• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা ‘এস ওয়াজেদ আলী’

  অধিকার ডেস্ক    ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৯:১৩

শেখ ওয়াজেদ আলি

বাংলা সাহিত্যের সূচনালগ্নে যে কয়েকজন মানুষ ছিলেন তার মাঝে এস ওয়াজেদ আলী একজন। তিনি একাধারে একজন প্রাবন্ধিক, গল্পলেখক ও ভ্রমণকাহিনী রচয়িতা ছিলেন। ১৮৯০ সালের ৪ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার শণ্ঠীরামপুর মহকুমার বড় তাজপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এস ওয়াজেদ আলি নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন এই লেখক।

ওয়াজেদ আলির শিক্ষাজীবন শুরু হয় ১৮৯৫ সালে বড় তাজপুর গ্রামের পাঠশালায় শিক্ষাগ্রহণের মাধ্যমে। পরবর্তীতে তিনি শিলং মোখার হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং ১৯০৬ সালে স্বর্ণপদক লাভ করে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯০৮ সালে আলীগড় কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯১০ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯১২ সালে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড যান এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুনরায় বিএ ডিগ্রি ও বার-অ্যাট-ল সম্পন্ন করেন।

এস ওয়াজেদ আলীর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯১৫ সালে কলকাতা হাইকোর্টে আইনব্যবসার মধ্য দিয়ে। ১৯২৩ সালে তিনি কলকাতা প্রেসিডেন্সির ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হন এবং ১৯৪৫ সালে ওই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

১৯১৯ সালে প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত 'সবুজপত্র' পত্রিকায় এস ওয়াজেদ আলীর প্রথম প্রবন্ধ 'অতীতের বোঝা’ প্রকাশিত হয়। তিনি ১৯১৯ সালে Bulletin of the Indian Rationalistic Society নামে একটি ইংরেজি জার্নাল এবং ১৯৩২ সালে 'গুলিস্তাঁ' নামে একটি বাংলা মাসিক সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা ও প্রকাশ করেন। ১৯২৫ সালে তার ছোটগল্প 'রাজা’ ইসলাম দর্শন এ প্রকাশিত হয়।

তিনি পরপর দু’বার (১৯২৫ ও ১৯২৬) বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯২৭ সালে উক্ত সমিতির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন লেখক। একই বছর তার ছোটোগল্পগ্রন্থ ‘গুলদস্তা’ প্রকাশিত হয়। ১৯২৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর তিনি কলকাতা এলবার্ট হলে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে সংবর্ধনা প্রদান উপলক্ষে গঠিত সংবর্ধনা কমিটির সভাপতি হিসেবে অভিনন্দন পত্র পাঠ করেন।

এস ওয়াজেদ আলী ছিলেন একজন উদার ও প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব। মননশীল চেতনা, ইতিহাস ও নীতিজ্ঞান এবং সত্য ও সুন্দরের মহিমায় সমৃদ্ধ তার সাহিত্যকর্ম। তার স্বপ্ন ছিল বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে তার কলম ছিল ক্ষুরধার।

তিনি লেখক হিসেবে গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও ভ্রমণকাহিনী রচনায় খ্যাতি অর্জন করেন। তার উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে :

প্রবন্ধ- জীবনের শিল্প (১৯৪১), প্রাচ্য ও প্রতীচ্য (১৯৪৩), ভবিষ্যতের বাঙালী (১৯৪৩), আকবরের রাষ্ট্র সাধনা (১৯৪৯), মুসলিম সংস্কৃতির আদর্শ;

গল্প- গুলদাস্তা (১৯২৭), মাশুকের দরবার (১৯৩০), বাদশাহী গল্প (১৯৪৪), গল্পের মজলিশ (১৯৪৪); উপন্যাস গ্রানাডার শেষ বীর (১৯৪০); ভ্রমণকাহিনী পশ্চিম ভারত (১৯৪৮), মোটর যোগে রাঁচী সফর (১৯৪৯) প্রভৃতি।

১৯৫১ সালের ১০ জুন এস ওয়াজেদ আলি মৃত্যুবরণ করেন।

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড