মোহাম্মদ রায়হান
২১ তম দিনের বইমেলার বিকাল। দর্শনার্থীতে ভারী হচ্ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড এর প্যাভিলিয়নের সামনে আসন পেতে বসেছেন সঙ্গীতা ইমাম। মেলা প্রাঙ্গণে একই সময়ে নিজের সম্পর্কে একান্ত আলাপে সঙ্গীতা ইমামের সাথে ছিল দৈনিক অধিকার।
লেখিকা ও শিক্ষিকা সংস্কৃতিমনা সঙ্গীতা। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক হলেও লেখালেখিতেই সমাধিক পরিচিত। শিশু কিশোরদের জন্য নির্মাণ করেছেন দাপুটে কিছু গ্রন্থ। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২ এ 'সুখের রাজ্যে তুলতুল' বইটি এসেছে।
পেশা শিক্ষকতা হলেও নেশা লেখালেখি সঙ্গীতা ইমামের। তাই পত্রিকায় কলাম লিখে সুনাম কুড়িয়ে গ্রন্থ প্রকাশের স্বত্ত্ব ও যোগ হয় তার ঝুলিতে। কেবল পত্রিকার পাতায় লিখেই তিনি জনপ্রিয় হননি। শিশু-কিশোরদের জন্য লিখেছেন পাঁচটির অধিক গ্রন্থ।
শিক্ষকতা পেশা, না লেখালেখি- এমন প্রশ্নের জবাবে সঙ্গীতা বলেন, লেখা লেখি আমার পেশা নয়। আমার দায়িত্ববোধ থেকে আমি লিখি। সমাজের প্রতি, প্রজন্মের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে আমি লেখালেখি করি।
ছোট বেলায় কবিতা লেখার মাধ্যমে সঙ্গীতা ইমামের লেখালেখির হাতেখড়ি। পর্যায়ক্রমে পত্রপত্রিকায় কলাম লিখা থেকেই লেখালেখির প্রতি জন্মায় আগ্রহ।
সঙ্গীতা ইমামের প্রকাশিত সবকটি গ্রন্থই শিশু কিশোরদের জন্য। কেবল শিশু কিশোরদের জন্যই লেখার পেছনে কারণ বলতে লেখিকা জানান,"আমি যেহেতু শিক্ষকতা করি, তাই শিশুদের খুব কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়। ওদেরকে আসলে না জানিয়ে বা না শিখিয়ে আমরা প্রায়ই ওদের দোষারোপ করি। আমরা ওদের হাতে ভূতের কিংবা কল্পনার জগতের বই দিই। অথচ,শিশুরা বাস্তবের মানুষ।তারা কল্পনাও যদি করে, তাও বাস্তবসম্মত হতে হবে।ওদের মুক্তমনের মানুষ হিসেবে তৈরি করতে হলে মুক্তচিন্তার বই দিতে হবে। সেই চেষ্টাই আমি করছি"।
লেখালেখি ছাড়াও শিশুদের জন্য সঙ্গীতা ইমাম তার বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংগঠন গড়ে তুলেছেন '৭১ অবিনাশী সত্তা'। শিশুদের মুক্তিযুদ্ধকে জানানো,মুক্তিযুদ্ধকে চর্চার জন্য সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত।
বইমেলা ২০২২ এ প্রকাশিত সঙ্গীতা ইমামের বই 'সুখের রাজ্যে তুলতুল' লিখা হয়েছে লেখিকার ভূটান ভ্রমণের অবিজ্ঞতা নিয়ে। 'আমাদের গল্প'-বই লেখার মাধ্যমে বই রচনার সূচনা সঙ্গীতার। শিশুদের যৌন হয়রানি নিয়ে সচেতনতামূলক দুটি বই স্পর্শের রকমফের এবং অনাকাঙ্খিত স্পর্শ।
যৌনহয়রানি বিষয়ক এই দুটো বই লেখার তাৎপর্য নিয়ে সঙ্গীতা ইমাম বলেন,"আমি মনে করি, শিশুরা তাদের বাস্তব জীবনে এ ধরনের হয়রানির স্বীকার হয় প্রায়ই। কিন্তু বাবা মা রা কিংবা অবিভাবকরা এসব ঢেকে রাখার চেষ্টা করে। আমরা শিশুদের বুঝাই না। এতে শিশুদের এসব হয়রানির দিকে আরও ঠেলে দেওয়া হয়, কষ্টের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। সেই কষ্ট টা যেন না পায়, সেটাই আমার চাওয়া ছিলো।"
ওডি/ওএইচ
সম্পাদক: মো: তাজবীর হোসাইন
সহযোগী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118241, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড