সাহিত্য ডেস্ক
কাঠঠোকরা সে- এক হৃদয়-হরণ পাখি। আঙ্গুলের নখে কোমল আদরে মানচিত্র খামছে ধরে শাণিত ঠোঁটে চুম্বনে চুম্বনে চির-ক্ষুধিতের মতো মাংস খুঁড়ে খায়।
বৃক্ষের বাহুডোরে অক্লান্ত শিল্পচারুঘাতে গর্ত এঁকে যায়।
জীবন্ত কফিন
মরে গেছি ভয়ানক ভাবে মরে গেছি। শ্মশান কবরস্থান এবং নদীর জলে কচুরিপানার মতো ভেসে যাওয়া লাশ অষ্টপ্রহর জেগে থাকে মগজের ভেতর।
মরে গেছি, সন্তর্পণে মরে গেছি জন্মই আমার প্রসূত মৃত্যু। এই শহরের অলি-গলি পথে কবিতা ফেরি করে যে যুবক, সে এক রাত্রিখোর ঢের মাতাল। একবার তাকিয়ে দ্যাখ কতো নির্বিকার চোখ, মরুভূমির মতো উত্তপ্ত বুক, আকণ্ঠে তার দাহনের তৃষ্ণা।
ছুঁয়ে দ্যাখ চিনতে সহজ হবে, প্রতিদিন সকাল- থেকে সন্ধ্যা উদাসীন বাউলের মতো হৃদয়ের বোতাম খুলে রোড, ঘাট আর ফসলের মাঠে মাটি ও মানুষের গন্ধ কুঁড়াতে এসে কুঁড়িয়ে পেয়েছে ঝরা পাতার এপিটাফ।
অতঃপর শেষ রাত্রির ট্রেনে গন্তব্যে পৌঁছবে, প্রেমের খরায় পুড়ে পুড়ে অনাদর অবহেলায় থেকে থেকে সভ্যতার যাতাকলে পিষ্ট হতে হতে প্রতীক্ষার সময় ফুরচ্ছে পৃথিবীর স্টেশনে।
নির্জনতা প্রসঙ্গে
স্তব্ধ জীবন নির্জনতায় ভাঙছে স্বপ্নের কাঁচ। স্বপ্নভাঙা মুহূর্তগুলো তীক্ষ্ণ ছুরি হয়ে বুকের মানচিত্রে আঁচড় টানে ঝর্ণার বেগে শরীর থেকে অহর্নিশি ঝরে পড়ে রক্ত। এখনো ঝরছে, এভাবে ঝরবে কতোটা জীবন? কতোটা রক্তক্ষরণে বেদনায় জর্জরিত দেহ পাবে সুশীতল স্নান? কতকাল সভ্যতার অলিগলি পথে, এ পাড়ায় ও পাড়ায় অপ্রেমের আঘাতে দ্বি-খণ্ডিত হবো? আর কতদিন স্বপ্ন ভাঙার শোকে নিজেকে আত্মাহুতি দিবো নিজের ভেতর। হে পবিত্র সুপ্রসিদ্ধ নির্জনতা আমাকে জড়িয়ে ধরে এই শোকার্ত হৃদয়ে প্রশান্তি বয়ে দাও।
ভীষণ স্থিরতায় হাতুড়ীর আঘাত হানো আমাকে ভাঙো নির্মম সুন্দরে, বেদনার শুদ্ধতম আগুনে পুড়িয়ে উজ্জ্বল করো, হাড়ের - ভেতর বিদ্ধ করো আশীর্বাদের পেরেক।
মাছরাঙা
জলের ভেতর অস্তিত্ব রেখে গর্ভে'ই - পার করেছি দীর্ঘ অমাবস্যা চন্দ্রগ্রহণ।
এবং প্রসব যন্ত্রণা ভুলিয়ে আনন্দ প্রসূত করে- এমনই এক চিৎকার, পৃথিবীর সকল সুরের চেয়ে মধুময় কান্নায় নিজেকে হারিয়েছি ভোরের উঠোনে।
অতঃপর, বিচূর্ণ আমাকে কুঁড়োতে চেয়ে, এই - মর্ত্যের ধুলোয় পায়ের চিহ্ন এঁকে কুঁড়িয়ে পেয়েছি স্মৃতির খড়িকাঠ, শ্মশানের ছাই। যেগুলো সময়ের বাতাসে উড়ে গেছে নিঃসঙ্গ নদীর অন্ধকারে গভীর জল, যার অতলে ডুবে আছে মাছরাঙা জীবন।
অপ্রতিরুদ্ধ তুমি
তোমাকে ভালোবাস’তে চেয়ে বরাবর ফিরে এসেছি নিদারুণ অপঘাতে। অতঃপর অকপট অপমান সয়ে সয়ে হয়েছি কাঙ্গাল- বিরাগী বাউল সেজেছি বিষণ্ণ দুপুরে।
এইটুকু পরিচয় তুমি’ই দিয়েছো।
ব্যর্থতার রঙ শরীরে মেখেছি বেদনা এঁকেছি বুকের ভেতর। শাণিত সূচের আঘাতে- দিন-রাত বেঁচে আছি মুমূর্ষু চিৎকারে।
এইটুকু অবলম্বন কী করে হারাই?
তোমার ঠোঁট থেকে খসে - পড়া কদর্য তাচ্ছিল্যে কুঁড়িয়ে নিয়েছি ভৈরবী রাগের মোহন মায়া।
এইটুকু প্রেম কী করে ফেরাবে?
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড