পিডি বিজয়
অন্ধের দর্শন
রোদের আলো কুয়াশা খেতেই মনে পড়ে, ভাঙাদাঁতের ফাঁকে ভাত আটকানোর গল্প, নিমগাছের ডাক্তারী পাশে আজ উপন্যাস।
ঝাউপাতার মঞ্চে মাটির নাচ, বেতের কাঁটায় গোলাপ অঙ্কন, অচল ঘড়ির ত্রি’পায়ে হাঁটার সময় দর্শন।
দিনালোতে ধর্ষণকারীর পিছনভাগ বোঝে, রাতাধারের লৌহকাঠি তারই, জলের জানালায় ভাসমান আয়নার মত।
স্ব-ভেদী চুলাও বলে আমিও সুযোগ চাই, পোঁড়াতে চাই অন্ধত্বের হাট, ঘূণেধরা কাঠ। রান্না করাবস্থায় মা’যে বলতেন, অন্ধদের চশমা পরালেও দেখতে পায় না।
সাঁকো
মাটির বিছানায় ঘুমিয়ে জলজ সাঁকো, কাঠের চুলায়ও ঘূণেধরা রোদে মাখা, শব্দহারা হাটে লিখছে লালপ্রেমী নাম।
দু’আঙুল ফাঁকে ধোয়ার পৃথিবী, দিনালয়ে লাঠি হাতানো সমাজ, আর নেতানো বীজের মন্ত্রকগণ।
মৌসুমী চেয়ারের মাথারাও তালিকায়! এ কারণেই বোধোহয়, মাঠে বীজ বপনাবস্থায় বাবা বলতেন, ফসল বিনষ্টের জন্য কামলারাও দায়ী।
বিষক্ষর পাতারা সময়ের পায়ে হাঁটছে, স্থিরতা মানেই যে, দ্যোতনার মনাগুনে নিজেকে বদলানো।
গন্তব্য
বয়স হেঁটে চলছে, কোন স্টেশন নেই, তবু থামতে হবে! উদ্দেশ্যহীন গন্তব্যতেও নামতে হবে।
নামা নামতায় থাকে স্টেশন নং শূন্য, দশাঙুল যাবেনা! জীবন্ত কাঠ-কয়লার জ্বালানি শেষ।
কিন্তু,পৃথিবীর আঙুলানুভব বলছে, আমাকে ধরো, স্টেশনে যাও, গন্তব্যের যে শেষ নেই।
ঘুমভাঙায় আবিষ্কৃত হয় বয়স মৃতপ্রায়, তবু জানায় সে, পোশাকী অস্বীকার করে পা’বাড়াও, গানের বিছানায় ভেদাভেদ দূর করো।
মনস্বর্গের অদৃশ্য স্বর্গানুলোভ হঠাও, দেখো মৃতাবস্থায় আমিও থমকে যাবো।
রাষ্ট্রযান
বালিকণা একবার,মাত্র একটিবার বুক খোলো, না না ভয় পেও না,তোমার তো নয়, আমার। দেখো সেখানে দেহকালিতে লেখা আছে, রাষ্ট্রযানে উঠিনি বলে আমি মৃত নই।
কিছু বলছি না বলে আমি নিরব নই, ভাঙাদেয়ালে ইটগাঁথুনিতে দাঁড়িয়ে আছি। দাঁড়ানোর অবস্থাতেই যে আমার কাছাকাছি, রাষ্ট্রীয় শকুনগলে লৌহালংকার পড়ানোর জন্য।
বালিকণা সামনে পা বাড়াও,পিছনে দেখো, বোতলবন্ধী চেয়ারে মদের নেশা জমা হওয়ায়, ফাঁকা টেবিল ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কেঁদে বলছে, ঐ দেখো, মিথ্যা, হিংসা, লোভ একসাথে চলছে।
অথচ টেবিলও সেই ফলহীন অকাঠেরই জাত, মাটির ঘাটিতে যে ভুলেশ্বরীয় মূলের জন্মদাতা।
বালিকণা ভ্রান্তি দূর করে শান্তি চাও, একটু রোদ, একটু ছায়া, একটু জল, তাহলে উঠে দাঁড়াও, বস্ত্র খুলো,অস্ত্র ধারণ করো, দেখো মনাস্ত্রে তথাকথিত ঈশ্বরও পালিয়ে যাবে।
টিপসই
কাঠভাঙা মুখ, ঢালপড়া সময়, কাকরাঙা পথে শব্দাগুণ বলছে, আমার বৃদ্ধাঙুল টিপসই দিতে চায়!
মনভোলা রঙিন পালিশ চায় না, চায় না করাতাঘাতের লালধ্বনি।
আর বলতে চায়, চশমার কাঁচঘরে থাকে দু’চোখ, যাদের দৃষ্টিভঙ্গিই একটি লোক।
যাতাকলমাঝে হাত রাখার মত! উপরে কিংবা নিচে, চাপে হাত কাটবেই।
আমজনতাই যাতাকল, দ্বিমুখী জলছবি, কেবল টিপসই দিতে নয়, নিতেও পারে। পাহাড়কেটেও গড়তে পারে সমতলভূমি।
হে গণতন্ত্র, হে গণতান্ত্রিক কান পেতে শোন, টেবিলমাঝে রাখা ডাকবাক্সের অগণতন্ত্রে আমার বৃদ্ধাঙুল টিপসই দিতে চায়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড