• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রম্য গল্প : বন্ধুর বাপের সাথে একদিন

  রিফাত আহমেদ

১৮ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:৪২
ফোন

এক বন্ধুর কাছে কিছু টাকা পাই। কিন্তু কয়েকমাস হলো ও ফোন ধরে না। তাই ওর আব্বার নাম্বারে ফোন দিয়ে বললাম, "আমি আপনার ছেলেকে প্রচন্ড ভালবাসি। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই।"

ফোনের ওপাশ থেকে শুনলাম, "নাউজুবিল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ! ঐ ছেলে তোর ঘরে কি বাপ ভাই নাই? তুই পোলা হয়ে পোলাকে কিভাবে ভালবাসিস?"

আমি বললাম "দেখেন যুগ বলদাইছে। এখন আর ছেলেমেয়ের মধ্যে ভালবাসা সীমাবদ্ধ নাই। বিশ্বাস না হলে আপনার ছেলেকে বলেন। ও আমাকে পাগলের মতো ভালবাসে। কিন্তু মুখ ফুটে আপনাকে বলতে পারছে না।"

ফোনের ওপাশ থেকে আবার বলতে শুনলাম "নাউজুবিল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ! ঐ পোলা তুই কি পাবনা থেকে বলতেছস?"

আমি বললাম "পাবনার পাগলারা কি আমার মতো জিপি থেকে রবিতে কল দিয়ে ফোনের টাকা নষ্ট করে? শুনে রাখেন আপনি যদি আমাদের এই ভালবাসা মেনে না নেন তাহলে আমরা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করবো। পরে কিন্তু আমার দোষ দিতে পারবেন না।"

-কি! বিয়া করবি? কেমনে সম্ভব!

-হ্যাঁ শুধু বিয়ে না। আমরা আমাদের ছেলেমেয়ের নামও ঠিক করে রাখছি। ছেলে হলে নাম রাখবো আক্কাস। মেয়ে হলে ঝাক্কাস।

-তোর কি লজ্জা বলতে কিচ্ছু নাই? ছেলে হয়ে ছেলেকে ভালবাসে কিভাবে? আর তুই কি কোনোদিন শুনছস নেগেটিভ আর নেগেটিভ বা পজেটিভ বা তার পজেটিভ মিলে কাজ হয়? বেদ্দব পোলা।

-কেন আপনি বীজগণিত করেন নাই? মাইনাসে মাইনাসে প্লাস হয়। আপনি জানেন না?

-বেদ্দব পোলা। তোর আব্বার নাম্বার দে তোর আব্বার কাছে যদি বিচার না দিছি!

-আমার আব্বা আমাদের বিষয়ে সব জানে। বিচার দিলেও সমস্যা নাই। তিনি আমাদের মেনে নিবে।

-কস মি মমিন? তোর আব্বাও জানে? তাহলে তোর দাদার কাছে বিচার দিমু। কমু তার নাতীর সিস্টেমে সমস্যা আছে।

-আমার সিস্টেম সব ঠিক আছে। বিশ্বাস নাহলে আপনার ছেলেকে জিজ্ঞাস করেন। সেতো আমার সিস্টেম দেখেই ভালবেসেছে।

এবার ফোনের ওপাশে ধপাস করে কিছু পরে যাওয়ার শব্দ শুনে ফোন রেখে দিলাম। আর বন্ধুর ফোনের অপেক্ষা করতে লাগলাম।

একটু পরেই বন্ধুর ফোন।

-ঐ শালা, তুই আমার আব্বারে কি কইছস?

-বেশি কিছু বলিনাই। সামান্য কিছু কইছি। কেন কি হইছে?

-আব্বা মাথা ঘুইরা পইড়া গেছে।

-কস কী! এখনো তো তেমন কিছু বলি নাই।

-মিথ্যা কথা বলবি না। আমি চেক করছি তুই আব্বার সাথে পাক্কা ৮ মিনিট কথা কইছস।

-হ বন্ধু, তোমার কাছে যে টাকা পাই সেইটার জন্য তোমার আব্বাকে কল দিছিলাম। তুমিতো ফোন রিসিভ করো না। তাই তোমার আব্বার কাছে টাকা চাইলাম।

-তোর বিকাশ নাম্বার দে। আমি এখন টাকা দিতাছি।

-টাকা নেওয়ার সময় মনে আছিল না? এই নাম্বার থেকেই বিকাশ করে দিছিলাম? আর শোন, পাঁচশো টাকা বেশি করে দেস। প্রেমিকার সাথে ডেটিং আছে।

-পারমু না। আমার কাছে টাকা নাই।

-সমস্যা নাই। আমার কাছে তোর আব্বার নাম্বার আছে। একটু পরেই আবার ফোন দিমু। এখন তো জীবিত আছে। একটু পর তাও পাবি না।

-দাঁড়া দিতাছি। কিন্তু খবরদার জীবনে আর আব্বার নাম্বারে কল দিবি না। দশটা না পাঁচটা না একটাই বাপ আমার।

একটুপর দেখি ফোনে একটা মেসেজ এলো বিকাশ থেকে " ক্যাশ ইন ****"।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড