• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গল্প : লাল গোলাপের ভালোবাসা

  আশিক আহমেদ

২৪ মার্চ ২০১৯, ০৯:৪৯
গল্প
ছবি : প্রতীকী

নীলা একদিন প্রেমিকা ছিলো নীলের, নীল ও শুধুই নীলার ছিলো।

দু-জনের অজান্তেই একদিন প্রেম এসে কড়া নাড়ে তাদের মনে। অতঃপর ভালোবাসার পরশে সৃষ্টি হয় দু-জনের মাঝে নতুন একটি সম্পর্ক। লাল গোলাপ দিয়ে একদিন তাদের প্রেমের সূচনা ঘটে-আবার লাল বেনারসিতেই সমাপ্তির রূপ নেয় তাদের ভালোবাসা।

তবে কি সেখানেই সমাপ্তি ছিলো? তাদের ভালোবাসা - সত্যিই কি ভালোবাসা ছিলো? এরকম হাজার ও প্রশ্ন জাগে, সেই প্রেমিকার মনে- আর এর উত্তর খুঁজে ফিরে সেই গোলাপের প্রেমিক গন্তব্য হীন পথে হেঁটে হেঁটে।

আর এখানেই জন্ম নেয় গোলাপের ভালোবাসা। তবে শুনুন লাল গোলাপের ভালোবাসার গল্প। প্রথমেই বলছি এটা কোন গল্প নয় সত্যিকারের ভালোবাসা। নীল ও নীলার ভালোবাসার গল্প-

নীল একজন কলেজ পড়ুয়া প্রথম বর্ষের ছাত্র আর নীলা ও একই কলেজের একই ক্লাসের ছাত্রী। প্রথমে তাদের মধ্য খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়। তারপর কিছুদিন যাওয়ার পর বন্ধুত্বের হাত ধরে আস্তে আস্তে প্রেম নামক শব্দের সাথে পরিচিত হয় দু-জন। পরিচিত হয় লাল গোলাপের সাথেও।

নীলা একদিন হঠাৎ মধ্যরাতে নীলকে ফোনে করে বলল, ‘তুই কি আমাকে ভালোবাসিস। যদি আমাকে সত্যিই ভালোবাসিস তাহলে কাল আমাকে লাল গোলাপ দিয়ে প্রপোজ করবি। আমি তোর অপেক্ষায় থাকব কলেজ ক্যাম্পাসে।’

এই বলে ফোনটা রেখে দিলো নীলা। আর চুপটি করে শুয়ে থেকে রাত কাটিয়ে দিলো। ওদিকে নীলার এরকম হুট হাট কথা শুনে নীল একটু চমকে উঠলো। কারণ নীলার মুখে এরকম কথা শুনবে নীল কখনো ভাবেনি। বলা যায় নীলের বিশ্বাস’ই হচ্ছে না নীলা কী সত্যই বলছে এগুলো? নাকি মজা করছে আমার সাথে!

তারপর কি আর করার নীলার ভাবনায় ডুবে গেলো নীল। অনিদ্রায় কেটে গেলো দীর্ঘ রাতের সময়-ভোরের অপেক্ষায়- জেগে আছে রাতের আকাশ।

অত:পর রাত শেষে ভোর সেদিন নীল সাজ সকালেই কলেজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়? সেদিনের দিনটি ছিলো একটু ভিন্ন সকাল থেকেই আকাশে হালকা বৃষ্টি হচ্ছিলো বলা যায় রিমঝিম বৃষ্টি। কলেজে যাওয়ার আগে মনে পড়ে যায় নীলার বলা রাতের কথা। আবারো একটু ভাবতে থাকে নীল কিছুটা সময় কি করবে এখন। নীল অতঃপর সব ভাবনাকেই পিছু ফেলে- লাল গোলাপের এক তোরা নিয়ে নীলার সামনে এসে দাড়ায় নীল। বুকে একটু সাহস নিয়ে নীলাকে হুট করে বলে দিলো, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি নীলা’। নীলা ও সুন্দর করে ফুল গুলো হাতে নিয়ে আলতো করে বলে দিলো, ‘আমিও ভালোবাসি তোমায়।’

নীলের সেই সময়ের ভালো লাগার অনুভূতি সে বলে প্রকাশ করতে পারবে নাহ। কারণ নীল কলেজের প্রথম দিনেই ঐ নীলার প্রেমেই পড়েছিলো। তার মায়াবী চোখ, রেশমি চুল আর চোখের চাওনি তার মন কেড়ে ছিলো। তবে প্রথমে থেকেই ভালো বন্ধুত্ব আর নীলা ভুল বুঝবে বলে ভালোবাসা নামক শব্দ থেকে অনেকটা দুরে ছিলো নীল। আর আজ যখন নীলা নীলের হতে চাচ্ছে তখন নীলের কি বা আর করার আছে সেতো এখন মহানন্দদে..

তারপর ভালোই চলে যাচ্ছিলো তাদের প্রেম রোজ তাদের কথা হতো দেখা হতো কলেজ এর মাঠ সবুজ ঘাস আর সারি সারি গাছ গুলো গুলো তাদের প্রেমের সাক্ষী হতো। আরো সাক্ষী হতো রাতের আকাশ। নীলার প্রতি নীলের একটু বেশীই ভালোবাসা ছিলো। হঠাৎ একদিন নীলা নিখোঁজ--

ফোন বন্ধ কলেজে ঠিক বেশ কিছু দিন যাবত দেখা যাচ্ছে নাহ। কোন প্রকার যোগাযোগ নেই নীলার সাথে নীলের এই কারণে অনেকটা চিন্তিত নীল। আর বিষণ্ণতায় কাটাচ্ছে দিন। এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত। অত:পর মাস ছয়েক পর নীলের ফোনে রং নাম্বার থেকে একটা ফোন আসে। ফোনটা ধরার সাথে সাথে নীল শুনতে পায় ওপাশ থেকে নীল নীল বলে চিৎকার করে কাঁদছে কেউ একজন কিছুতেই কান্না থামাচ্ছে না? তবে এখন আর নীলের বুঝতে বাকী রইল না। এটা আর কেউ নয় আমার নীলা ছাড়া।

পরিশেষে সবকিছু নীলকে খুলে বলল নীলা। বাবা মায়ের আদরের একটি মেয়ে ছিলো নীলা। নীলা কখনো তার বাবা মাকে কষ্ট দিতে চায়নি তাই বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে বরং নিজের ভালোবাসাকে বিসর্জন দিয়েছে। ঘর বেধেছে অন্য অচেনা অজানা মানুষের সাথে। আর নীল কষ্ট পাবে বলেই এই বিয়ে ব্যাপারে কিছুই জানায়নি নীলা। তবে এখনো নীল কে ভুলতে পারেনি নীলা। নীলকে সত্যিই ভালোবেসে ছিলো সে।

নীলের জীবনেও নীলা ছাড়া আর কাউকে স্থান দিতে পারেনি। এটাই হয়তো সত্যিকারের ভালোবাসা। এভাবেই বেঁচে থাকুন লাল গোলাপের ভালোবাসা।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড