জে.ডি রায়
গিয়েছিলাম ঢাকা মেডিকেলের মর্গে, যদিও এক রিলেটিভের এক্সিডেন্টের কথা শুনে, কিছু লোক বলাবলি করছিল যে লোকটি মে বি মারা গেছে, তাই খুঁজতে ঢুকেছিলাম ওখানে, জানতাম না যে মানুষ এর জীবনের মৃত্যুর পরেও এত কষ্ট পেতে হয়!
যাই হোক, দেখলাম মরদেহ গুলো, সবগুলো যেন ফ্রিজের শাকসবজির মত পরে আছে, কোন আবার পচে গলে শেষ হয়ে যাচ্ছে, দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। কিভাবে সম্ভব? প্রতিটা মানুষ বেঁচে থাকতে তার পরিবার, স্বজন বা অন্যান্য মানুষদের জন্য কত যুদ্ধ করে, কত হিংসা, কত অন্যায়, কিন্তু কোথায় এখন তারা? এদের কি কোন আত্মীয়স্বজন নেই?
প্রশ্নটি করলাম আমার পাশে দাড়িয়ে থাকা একজন স্থানীয় কর্মীর কাছে, তিনি আমাকে বললো ভাই এটা জানি না, এখানে সকল ধরনের মানুষ এর লাশ আছে, তাদের কোন পরিবারের সদস্যের খোঁজ না থাকায় প্রিজারভেটিভ দিয়ে বডি গুলো রাখা হয়েছে।
আমি বিস্মিত ভাবে দেখছিলাম বাকরুদ্ধ হয়ে, হাজারো প্রশ্নের ভীরে আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলছিলাম, তবে দেখে দেখে ভাবলাম এটাই কি প্রাপ্য ছিল এদের? এর জন্য কি এরা এত সংগ্রামী হয়ে বেঁচে ছিল?
কেউ হয়তো ছিল কোন মাস্তান খুন করেছে অনেক অনেক মানুষ, সবার উপর নিজের অধিকার ফলাতে চেয়েছিল,অন্যায়ের মাধ্যমে গড়েছিল ক্ষমতার পাহাড়, কিন্তু আজ কোথায় এদের ক্ষমতা? এই কি সেই ক্ষমতা যেটা আজ তাদের দেহটাকে পচিয়ে গলিয়ে শেষ করে দিচ্ছে?
আছে অনেক ভিক্ষুক, সাধারণ মানুষ এর দেহ, কেউ হয়তো না খেয়ে, অসুখে, অভাবে বা কোন আক্রমণে হারিয়েছে তাদের জীবন।
তবে কেন ছিল এত সংগ্রাম! তাদের জীবন সংগ্রাম তাদের কে আজ এই করুন পরিণতি নিয়ে এসেছে!
কোথাও কোনো উত্তর মেলেনি আমার, সব প্রশ্নের উত্তর একটাই এরা বেওয়ারিশ, এদের হয়তো কেউ নাই! তবে এদের জন্ম কোথায়? এদের সবার মা কি ছিল কুমারী মা? এদের কি ছিলনা কোন স্বজন? এরা কি একাই বাঁচতে চেয়েছিল?
হয়তবা না! কারণ এদের সবার পরিচয় ছিল, এরাও জীবন যুদ্ধ করে বেঁচে ছিল? কিন্তু আজ কেন এমন? আজ তারা বেওয়ারিশ? তাদের পরিচিতি কি কোন দিন মিলবে না? এভাবে কি তাদের লাশটা পচে-গলে কংকাল হয়ে পড়ে রবে কোন সায়েন্স ল্যাবে, বা স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির কোন ল্যাবে?
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড