সানাউল্লাহ সাগর
পড়শিরা যেভাবে হাসে ওভাবে নয়; বিন্দুতে নত হয়ে যাও আরো অজস্র খড় থেকে উবু হয়ে হাসা মাটিতে ঠোঁট রাখো দেখো কতোটা মাতাল হলে তুমি তোমাদের পায়ের ছাপ- কোথাও না যাওয়া হলে ফের উবু হয়ে যাও কাউকে দিও না আর কোরাস তেমন ডুবে যাক সে না বলার আগ্রহে... সীমানায় তোমাদের হাততালি এলো কেউ কি হাসছে ! ওভাবে নয়। আরো কিছু রাত জাগরিত হোক পায়ের মুখে মুখে...
নিমফুল ও তেরো ফর্মা বিকেল প্রতিবার ভিন্ন নিয়মে পঠিত হও—প্রিয় নিমফুল। ভিন্ন উচ্চারণে—বেতার হও অফুরান। অকারণ এই প্রতি-স্বাদে নিয়মের নেই কোনো বিবরণ। তবু আলগোছে সরে আসি—ভয়ে ভয়ে নিভে যাই; দেয়ালের আড়ালে। কোনো এক ছবিবারে দেখা হতে পারে—খোলা কোনো ভীরুতায়; আমাদের আবার... মাসে মাসে জমে উঠছি। বছরের শেষ দিকে খুলে যাবো ঠিক। খোলা কোনো বাহানায় নদীমুখী তুমি—গলায় নিয়ে পরাণের গান। ফিরে যেতে চাইবো না আর কোরাসের দিনে। অভিমানে জ্বলেছিলো যতো ঘুম সব দিন—পুড়ে পুড়ে—উড়ে যাবে দূরে। অন্য দিনে তোমার দরজায় এসেছিলো সেই। আমিও যেতে চাই খোলা বই হয়ে..
ব্রত ধরো আমার অহংকার গুচ্ছ থেকে টুপটাপ পতন হচ্ছো তুমি নিরাপদ ভূমিতে দাঁড়িয়ে আমিই আবার সেই চিত্র আঁকছি। আঁকতেই হচ্ছে তোমার পতন স্কেচ ভাড়াটে আলোর মায়ায় সব চোখগুলোতে তুমি মিইয়ে যাচ্ছো কোথাও আমি সেজে যাচ্ছি বিচ্ছেদ-বাদ্যে; সুরভিত সেইসব অহংকারে তোমার পুষ্পিত ছায়ারা ডেকে দিচ্ছে ঢেউ না চেনার মতন আমাকে আমি কেটে কেটে ছড়িয়ে রাখছি স্যুপে! কপালের ভাঁজেও তুমি থির হয়ে সইতে চাচ্ছো মৃগনাভির জমাট গন্ধ- প্রতিটি কোলাহলে জোড়া জোড়া চোখ মাটিতে মিলিয়ে নিচ্ছে নিজেদের পরাধীনতা পরিক্রমা শেষে দ্বৈত পুস্তিকায় টুপটাপ সমষ্টি থেকে নামহীন দোকানগুলোতে তোমাকে আর পাওয়া গেলো না গঠিত ইস্পাতে মরিচারা তখনো ডেকে যাচ্ছে মই...
আত্মহত্যার বিরতিতে দূরের দরজা থেকে কারো মুখ দেখা যাচ্ছে। মনে হচ্ছে খইলা গাছের পড়শি হিসেবে আমার আর কোনো বিষাদ জমে নেই। ইচ্ছে হলেই ফুল ভুলে জ্বলে যেতে পারি; অবিরত। ঘৃণার তরিকায় মৎস কন্যার বিয়েতে বিচ্ছেদ বাদ্য বাজিয়ে নিভে যেতে পারি। দেখা যাচ্ছে মাঘের মেঘে তোমার তুমুল উৎসব প্রক্রিয়া আমাকে ঘুচিয়ে দিচ্ছে অব্যক্ত সব। একটু বিরতি হলে মুছে যেতে পারি রঙের চশমায় চোখ ফেলে দিয়ে ছুটতে পারি বিরতিহীন- তারপরও তোমার তারপরও আমার তারপরও কারো কারো কোনো প্রশ্নই জমে থাকে না। আমার আয়নায় অদৃশ্যের কামুক তৃষ্ণা ফুটতে থাকে। তোমাকে ছুটি দেই। ছুটে যাও বৃত্তান্তের খড়গে। অস্থির আল্পনায় মিলেমিশে লালায়িত হও আরো। কাছাকাছি হাত থেকে চেনা লাগছে না কিছুই। মিথ্যের ফুটপাতে আমার ঘরবাড়ি আছে। মন্ত্রের কুয়োয় ডুবে যাচ্ছি। ফানুসের কাছে আমার অনেক ঋণ। আসন্ন বিরতিতে সব খাট বৃথা দিবো। আমাদের বিদ্যুতায়িত স্বপ্নরা খেলবে আরো- যে জন মুখের আদলে পেট এঁকে রাখে তার পাঠে পাটভাঙা শাড়ি। আমার আয়না মতোন আমি। আবার বুনে নিবো আমাদের বিরতি...
ভূট্টা, শৈত্যপ্রবাহ ও দোতারার অসুখ এই শৈত্যপ্রবাহে কেউ কি বের হয়! অকারণে! গোল্লায় যাওয়া অগ্রহায়ণের বিপত্তি মাথায় আমি বের হলাম। শরীরে অফিস আর মনের মধ্যে তুমুল বৃক্ষবাহাস। কেবল একটু সহজ হতে। লেকের আগাছায় মুখ ঘসে নিজের মুখটা দেখাও ছিলো বিস্ময়ের। তুমিও ছিলে। অথবা কোথাও ছিলে না। কিন্তু আমি দৃশ্যের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্র সরোবরের অঙ্গসজ্জা খেয়ে নিচ্ছি। আমার হাতে কোনো ঘড়ি নেই। বুকের মধ্যেও নেই কোনো চাবি। যতো ছবি ছিলো শীতের উষ্ণতায় বিলি হয়ে গেছে। এই যে একটু আগে সাঁই করে একটা রিকশায় একজোরা দোতারা চলে গেলো। আমি ভাবলাম তাদের নিমগ্নতায় শোকাক্রান্ত শীত। আর হাতে ধরা ভূট্টা দেখে মনে হলো এরাতো কেবলই ফিরে এসেছে বিনয় মজুমদারের বাড়ি থেকে। তুমি ফেরোনি । আমি শীতের কজ্বিতে উষ্ণতা লিখে লিখে মুছে গেছি তৃতীয়বার।তোমাকে কখনো ভূটা খেতে দেখিনি। তুমি সরব হয়ে যেতে সতীর্থের কান্নায়! এমন স্বর্গীয় ভঙ্গি আমি শতবার দেখতে চাই। তুমি চুমুকে ঘেমে যাচ্ছো আর আমি উষ্ণ চাদরে জড়িয়ে রাখছি গোপন। যেন ইচ্ছে হলেই ভিজে যেতে পারি মঙ্গা’র মুখে মুখে। তোমার অফিস ফেরত হাত আর চোখে জ্বলজ্বল করা ভূট্টার কিলবিল হয়তো লেকের এই গাঁথুনিটাই পেরুতে পারবে না। কিন্তু আমি মনে রাখবো ‘তুমি আমি মিলে বিনয়ের জ্যামিতিক কবিতা।’
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড