• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বঙ্গবন্ধু রচিত গ্রন্থ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠেছে বইমেলার

  সাহিত্য ডেস্ক

০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:১৫
ছবি
ছবি : অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০

বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০- এর পর্দা উঠেছে। গতকাল (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসব্যাপী এই গ্রন্থমেলা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু রচিত এবং বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইয়ের উন্মোচনও করেন।

গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয় শিল্পী সাজেদ আকবরের নেতৃত্বে সাংস্কৃতিক সংগঠন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীসংস্থার শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। এরপর পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ করা হয়। মহান ভাষা আন্দোলনের শহিদ স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং ঐতিহাসিক ভাষার গান আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি পরিবেশন করা হয়।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি। প্রকাশক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘বাংলা একাডেমি বঙ্গবন্ধু রচিত এবং বাংলা একাডেমি প্রকাশিত আমার দেখা নয়াচীন গ্রন্থের মধ্য দিয়ে বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ১০০টি নতুন গ্রন্থ প্রকাশের কার্যক্রম শুরু করল। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলা একাডেমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল গ্রন্থ এবং রচনার সমন্বয়ে শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলি প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এই রচনাবলি সম্পাদনা করবেন বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।’ শুভেচ্ছা বক্তব্যে ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসি বলেন, ‘জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে অমর একুশে গ্রন্থমেলা একটি ঐতিহাসিক শুভ পদক্ষেপ। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গিত এই মেলা গোটা বাঙালি জাতির প্রাণের মেলা।’ প্রকাশক প্রতিনিধি মো. আরিফ হোসেন ছোটন বলেন, ‘একুশের গ্রন্থমেলা আমাদের জাতিগত বুদ্ধিবৃত্তিক অগ্রগতির স্মারক। গ্রন্থকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা এখন সময়ের দাবি।’

বিশেষ অতিথি কে এম খালিদ এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গিত অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের আয়োজন আরও বিস্তৃত, ব্যাপক এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত। আমরা ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বর্ধিত পরিসরে অধিক সংখ্যক প্রকাশককে স্টল বরাদ্দের পাশাপাশি মেলার নান্দনিক অবয়ব নির্মাণে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালিয়েছে। বিশ্বের দীর্ঘসময়ব্যাপ্ত এই গ্রন্থমেলার গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড এবং ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা মনে করি সংস্কৃতি-অনুরাগী আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় যেমন অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে তেমনি একুশে গ্রন্থমেলাও তার নেতৃত্বে বিশ্ব-স্বীকৃতি অর্জন করবে অনায়াসে।’

সভাপতির ভাষণে জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ‘বাংলা একাডেমির অমর একুশে গ্রন্থমেলায় জনমানুষের বিপুল আগ্রহ প্রমাণ করে মুদ্রিত বইয়ের ভবিষ্যৎ মোটেও অনিশ্চিত নয়। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গিত এবারের মেলা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’

প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের একুশে গ্রন্থমেলার অন্যতম আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর নতুন গ্রন্থ আমার দেখা নয়াচীন-এর প্রকাশনা। আমি বঙ্গবন্ধুর এ গ্রন্থের প্রকাশক বাংলা একাডেমি এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা আশা করি অসমাপ্ত আত্মজীবনী এবং কারাগারের রোজনামচার মতো এই গ্রন্থটিও দেশি-বিদেশি পাঠকের কাছে আদৃত হবে। বঙ্গবন্ধু যে কেবল রাজনীতিক ও রাষ্ট্রনায়কই ছিলেন না, একই সঙ্গে ছিলেন একজন অসামান্য লেখক- এই বইগুলো তার প্রামাণ্য দলিল হয়ে রইল।

তিনি বলেন, আমরা বাংলা ভাষার সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চাকে যেমন প্রণোদনা দিয়ে আসছি তেমনি অনুবাদ সাহিত্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করছি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৩টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। যা প্রতিটি বাংলাভাষী মানুষের জন্যই আনন্দের বিষয়।’

গ্রন্থমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৯ প্রদান করা হয়। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার- ২০১৯ পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন কবিতায়-মাকিদ হায়দার, কথাসাহিত্যে-ওয়াসি আহমেদ, প্রবন্ধ ও গবেষণায়-স্বরোচিষ সরকার, অনুবাদে- খায়রুল আলম সবুজ, নাটকে- রতন সিদ্দিকী, শিশুসাহিত্যে- রহীম শাহ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায়- রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, বিজ্ঞান ও কল্পবিজ্ঞানে- নাদিরা মজুমদার, আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনীতে- ফারুক মঈনউদ্দীন, ফোকলোরে- সাইমন জাকারিয়া। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের হাতে তিন লক্ষ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী গ্রন্থমেলা পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রামেন্দু মজুমদার, নূরুন্নাহার খানম এবং ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু।

লেখক বলছি অনুষ্ঠানে মেলার প্রথম দিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিধান রিবেরু, রেজা ঘটক, সৌম্য সালেক, সাইফুল ভুঁইয়া।

উল্লেখ্য, আজ (৩ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে গ্রন্থমেলার দ্বিতীয় দিন। মেলা শুরু হবে বেলা ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত আমার দেখা নয়াচীন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ড. ফকরুল আলম এবং কবি তারিক সুজাত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

ওডি/এসএন

নবীন- প্রবীন লেখীয়োদের প্রতি আহ্বান: সাহিত্য সুহৃদ মানুষের কাছে ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট গল্প, রম্য রচনা সহ সাহিত্য নির্ভর আপনার যেকোন লেখা পৌঁছে দিতে আমাদেরকে ই-মেইল করুন [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড