অনোজ ব্যানার্জী
শিউলিঝরা শরতের, স্নিগ্ধমিষ্টি এক ঊষালগ্নে, পরমা দিয়েছিল আমার হাতে গুঁজে,আলতারাঙা একটি মনোলোভা কলম। হাসতে হাসতে বলেছিল, ‘আমার একটা ছোট্ট উপহার, আপনার জন্যে। খুব যত্ন করে সবসময় রাখবেন, আপনার পকেটে। আরো বলেছিলো, ‘এই কলম দিয়ে লিখবেন ভালোভালো কবিতা প্রতিদিন। যদি আসে কোনদিন, জীবনের পথে, কোন দুঃখ বেদনা, যন্ত্রণার কালো ছায়া। তবে ধরবেন মায়াভরা আদরে বুকের মাঝখানে। দেখবেন, সব ব্যথা, কষ্ট, আঁখিজল উবে গেছে নিমেষেই সাদা কর্পূরের মত ঊর্ধ্বপাতনে।
তবে, দুঃখ-বেদনা তো চায় না ছাড়তে আমার পিছু। ভালোবাসে আমাকে খুব। কিন্তু, পরমার সাথে এখন আর আমার হয় না দেখাশোনা। সে এখন আছে বেঁচে,সুখে-দুঃখে, নিজের সংসারজীবনে। তবুও তার সেই অমূল্য উপহার, এখনো আমি রেখেছি সযত্নেই। দামি কোন হীরের মত সাদরে।
গভীর নির্জন নিথর নিঠুর রাত্তিরেও, সেই কলম এখন আমার বালিশে থাকে আমার পাশে শুয়ে। আবার হঠাৎ কখনো কখনো সে, যায় হয়ে সবুজ টিয়াপাখি। যেন আকাশের নীলে থাকে তার উদাসী আঁখি। যায় উড়ে উড়ে বহুদূরে। আবার আসেও ফিরে ক্লান্ত, অবসন্ন, নিশ্চুপ রাতে, আমারই ঘুমন্ত হাতে। ঘুম ঘোরেই যায় লিখেলিখে কবিতা।
বলে আমাকে, ‘তাকাও সুনীল আকাশের দিকে, দ্যাখো করছে ঝলমল টাটকা রক্ত দিয়ে লেখা বড়বড় শব্দের মিছিল। রাখো গেঁথে ওদের, তোমার তৃষিত হৃদয়ের খাঁচায়।’
লিখে যাও কবি, লিখে যাও ওই সব রক্তরাঙা শব্দের জাগ্রত চেতনার চিন্ময়ীমালা। ওঠো, জাগো, করো না অবহেলা। তোমার কবিতার টর্নেডোর ঝড়ে পৃথিবীটা উঠুক দুলেদুলে। হোক ভয়ংকর ভূমিকম্প। চলুক নটরাজের প্রলয়ঙ্কর নৃত্য।
আমি বললাম, ‘তুমি কি কোন যাদুর কলম! তোমার মাঝে কি আছে, সেই প্রদীপের দৈত্য?’
তবে দাও আমাদের, সেই উপহার, এমন এক সুন্দর পৃথিবী। যেখানে থাকবে শুধুই অনাবিল সুখশান্তি। থাকবে অফুরান আনন্দ, নিঃস্বার্থ প্রেমভালবাসা, অতুল ঐশ্বর্য, বৈভব ও সমৃদ্ধি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড