স্নিগ্ধা ফেরদাউস
পদ্মা নদী পার যদি হও আমার বাড়ি যেও,
পাখির কাছে ফুলের কাছে আমার খবর চেও।
ঐ মফস্বলের সবগুলো পথ আমার জেনো ‘সই’
তাদের কাছেই জিজ্ঞেস করো- আমার বাড়ি কই?
আমার বাড়ির পাশ দিয়ে বয় চিরল রুপোর খাল,
সেই খালেতে নাইতে পারো, যখন বর্ষাকাল।
বাড়ির পিছে ধানের ক্ষেতে সোনার ধানের শীষে
দোয়েল-ফিঙে-বুলবুলিদের সুর বুঝি যায় মিশে।
রোদ-বরষা মাথায় চাষার ধান নিড়ানো হলে,
খড় কুড়ানির দল ছুটে যায় ন্যাড়া মাঠের কোলে।
খড়ের গাদায় ফড়িং বসে লাল-সোনালি-নীল,
দূর আকাশে পাখনা মেলে নাচে ভুবন চিল।
আঙিনাতে জল টলমল ছোট্ট পুকুরখানি,
বর্ষায় তার জল থৈ থৈ, শীতে হাঁটুপানি।
পুকুরপাড়ে রৌদ্র পোহায় অলস ঢোঁড়া সাপ,
লেবুর গাছে লাউডগা সাপ আলতো মারে লাফ।
পুকুরতলে লুকিয়ে থাকা শোল-পুঁটি বা কৈ
ধরবে বলে মা-চাচীদের আনন্দ হৈ চৈ।
তাজা মাছের কাঁচা ঘ্রাণে হুলোর জিভে জল,
মাছ খাবে, তাই পাত পেতে নেয় ছোট্ট ছেলের দল।
আমার বাড়ির ছোট্ট উঠান, উঠান ভরা গাছ,
এক কোণে তার মায়ের হাতে সবজি শাকের চাষ।
ফুলের গাছে ফলের গাছে বাড়ি জুড়ে ছায়া,
সবুজ পাতায় সোনার রোদে চক্ষে লাগে মায়া।
সেই মায়ার সুতোয় মায়ের আঙুল বোনে রঙিন কাঁথা,
আমার বাড়ি মায়ার বাড়ি, মায়ার চাদর পাতা।
এই যে দিলাম পথের দিশা, দিলাম বাড়ির খোঁজ,
মনের ভেতর টুকেই রেখো, স্মরণ রেখো রোজ।
আমি যদি হই কখনো অস্তপারের তারা,
আমার শোকে মা যদি হয় শোকেই দিশেহারা,
তোমরা তখন দলবেঁধে সব আমার বাড়ি যাবে,
সবার মাঝে মা আমাকে সেদিন খুঁজে পাবে।
“একটা আমি হারিয়ে গেলেও হাজার মানিক আছে”
মা যেন এই সান্ত্বনাতেই শতেক বছর বাঁচে!
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড