• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বইয়ের আলোচনা

তেলে তেলে তেলাকার : ছন্দে ছন্দে বাস্তবতা

  নাসিম আহমদ লস্কর

১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৯:৪৬
ছবি
ছবি : প্রচ্ছদ ‘তেলে তেলে তেলাকার ’

সাহিত্যের অন্যতম একটি শাখা হচ্ছে ছড়া। ছড়ারমাধ্যমেই ছড়াকাররা ফুটিয়ে তুলেন জীবনেরসাদাকালো প্রতিচ্ছবি, প্রেম- ভালোবাসার কথা, সমাজবাস্তবতা, দেশপ্রেম ইত্যাদি। বোধের জগৎ যখনছড়াকারকে নাড়া দেয় তখনই তিনি রচনা করেন ছড়া।একজন সফল ছড়াকার ছড়ায় সেসব বিষয়বস্তু নিয়েআসেন যেগুলো মানবজীবনকে স্পর্শ করে।

কবি ও ছড়াকার সিদ্দিক আহমদ একজন বেশসিদ্ধহস্ত ছড়াকার। তিনি সিলেটের পায়রা প্রকাশেরসত্বাধিকারী। লেখালেখির অন্যান্য শাখায়ও তাঁরবিচরণ রয়েছে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১১টি।তাঁর রচিত ছড়াগুলোতে ফুটে উঠেছে দেশ ও দশেরকথা, সমাজ বাস্তবতা, প্রেম-ভালোবাসা সহ নানাবিষয়বস্তু। ‘তেলে তেলে তেলাকার’ তাঁর রচিত একটিছড়াগ্রন্থ যে গ্রন্থটিতে ফুটে উঠেছে বর্তমান সমাজব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি সহ আরো কিছু মৌলিক বিষয়ের।একুশে বইমেলা ২০১৮তে পায়রা প্রকাশ থেকে এ গ্রন্থটিপ্রকাশিত হয়েছে। বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে কবিবাছিত ইবনে হাবীবকে। বইটিতে মোট ৬৪টি ছড়া স্থানপেয়েছে। এখানে কিছু ছড়া নিয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরেআলোচনা করা হলো।

‘চলে যদি যাও

পৃথিবীর শেষ কোনপ্রান্তে

তবে মনে রেখো আমিও

আসবো তোমার অজান্তে।’

যাও তুমি

পৃথিবী এমন এক মোহময় জায়গা যেখানে ছড়িয়েছিটিয়ে আছে ভালোবাসার সম্ভার। মানুষ যখন কাউকেভালোবাসে তখন সে ওই মানুষটির আত্মার সাথে মিশেযেতে চায়। তাই সে তাঁর কল্পনার জগতে চাষ করে প্রিয়মানুষটির অদৃশ্য আত্মার সাথে মিশে যাওয়ার ভাবনা।

‘কেউ তেল দেয়

কেউ তেল নেয়

কেউ তিল করে

কেউ তাল করে’

তেলে তেলে তেলাকার

এই ছড়াটি হচ্ছে গ্রন্থটির নাম ছড়া। ছড়াটিতে সমাজেরএক বীভৎস বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। আমাদের বর্তমানসমাজের প্রতিনিধিত্ব করে ছড়াটি। মানুষ নিজের সুবিধাআদায়ের জন্য অনেক সময় সত্যকে বিসর্জন দেয়, অন্যায়কে ন্যায় বানানোর চেষ্টা করে। ছড়াকার বিষয়টিঅত্যন্ত সুনিপুণভাবে অবলোকন করেছেন এবং তাতুলে ধরেছেন।

‘সিলেট আমার প্রাণের শহর

জুড়ায় মনঃপ্রাণ

সাতকরা আর কমলালেবুর

কি যে মিষ্টি ঘ্রাণ।’

সিলেট

মানুষ যেখানে জন্মগ্রহণ করে সেখানকার প্রতি তাঁরথেকে যায় নাড়ির টান। আর সে টান থেকেই লেখকছড়াটি রচনা করেছেন; ফুটিয়ে তুলেছেন সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সাতকরা আর কমলালেবুর কথা।

‘তিড়িং বিড়িং সবাই লাফায়

কাজে হুক্কাহুয়া

কথার বেলায় বলেছি সবাই

কাজের নামে ভূয়া।’

তিড়িং বিড়িং

কথায় আছে, ‘কাজের বেলায় কাজী/ কাজ ফুরালেপাজি।’ সমাজে অনেক চাটুকারের বাস রয়েছে যারামুখসর্বস্ব। বাস্তবে তারা কোন গঠনমূলক কাজেঅংশগ্রহণ করে না যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সমাজব্যবস্থায়। ব্যাহত হয় উন্নতি। ছড়াটি সমাজ সচেতনলেখকের শৈল্পিক প্রতিবাদ।

‘ছড়া দিয়ে গড়া হয় বিবেকের দ্বার

ছড়া তাই আলোকিত ঘর

ন্যায় অন্যায়ের বিবেকী ঘর’

ছড়া নাকি খুলে দেয়

ছড়া হচ্ছে সত্য প্রকাশের এক শক্ত মাধ্যম যা পাঠকরলে পাঠক খুঁজে পায় জীবনের স্বরূপ। ফলে খুলেযায় মানুষের বিবেকের দ্বার। লেখকের শাণিত বিবেকবিষয়টি সুনিপুণভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে।

‘মানুষে মানুষ মারে ধরে

লুণ্ঠিত মানবতা

কোথায় পাবো ওমর, আলী

রুখবে দানবতা।’

আমার আরাকান

বিশ্বসমাজ বর্তমানে এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।চারদিকে যুদ্ধের দামামা বাজছে। ছড়াকার এ দুঃসময়েমানবতার কাণ্ডারিদের অভাববোধ করেন। তিনিপ্রত্যাশা করেন নতুন প্রকৃত মানব হৃদয়েরঅধিকারীদের যারা সমাজে ফিরিয়ে নিয়ে আসবেনশান্তির স্বর্গ।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড