কোথায়? আহার বাসস্থানের যেখানে নাই নিশ্চয়তা মানবাধিকার যেখানে ভূলন্ঠিত সে খানে আবার কিসের অধিকার?’ (অধিকার)
‘দেশপ্রম যেন রাহুগ্রাসে দানবের চিৎকার দিগন্ত জুড়ে’ (রাহুগ্রাস)
‘রেল লাইনের মতো এক সাথে একা কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কারো সাথে হয় না দেখা।’ (বিভাজন)
‘তুমিহীন আমি কবিতায় আঁকি আল্পনা তোমাকে ঘিরে এ ভুবনে অবিরাম চলে কল্পনা।’ (চিঠি)
‘তবে কেন যাবে মাগো, আমায় একা ফেলে? তুমি কি জান না মা, আমি পাগল ছেলে?’ (মা আমার স্বর্গ)
সীমানা লঙ্ঘন করো সংক্ষিপ্ত তাতেই হবে আমি পরিপূর্ণ তৃপ্ত। (শেষ অনুরোধ)
‘বঙ্গবন্ধুর নামের ওপর যুদ্ধ হলো শেষ আমরা পেলাম স্বাধীন একটি সোনার বাংলাদেশ।’ (স্বাধীনতার পিতা)
‘নিমগ্ন দহন’ বইটির প্রত্যেকটি কবিতা অন্তর ছুঁয়ে গেছে। কবি ও তার কবিতার বইটি ভালোবাসায় পরিপূর্ণতা দান করেছেন তার লেখা মাধ্যমে। হৃদয়ের সিংহভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে নিমগ্ন দহন কবিতা টার বইটির গুটি কয়েক কবিতা ও গুটি কয়েক ছন্দ। কাব্য প্রেমিকরা পড়তে পারেন কবিতার বইটি হৃদয় ছুঁতে না পারলে আপনার হৃদয়ে রেখে যাবে দহনের পোড়া গন্ধ।
কাব্যগ্রন্থ- নিমগ্ন দহ কবি- ফখরুল হাসান প্রকাশনী- হাওলাদার প্রকাশনী প্রকাশকাল - একুশে বইমেলা ২০১৭
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড