সাহিত্য ডেস্ক
ঈশ্বর ও ক্ষুধার্ত শিশু
চলতি পথে এক ক্ষুধার্ত শিশুর সাথে ঈশ্বরের দেখা হল। সে ঈশ্বরকে বলল- আপনার অনুগতরা আমার আহার নিদ্রা সব কেড়ে নিয়েছে। আমি বহুদিন ধরে কিছুই খাইনি, আমার প্রচণ্ড ক্ষুধা পেয়েছে। খেতে দিন আমাকে।
ঈশ্বর বললেন- ‘দেখছি কি করা যায়!’ এই বলে ঈশ্বর চলে গেলেন।
শিশুটি ভেবেছে তার জন্য খাবার আনতে গিয়েছেন। কিন্তু এভাবে আরও বহুদিন বসে থেকে থেকে শিশুটি যখন মৃতপ্রায় অবস্থায় তখন সে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঈশ্বরের নাম লিখতে শুরু করে। এরপর নামলেখা সেই জায়গাগুলোকে সে নখের আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত করে। রক্তের লালে সে মুছে ফেলার চেষ্টা করছে ঈশ্বরের নাম । যেন সে তার জীবন থেকেই ঈশ্বরকে সরিয়ে দিতে চায়।
তারপর একদিন ঈশ্বর ফিরতি পথে শিশুটিকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে চাইলে একদল বার্তাবাহক ঈশ্বরকে জানালো - প্রভু! শিশুটি আপনার নাম নিয়ে খুব বাজে সব কাজ করছে।
রক্ত চক্ষু নিয়ে ঈশ্বর গেলেন সেই শিশুটির কাছে, রক্তাক্ত শিশুটিকে অবজ্ঞাস্বরে বললেন, ‘এসব কিসের পরিচয়? তোকে তো এই কর্মের জন্য নরকে যেতে হবে। পরিস্থিতি খুব ঘোলাটে করে দিয়েছিস।’
শিশুটি শুধু অস্ফুটে বিড়বিড় করে বলল- ‘পরিস্থিতিই মানুষকে তৈরি করে। পরিস্থিতি যখন বদলে যায়, মানুষও তখন পাল্টে যায়। মানুষ আসলে জলের মত। পাত্রের সঙ্গে সঙ্গে সে তার আকার বদলায়।’ এই বলে ঈশ্বরকে নিয়ে লেখা তার শরীরের সর্বশেষ চিহ্নটাও মুছে ফেলে। এরপর এই দৃশ্য দেখে ঈশ্বর তাকে কি করেছিল তা জানা যায়নি আর।
জন্ম নাও পথিক
রোদের লাশ মাথায় নিয়ে হেঁটে চলেছে জ্ঞান পিপাসু পথিক। উষ্কখুষ্ক চুলে তার দোল খায় বেনামী বাতাসের স্ক্যান্ডাল আর প্রতিরোধ। তবুও লালসালু আকাশপথ তার রক্তে হোলি খেলে। অদম্য ইচ্ছেগুলো ছুঁতে চায় হাজার স্বপ্ন। তাই বোবা পাথর হয়ে আছে মুখের ভাষা। বুকের জমাট আগুনে উত্তপ্ত কাব্যরথ আলো খুঁজে মানবিক শব্দের প্লাবনে।
সম্মুখে যার দৃষ্টি তাকে কেউ আটকাতে পারেনা। বিশ্বাসী চোখ অন্ধকারে খুঁজে পায় আলোর পথ।
পথিক হতে বয়স লাগে না মানুষ হতে বয়স লাগে না মানুষ হতে গেলে পথিক হতে হয়। আশ্চর্য প্রদীপ বুকে ধরে এগিয়ে যেতে হয় দুর্নিবার। স্বপ্ন স্পর্শ ছাড়া থামবে না যার গতি।
তুমি জন্ম নাও পথিক
সত্যের মশাল হোক উচ্চারণ। ছুঁড়ে ফেলো মুখোশের নেকাব। উন্মাদ নগরে আজ বড্ড ভালোবাসা দরকার বড্ড পথিক দরকার বড্ড মানুষ দরকার।
পতিতা- এক কষ্টের নাম
মেয়েটাও আজ মা হয়েছে সাজতে যার আজ রাতেও হচ্ছে , বাচ্চা মেয়েটা ভাবছে বসে মা ভাতের কাজে যাচ্ছে ।
মা টা যখন সাজতে গিয়ে মুখে ধরে আয়না মেয়েটা তার আঁচল টেনে করছে হাজার বায়না। মাকে বলে ওমা শোন আসার সময় আজ মনে করে আনবি কিন্তু আমার জন্যও সাজ।
আমিও তোর মতই না হয় প্রতি রাতেই সেজে মুখের উপর ম্যাকাপ দিয়ে যাবো ভাতের খোঁজে। মা তখন মেয়ের চিবুক ধরেই অঝোর কাঁদে সত্যটা না বলতে পারার কষ্ট বুকে বাঁধে। মেয়ে শুধু কয় ও মা তুই কাঁদছিস কেন বল একলা যেতে ভয় করলে আমায় নিয়ে চল। তোর কাজের আধেক না হয় আমিও করবো আজ আজ না হয় কাজে গেলাম নাইবা ধরে সাজ। মায়ের কান্না সস্তা কাজল চিবুক নষ্ট করে অবুঝ মেয়ের শুভ্র হৃদয় রোজ এভাবে মরে। কাজে গিয়ে মা আর মেয়ে বুঝতে পারে সবি ক্ষুধার কাছে ধর্ম কর্ম মিথ্যে প্রতিচ্ছবি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড