• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সাক্ষাৎকার

‘একটি উৎকৃষ্ট কবিতা মানুষের হৃদয়ে দ্রুত প্রবেশ করতে পারে’

  শব্দনীল

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৪৯
ছবি
ছবি : চাণক্য বাড়ৈ এবং (প্রচ্ছদ : উপন্যাস ‘কাচের মেয়ে’)

চাণক্য বাড়ৈ একজন কথাসাহিত্যিক। তিনি ১৯৮২ সালের ১২ মার্চ বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থানার রায়গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা চিত্তরঞ্জন বাড়ৈ এবং মাতা পিপাসা বাড়ৈ। তার প্রথম উপন্যাস ‘কাচের মেয়ে’ প্রকাশিত হয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯-এ।

উপন্যাসটি নারী প্রধান চরিত্র ধারণ করে সামাজিক বাস্তবতাকে ফুটিয়ে তুলেছে। বিশ্বব্যাপী চলমান ‘#মিটু’ আন্দোলনে শামিল হয়েছে ‘কাচের মেয়ে’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। চাণক্য বাড়ৈ ‘কাচের মেয়ে’ এবং নিজের সাহিত্য চর্চা নিয়ে কিছুটা সময় কাটিয়েছেন দৈনিক অধিকার এর সাথে।

দৈনিক অধিকার : চাণক্য বাড়ৈ কেমন আছেন?

চাণক্য বাড়ৈ : হ্যাঁ, আমি ভালো আছি।

দৈনিক অধিকার : একুশে বইমেলায় আপনার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘কাচের মেয়ে’সম্পর্কে বলুন-

চাণক্য বাড়ৈ : ‘কাচের মেয়ে’ আমার প্রথম উপন্যাস। এটি একটি নায়িকা প্রধান ও সমাজ বাস্তবতাভিত্তিক উপন্যাস। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি, ধর্মের ভুল প্রয়োগ, সামাজিক বিধি-নিষেধ, ট্যাবু, যৌন হেনস্থা, অসহযোগিতা, সন্দেহ-এসব উতরিয়ে কীভাবে একটি মেয়ে সমাজে তার অবস্থান করে নিতে চায়, তাই চিত্রিত হয়েছে উপন্যাসটিতে। উচ্চশিক্ষার জন্য পরিবারের গণ্ডী ছাড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশ্বিক আঙিনায় পা রাখা একটি মেয়ে, যার পায়ে পায়ে জড়িয়ে যেতে চায় পুরুষতান্ত্রিকতার বেড়ি, কেমন হয় তার জীবনযুদ্ধ? আর কী হতে পারে তার সম্ভাব্য পরিণতি? তার উত্তর দিতে চেষ্টা করেছি এই গল্পের ভেতর দিয়ে। মেয়ে হওয়ার দরুণ পরিবার কর্তৃক উচ্চশিক্ষায় বাধা পাওয়া আর নিকটাত্মীয় পুরুষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া একটি মেয়ে তার জীবনের নানা ঘটনাপ্রবাহ নিজের মুখে বর্ণনা করেছে। বলা যায়, বিশ্বব্যাপী চলমান ‘#মিটু’ আন্দোলনের শামিল হয়েছে ‘কাচের মেয়ে’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। পুরুষতন্ত্রের পাথরে নির্মিত সমাজে চলতে গিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া যাদের নিয়তি, তারা ‘কাচের মেয়ে’ ছাড়া আর কী? তাছাড়া নিজের জীবনের নানা স্খলনের কথাও মেয়েটি বলেছে অবলীলায়, যে কারণে মেয়েটি নিজেও কাচের মতো স্বচ্ছ হয়ে উঠেছে।

দৈনিক অধিকার : উপন্যাসের কোন দিকটি অধিক শিল্পময় হয়ে উঠেছে বলে আপনি মনে করেন-

চাণক্য বাড়ৈ : আমার কাছে মনে হয়েছে, এর বর্ণনারীতি এবং সংলাপ বেশি শিল্পিত হয়ে উঠেছে। এটা আমার একেবারে নিজস্ব মতামত।

দৈনিক অধিকার : আপনার সাহিত্যের মূল উপজীব্য বিষয় কি?

চাণক্য বাড়ৈ : মোটা দাগে বলতে গেলে, আমার সাহিত্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করি সময় মানুষ, সমাজ, সময় ও প্রকৃতিকে।

দৈনিক অধিকার : কথাসাহিত্য এবং কবিতা, এই দুটির ভেতরে কোনটি পাঠক হৃদয়ে দ্রুত প্রবেশ করে বলে আপনি মনে করেন?

চাণক্য বাড়ৈ : একটি উৎকৃষ্ট কবিতা মানুষের হৃদয়ে দ্রুত প্রবেশ করতে পারে বলে আমার মনে হয়। কারণ, এর অবয়ব ছোট অথচ, ব্যাপ্তি অনেক গভীর ও ব্যঞ্জনাময়। অন্যদিকে কথাসাহিত্যের পূর্ণাঙ্গ স্বাদ পেতে বেশি সময় ও ধৈর্যের প্রয়োজন পড়ে।

দৈনিক অধিকার : আপনার প্রথম প্রকাশের অনুভূতি বলুন-

চাণক্য বাড়ৈ : প্রথম বই প্রকাশের অনুভূতি জীবনব্যাপী, এ কথা বলতে পারি। তবে তা কেমন, সেটা বুঝিয়ে বলা মুশকিল। ভাষার সীমাবদ্ধতা এখানেই যে, তা মানুষের সব রকমের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে না।

দৈনিক অধিকার : সাহিত্যতে One The Subline (উৎকর্ষ) বলতে আপনি কি বুঝেন?

চাণক্য বাড়ৈ : এক কথায় পরিমিতি বোধ। এর বাইরে চলে গেলেই সেই শিল্প উৎকর্ষ হারাতে বাধ্য। যেমন, কোনো একটি বই পড়ে যদি আপনি কেবল হাসতেই থাকেন, তাহলে তা রম্যে পর্যবশিত। তেমনি, ভয়ের হলে তা হরর, একেরপর এক শরীর হিম করা ঘটনার ঘনঘটা হলে থ্রিলার, কান্নার হলে মর্সিয়া… এরকম আরকি। তাই শিল্পোৎকর্ষের ক্ষেত্রে পরিমিতিই হলো সবচেয়ে বড় বিবেচ্য।

দৈনিক অধিকার : ‘উৎকর্ষহীন সাহিত্য কি সাহিত্য নয়’ এই সম্পর্কে আপনার নিজস্ব মতামত বলুন?

চাণক্য বাড়ৈ : তা কী করে হয়? যার উত্তরণই ঘটেনি, তা অপরিণত; কাঁচা আবেগের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়।

দৈনিক অধিকার : সমাজ, রাষ্ট্র, ব্যক্তিদর্শনের পরিবর্তনে কথাসাহিত্যে কতটা ভূমিকা পালন করতে পারে বলে মনে করেন?

চাণক্য বাড়ৈ : দেখুন, সমাজ বা রাষ্ট্রের পরিবর্তন ঘটানো কথাসাহিত্যের কাজ নয়। হতে পারে না। কখনো কখনো তা এ দুটোকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে, সাহিত্যের উদ্দেশ্য নয়। তার প্রতিক্রিয়া মাত্র। আর ব্যক্তিদর্শনের পরিবর্তনে কথাসাহিত্য বড় ভূমিকা রাখে বলে আমি মনে করি।

দৈনিক অধিকার : শুনেছি কবিতা দিয়ে একটি রাষ্ট্র গড়া যায়, কথা সাহিত্য দিয়ে সেরকম কিছু কি সম্ভব?

চাণক্য বাড়ৈ : কবিতা দিয়ে একটা রাষ্ট্র গড়া যায় বলে আমি মনে করি না। কথাসাহিত্যের ক্ষেত্রেই তাই।

দৈনিক অধিকার : আপনার প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস, প্রাপ্তি এবং প্রত্যাশা কি?

চাণক্য বাড়ৈ : যেহেতু উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি, তাই এর প্রাপ্তি নিয়ে কথা বলার সময় এখনো আসেনি। আর প্রত্যাশার কথা যদি বলি, তা অনেক। তবে এক কথায় বলব, উপন্যাসটি পড়ার পড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রশাসন, শিক্ষার্থী, অভিভাবকেরা কিছুটা হলেও সচেতন হবেন।

দৈনিক অধিকার : আপনার এবং আপনার উপন্যাসটির জন্য শুভকামনা রইলো। ভালো থাকবেন।

চাণক্য বাড়ৈ : অধিকারের জন্য শুভ কামনা। আপনিও ভালো থাকবেন।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড