• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নতুন বইয়ের বার্তা

গ্রন্থমেলার বই সমাচার

  ইমাম মেহেদী

০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:৪৩
প্রচ্ছদ
ছবি : বই সমাচার

‘ঢাকার ইতিহাস চর্চা ও মুনতাসীর মামুন’- গবেষক রেহানা পারভীন

এবারের একুশে গ্রন্থমেলার ১৫৭, ১৫৮, ১৫৯, ১৬০ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে বাংলা একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা রেহানা পারভীনের গবেষণা গ্রন্থ ‘ঢাকার ইতিহাস চর্চা ও মুনতাসীর মামুন’। ৪০০ বছরের পুরনো ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ঢাকা ১৯৭১ সালের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী।

ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের রয়েছে অনেক কৌতূহল ও ভালোবাসা। বাংলাদেশের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন গত চল্লিশ বছরে ক্রমাগতভাবে পাঠকের কাছে উপস্থাপন করেছেন ঢাকার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নানা দিক। ইতিহাসমনষ্ক পাঠক মাত্রই সেসব মুগ্ধবিস্ময়ে গ্রহণ করেছেন। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের ঢাকা বিষয়ক ৫৫টি বইয়ের সংক্ষিপ্ত ও ঋদ্ধ আলোচনা রয়েছে ‘ঢাকার ইতিহাস চর্চা ও মুনতাসীর মামুন’ শীর্ষক বইটিতে। ঢাকার ইতিহাস নিয়ে আগ্রহী যে কোনো পাঠককে মুনতাসীর মামুন রচিত বইয়ের সাথে পরিচিত করে তুলবে। ২০৮ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ৪০০ টাকা। প্রকাশ করেছে সুবর্ণ প্রকাশ। প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী আজিজ হাসান।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- গবেষক মোশারফ হোসেন

গবেষক মোশারফ হোসেনের সম্পাদনায় সুবর্ণ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘সাংবাদিকদের মুখোমুখি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ গ্রন্থটি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের আপামর জনগণের সাথে সরাসরি যোগাযোগের জন্য সভা- সমাবেশের পাশাপাশি সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন প্রভৃতি মাধ্যম ব্যবহার করেছেন। এসব সংবাদ মাধ্যমের অন্যতম যোগসূত্র সাংবাদিক সমাজ যারা অনায়াসেই যে কোনো রাজনৈতিক নেতার বক্তব্য দেশবাসীর কাছে উপস্থাপন করতে পারেন। বঙ্গবন্ধুও তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই সাংবাদিক সমাজের প্রতি মনোযোগী ছিলেন।

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ করলে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের সাথে তার ঘনিষ্ঠতার কথা জানা যায়। বঙ্গবন্ধুর সাথে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের যোগাযোগ ছিল প্রশংসনীয় ও সময়ের বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধু শুধু সুদক্ষ রাজনীতিবিদ ছিলেন না, সাংবাদিক বান্ধব রাজনীতিবিদও ছিলেন। তাই সাংবাদিকদের সাথে বঙ্গবন্ধুর মিথস্ক্রিয়া ‘সাংবাদিকদের মুখোমুখি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ শীর্ষক বইতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বইটি এক কথায় বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসও বটে। গ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৫৭, ১৫৮, ১৫৯, ১৬০ নং স্টলে। ৪০০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য রাখা হয়েছে একা হাজার টাকা। প্রকাশ করেছে সুবর্ণ প্রকাশ। প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী নাভিদা আমিন নিঝু।

‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের চিকিৎসা সহায়তা’- চৌধুরী শহীদ কাদের

একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধ ছিলো আমাদেও জন্য জনযুদ্ধ। যুদ্ধে নারী-পুরুষ উভয়েরই অংশগ্রহণ ছিল। বিশেষ করে শরণার্থী শিবিরগুলোতে পুরুষের সাথে নারীর অংশগ্রহণ ছিলো অকল্পনীয়। আমাদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সেইসব শরণার্থীদের সেই সবদিনের ক্ষত-বিক্ষত চিত্র গবেষক ড. চৌধুরী শহীদ কাদের তুলে ধরেছেন- তার মুক্তিযুদ্ধের গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতের চিকিৎসা সহায়তা’ গ্রন্থে। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে সময় প্রকাশনী থেকে।

বইটি ২০১৯ সালে গবেষণা শাখায় কালি ও কলম পুরস্কার পেয়েছে ইতোমধ্যে। চৌধুরী শহীদ কাদের এসময়ের একজন শিকড় সন্ধানী ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক। পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। একনিষ্ঠতা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমাদের সামনে উন্মোচন করে দিচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের অজানা আনালোচিত বিষয়াদি। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের এক অস্তিত্বের নাম। মুক্তিযুদ্ধের কথা যতটা আলোচিত, চর্চা ততোটায় অনালোচিত। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি তাদের কাছে বিজয়ের চেয়ে বড় ইতিহাস আর কিছু নেই। আমাদের বিজয়ের পিছনে কত যে জীবন হারানো শোককথার ইতিহাস রয়েছে, আমরা কখনো সেইসব স্মৃতিকে সেইভাবে মনেও করতে চাইনি। যখনি আমরা দুঃখকে স্মরণ করতে চেয়েছি তখনই আমাদের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট মোড় নিয়েছে অন্য দিকে, আমাদের ইতিহাস থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চেয়েছে আমাদেও দুঃখদিনের কথা।

একাত্তরের সময় প্রায় সত্তর লক্ষ শরণার্থীর আশ্রয় স্থায় পশ্চিম বঙ্গ। এই শরণার্থীদের মধ্যে সে সময় দেখা দিয়েছে মহামারি আকারে কলেরা এবং চোখের রোগ। এদের সাথে আরো লক্ষ-লক্ষজমা হয়েছে গুলিবিদ্ধ, আহত মানুষ। এই বিপদস্ত মানুষগুলোকে আশ্রয় দিয়েছে ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। আসামের করিমগঞ্জ হয়ে বিপুল শরণার্থীর আশ্রয় স্থান হয়ে উঠেছিল অবিভক্ত কাছাড় জেলা। মেঘালয়ের বালাট কিংবা মাইলামে একদিকে শরণার্থী অন্য দিকে মহামারির আতংক। জীবননিয়েই মানুষ মহা সঙ্কটে জীবনযাপন করছেন। যে সময় নিজের সন্তানকে রেখেই মা নিজে চলে যাচ্ছেন নিজের মত পথকে বেঁচে নিয়ে। সন্তানের মৃত দেহকে রাস্তায় ফেলে রেখে মা কিংবা বাবার অবিরত হেঁটে চলেছেন। তারা নিজেরাও জানেন না কোথায় তাদের শেষ ঠিকানা।

চৌধুরী শহীদ কাদের তেমনই একজন মাঠ পর্যায়ের গবেষক। যিনি একটা তথ্যের জন্য ছুঁটে চলেছেন- পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের প্রান্তে প্রান্তে। তিনি ঘুরে ঘুরে তুলে এনেছে মুক্তিযুদ্ধে ভারতের নানামুখি অবদানের কথা। যা আমাদেরকাছে এতোদিন অজানা ছিল। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী ধ্রুব এষ। মূল্য রাখা হয়েছে ৪২০ টাকা। গ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে ২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলার সময় প্রকাশনীর ২৭ নম্বর প্যাভিলিয়ানে।

দক্ষিণ এশিয়ার ডায়াসপোরা সাহিত্য- মোজাফ্ফর হোসেন

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ডায়াসপোরা সাহিত্য বহুল আলোচিত হলেও সেসব আলোচনায় বাংলাদেশের ডায়াসপোরা সাহিত্য। অন্যদিকে বাংলা ভাষার যেসব সাহিত্যিক ডায়াসপোরা সাহিত্য নিয়ে ইতোমধ্যে লেখালখি করেছেন বা করে যাচ্ছেন তাদের আলোচনাও ভারত আর ইউরোপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে। সার্বিকদিক থেকে মোজাফ্ফর হোসেনের ‘দক্ষিণ এশিয়ার ডায়াসপোরা সাহিত্য’ প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ।

গ্রন্থটির প্রথম অধ্যায়টির আলোচনা হচ্ছে ইতিহাস পর্ব। এই পর্বে ডায়াসপোরা, অভিবাসী ও প্রবাসী বিষয়ক আলোচনার পাশাপাশি স্থান পেয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার উপনিবেশ-পূর্ব ডায়াসপোরা, মধ্যযুগীয় ডায়াসপোরা ও আধুনিক ডায়াসপোরা। দ্বিতীয় ভাগে স্থান পেয়েছে ডায়াসপোরা সাহিত্যতত্ত্ব ও কমনওয়েলথ সাহিত্য বিষয় আলোচনা। গ্রন্থটির বাংলাদেশ পর্ব অনুসন্ধিৎসু পাঠকের চোখে এক নতুন জগত সূচিত করে।

এই পর্বে দেশভাগোত্তর ডায়াসপোরা বিহারী ডায়াসপোরা ইরেজি ডায়াসপোরা, বাংলাদেশি বিদেশী ডায়াসপোরা পাশাপাশি বাদ যায়নি রোহিঙ্গা ডায়াসপোরা পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু আলোচনা বাংলাদেশী ডায়াসপোরা পাশাপাশি বইটিতে স্থান পেয়েছে ভারত, পাকিস্তাসন এবং ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের ডায়াসপোরা। আরো স্থান পেয়েছে ডায়াসপোরা সাহিত্য নিয়ে বেশকিছু চমক প্রদ প্রবন্ধ। বইটিতে রয়েছে সাক্ষাৎকার পর্ব। যেখানে ব্যতিক্রমধর্মী অসাধারণ কিছূ সাক্ষাৎকার স্থান পেয়েছে। গ্রন্থটিরি শেষের অংশে রয়েছে পাঁচ তরুণ ডায়াসপোরা লেখকের চমৎকার একটি আড্ডা।

আরও পড়ুন : গ্রন্থমেলায় আসছে তাত্ত্বিক গ্রন্থ ‘গণমাধ্যমের গন্তব্য’

যারা দক্ষিণ এশিয়ার ডায়াসপোরা সাহিত্য নিয়ে ধারণা রাখতে চান বা সমকালীন সাহিত্যের বৈচিত্র্যটুকু অনুভব করতে চান; সেসব পাঠকের জন্যে এই বইটি অবশ্যপাঠ্য। বইটি প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স। চমৎকার প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী ধ্রুব এষ। ১৮০ পৃষ্ঠার বইটির প্রচ্ছদ মূল্য ৩২৫ টাকা। গ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে ২০২০ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলার পাঞ্জেরি পাবলিকেশনের ১৯ নম্বর প্যাভিলিয়ানে।

ওডি/এসএন

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড