শব্দনীল
কবি হাসনাত নাগাসাকির প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। কাব্যগ্রন্থের নাম ‘সঙবিধিমুক্ত সর্তকী’। গ্রন্থটি চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন থেকে ২০১৯ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশ পাচ্ছে।
দৈনিক অধিকারের সাহিত্য পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো ‘সঙবিধিমুক্ত সর্তকী’ পাণ্ডুলিপি থেকে কয়েকটি কবিতা-
অন্তর্ঘাত
আমার কোনও টেলিস্কোপ নাই। এই অভিযোগে আমি আর আমার স্ত্রী - কোনো কোনো রাতে আমরা সীমানা ছাড়িয়ে সীমাবদ্ধ হতে থাকি। আমার স্ত্রী চলে যান আপনার টেলিস্কোপে চাঁদ দেখবেন বলে। আপনি তাকে কী চাঁদ দেখান - জয়?
আপনার ব্যক্তিগত টেলিস্কোপ ধার চাইলে বিনিময়ে আপনি আমার অণুবীক্ষণ নিতে নারাজ।
আপনাকে বারবার আমি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি - কবিদের ঘরে একটা অণুবীক্ষণ থাকা আবশ্যক। আমরা, কেবলই- কেন দূরেই বীক্ষণ করবো- জয়?
আপনার কোনও অণুবীক্ষণ নেই। এই অভিযোগে এক কিংখাব রাতে আপনার স্ত্রী চলে আসলো আমার অণুবীক্ষণের কাছে। আমি তখন মাত্রই দাড়ি কেটে মসৃণ হয়েছি। আমি তখন পঁচিশ বছরের যুবক হয়ে উঠি আবিষ্কারের নেশায়। আমিওতো কবি, কিছু কিছু কারিশমা আছে জানা!
সেই রাতে আমি চাঁদকে নামিয়ে আনি ঘরে। আপনার স্ত্রী বুঝে যান টেলিস্কোপের অপ্রয়োজন। সেদিন পৃথিবীর অমোঘ সূত্র উদঘাট করি আমরা দুজন।
প্রত্যাখ্যান
এ শহরে যদি ফের কখনো ফিরি,যদি ফিরি, যদি ফের ফিরি এই কুঞ্চিত ইটের হৃদয়ে- সেদিন বোতাম খুলে দেখবো না বুকের অরণি, মিস্টিক শুভ্র - তোমার। থরে থরে কবরের নীরবতা ভেঙে চেঁচিয়ে উঠা চামচিকার যে হাসি স্ট্যান্ডার্ড ধরেছো- তোমাদের প্রেমের সংজ্ঞা আমি প্রত্যাখ্যান করলাম।
কেবল আড়াল করে বাঁকা চাহুনি, চোখের নিচের কালো দাগ - বলে যাচ্ছো অকথন এইসব কাকের রাজ্যে। এভাবে নিত্য ক্রমেই প্রপিতার লাশ পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াবে চারিদিকে; গুছানো যাবে না কিছুতেই অহেতুক কাঁধের পেটরা। তোমার নামে আমি হয়তো বানাতে পারতাম উড়াল সড়ক, সারিসারি পলাশের বন - তুমি তা নিতে প্রস্তুত নও।
তোমার মেকাপ-মুখে ছুঁড়ে দিয়ে একগাল হাসি - তোমাদের প্রেমের সংজ্ঞা আমি প্রত্যাখ্যান করলাম।
অই লোকটা কে?
অই লোকটা কে? তোমার কোলের উপর হাত রেখেছে অসভ্যের মতো; কনুইটা স্পর্শ করেছে তোমার বামস্তন! ও এতো দুঃসাহস কোথা থেকে পায়?
অই লোকটা, তোমার কোলে তার ডামহাত রাখা, কেমন দীর্ঘদেহী, কেমন সাদাটে বেমানান! আর তার পেশিবহুল বাহু দানবের মতো অসুন্দর। (অন্ধরা হয়তো তাকে সুন্দর বলবে!)
আমাকেই দেখো, আমি এতো দীর্ঘদেহী নই; রঙটাও মহান কৃষ্ণের। আর তুমি জানো, যোদ্ধা একিলিস খাটো ছিলো, আর, তুমি জানো, যোদ্ধা একিলিস ভর্ৎসনা করতো অহেতুক উঁচুদের। তুমিতো জানোই, যুদ্ধের জন্য ‘সাইজ ডাজ'ন্ট ম্যাটার’।
অই লোকটা কে? ও তোমার পাশে বসেও অতো কাছে নয়, যতোটা তোমার - আমি। সে কি শুনতে পায় তোমার হৃদকম্পন, যেমনটা তোমার - আমি? লোকটার সাথে তুমি শীতকালীন সাপের খোলস বদল করেছো - রাতের খোপরে?
বড়জোর সে তোমার সন্তানের বাবা হতে পারে। সে তোমার কোলে হাত রাখতে পারে না, কিছুতেই ; সে তোমার চোখে চোখ রাখতে পারে না।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড