অলক চন্দ্র দাশ
শ্মশানের চিতা ডাকে না কেনো আমাকে? শ্মশানে কত বার গেলাম, তাকে মনে করাতে! অগণিত তাগিদ দিচ্ছি, চিঠিও পাঠাচ্ছি-
সাধকের সাথে আলাপ করেছি। একটু ঘুমাতেই তো চাইছি। অন্ন জল তো আর না গুরুজী! আচ্ছা, আমার হাতটা একটু দেখে দেবেন? দেখেন তো ঈশ্বরের কোন আদেশ লেখা আছে! হাসছেন?
ত্রিশূল হাতে ভোলা বাবার প্রিয় স্থান তো এখানেই। যদি একটু জিজ্ঞেস করতেন। কবে ওনার যজ্ঞে যাবার আমার কপাল হবে? বলবেন, আপনার পাগলটা আর মানছে না!
শ্মশানে ঘুমাবো এই প্রতিজ্ঞায় বিভোল আমার দুটি চোখ। রাতে ঘুমাতে যায় না বিছানায়। দিনে খেয়ে দেয়ে আরাম করে না শুয়ে! আমার অধিকার আদায় না করে যাবো না।বলবেন কিন্তু গুরুজী!
এরপর আসলে কিন্তু আমাকে ঠেলেও পারবেন না ফিরাতে। ওনি একটু মা কালীর প্রসাদ খাইয়ে দিলেন আমাকে। আমিও খুব খেলাম আপ্লুতে না চেয়ে ডানে-বামে। অভিমান করে মায়ের কাছে দিলাম অভিযোগ! আজ কিন্তু খাইয়ে বুঝ দিয়ে দিয়েছো! আমার একেবারেই পৃথিবীতে শান্তি লাগছে না! মন টানছে, খুব বেশি। মূল ঠিকানায় ফিরতে। এবারো আশাহত হলাম মা, ঘুমাবো ওই চিতাটাতে।
এইটুকু আবদার, না তুমি রাখছো। না আমার বাপে! আমি সবাইকে বলে রেখেছি আমাকে যেন, লাকড়ি কেরোসিন দিয়ে না পুড়ে! গাছের ঝরাপাতা, ক্ষেতের বন, গাছের ডাল দিয়ে। বেড়াঘর বানিয়ে যেন আগুন ধরানো হয়।
এসবের জন্য আর কত সময় যাবে? যোগাড় করে রেখেছি সবকিছু ঠিক ভাবে।যজ্ঞ শেষে, বলেছি কিছু ছাই গামছায় গিট্টু বেঁধে নিয়ে যেতে। শার্টের বুক পকেটে করে ঘুরলাম না হয়। তাদের সাথে তাদের ইচ্ছেমতো। এরা আমাকে খুব ভালোবাসতো। না হলে বলতাম জল ঢেলে ভাসিয়ে দিস পুরাটা! এই দাবীটুকু কি চাইতে পারি না? নিঃশব্দে অনুমতি দিলেন মা। এরপর জলশূন্য চোখে ফিরলাম।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড