রুদ্রাক্ষ রায়হান
জল জীবন-২
পৌষের শীত রাইতে মাইনষেরা গাঙপাড় যায় গাঙ্গের পানিতে বর্শ্যি ফেলে বড় বর্শ্যি নাম পিতলি ঘড়ার বর্শ্যি দেড় টাহা দাম।
আসমানে চান্দের আলো ফুইট্টা রয় মাঝ রাইতে ভরা গাঙে বর্শ্যি ফেলতে হয়
রাইতের শীত নদী- এত প্রেম কই তুমি পাও? মাটির শইল্যে হুইয়া চান্দের হারা গায়- আদর মাহাও!
রাইতের ঘুমে নদী টানে লোকে জানে?
চান্দের আলো জানে- জানে কালা জল মাইনষের প্রেম মিছা, ভালোবাসা ছল।
জল জীবন-৪
নদীতে ডুবাইয়া নিলে হেই জমি সহজে কি জাগে? ভাঙ্গোলে ভাসাইয়া নিলে কলিজায় চিন চিন লাগে।
ময়নারে বিয়া দিতে পারি নাই ভাঙ্গোলিরে তহন আর নেয় নাই কেউ দুই চোক্ষে অন্ধকার, উথলায় দরিয়ার ঢেউ কত দোষ দিলো কত জনে!
ময়নারও তিন পোলা, ক্ষ্যাতে যায়- চাষ দেয় অর্ধাঅর্ধী ভাগে হায়রে পোড়া কপাল অহন মহিষা চর জাগে? পয়স্তি জমি-জমা খাস খতিয়ান হইয়া যায় কই আর ভুঁইয়া বাড়ি, সব জমি রাম বাবু খায়।
তুমি আর জাইগো না মহিষা তুমি- আর দেহাইয়ো’না ক্ষাব।
জল জীবন-৭
মইজুদ্দিন ভাই বুধবারে নাওডারে দিও!
দইরার মাছ হালায়, কই গিয়া পলাইছে কে জানে? মরা গাঙ হুইয়া আছে, কত মাঝি কত জাল টানে! কপালে দুঃখ যার থাহে- খোদা তারে জাইল্ল্যার ঘরে পয়দা দেয়।
কোন জনমের এই পাপ? এত টানি তবু জাল খালি রাইখ্যা দেও সাত আসমানে বইয়া খয়রাতী জাইল্ল্যারে তামাশা-দেহাও দুনিয়ায় এত খেলা, তামাশার আর কিছু নাই?
মইজুদ্দিন নাওডারে দিও বুধবারে বুধবারই শ্যাষ বার মোরে য্যান আর কেউ ডাহেনা গাঙ পাড়ে..
জল জীবন-৯
মাঝেমইধ্যে বাড়ির কতা মনে ওডে বুকটা ফাইট্টা যায় মাঝেমইধ্যে পুরাইন্যা দিনকাল হুদাহুদি কান্দাইয়া হালায়।
বেইন্নাকালে মা ঠিল্ল্যা ভইড়া পানি নিতো সমস্ত মাইয়ালোক নকশী কাঁথায় আঁক দিতো নাইরকেল দিয়া মোরা ভাইবইনে চাউলভাজা খাই।
খালি পায় স্কুলে দৌড়াইয়া যাই মাসকাটা নদীতে ল্যাংডা নাই ল্যাম জ্বালাইয়া পড়া শ্যাষে,তাত্তারি যাইতাম হুইতে কাডের দেউরকা থাকতো ঘরে, পড়ার সময়ে ল্যাম থুইতে।
মা’র আছিলো রান্ধনের গুণ কি যে ঘ্রাণ মশল্লার, লাহুরি দিয়া যহন লাড়ে আমরাও উক্কি দিতাম বারে বারে মাঝেমইধ্যে উড়কিতে ঝোল লইয়া মায় মোগো নুন চাইতে ডাকতো।
মায়ও বুড়া হইছে মাসকাটা নদীডাও নাই নিজেও মরলো নদী বাড়িডারে ভাঙ্গলো হুদাই।
জল জীবন-১২
তুমি হুদাই নৌকা নৌকা করো তুমি হুদাই ধরো ইলিশ মাছ সোনার শইল্যে লাঙ্গল বিনা বড় অইছে ঘাস
আইয়ো মাঝি রাইতে কিন্তু পোলার বাপে গ্যালে জানো মাঝি চোখ্যে আমার তোমার ফটোক খ্যালে।
পোলার বাপে পারেনারে শইল্যে হুদাই জ্বলে মাঝি আমি ডুবাইম তোরে কুমকুইম্মা জলে
আইজ্যা রাইতে আইয়ো মাঝি পোলার বাপে নাই মাঝি আমার কোলে তোমার একটা পোলা চাই।
আইমু আইমু ভাউজ তুমি রাইতে হজাগ থাইক্যো মধুও খামু ভাতও খামু ইলিশ রাইন্ধা রাইখ্যো।
আরও পড়ুন- একপৃথিবী বিরহ শুষে নিয়েছে অচেনা আগন্তুক
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড