• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে চাইলে

  লাইফস্টাইল ডেস্ক

১২ মে ২০১৯, ১৭:৩০
গর্ভাবস্থা
ছবি : প্রতীকী

চলছে রমজান মাস। এমনিতেই রমজান মাসে গর্ভবতী নারীদের জন্য রোজা রাখাটা বেশ কষ্টকর। তার উপর চলছে গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড গরমের প্রকোপ। তাই গর্ভবতী মায়েদের রোজা রাখার ব্যাপারে বেশ সতর্ক হয়ে থাকতে হবে। বিশেষ করে শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সিদ্ধান্ত নিতে হবে বুঝেশুনে। খেয়াল রাখতে হবে নিজের এবং শিশুর কোন রকম ক্ষতি যেন না হয়।

স্বাভাবিকভাবেই গর্ভকালীন সময়ে নারীদের বাড়তি কিছু পুষ্টির দরকার হয়। এইজন্য খাদ্য নির্বাচনে উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে। রমজান মাসে গর্ভবতী নারীদের বেশ কিছু নিয়ম মেনে চললে নিরাপদেই রোজা রাখা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক রমজানে রোজা রাখার ব্যাপারে চিকিৎসকদের কী পরামর্শ আছে।

চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ :

রোজা রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন। সে অনুযায়ী একটি ডায়েট প্লান ঠিক করে নিন। আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

ডায়াবেটিস পরীক্ষা :

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখার আগে পরীক্ষা করে নিন আপনার ড্যাবেটিস বা অ্যানেমিয়ার মতো কোন রোগ আছে কীনা শরীরে। ডায়াবেটিসের কারণে রোজায় বেশ ঝামেলার মুখোমুখি হতে পারে। বিশেষ করে এর ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে শরীরকে মারাত্মক ঝুকির দিকে নিয়ে যেতে পারে। আর অ্যানেমিয়া থাকলে শরীর দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়বে।

তাড়াতাড়ি ঘুমানো :

ইফতার এবং তারাবিহর পর বেশির রাত না জেগে থেকে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস করুন। এতে শরীর যথেষ্ট বিশ্রাম পাবে। গর্ভাবস্থায় যা অতি জরুরি। তাড়াতাড়ি ঘুমানোর কারণে সেহেরি মিস করা যাবে না। কারণ সেহেরি না খেলে আপনার এবং পেটের সন্তান দুজনই ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম :

গর্ভাবস্থায় রোজা রাখতে গেলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণ করা জরুরি। বিশেষ করে দিনের বেলায় রোদ এড়িয়ে চলুন। আর চেষ্টা করুন ভারী কোন কাজ না করতে। এই অবস্থায় ভারী কাজ করলে শিশুর ক্ষতি হতে পারে।

নিয়মিত ওজন মাপুন :

নিয়মিত ওজন মাপার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন শরীর সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে চলছে কীনা। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ওজন মাপাটা তাই জরুরি।

উৎফুল্ল থাকুন :

গর্ভাবস্থায় রোজা রেখে দুশ্চিন্তা করবেন না। এতে আপনার শরীরের ওপর বড় ধরণের প্রভাব পড়তে পারে। সব সময় হাসি খুশি এবং চিন্তা মুক্ত থাকার অভ্যাস করুন। এতে সন্তান এবং আপনি দুজনই ভালো থাকবেন।

ভাজাপোড়া খাবারে ‘না’ :

সেহেরি এবং ইফতারের সময়ে তৈলাক্ত এবং ভাজাপোড়া খাবার এড়িয়ে চলুন। এইসব খাবার মা এবং শিশু দুজনের স্বাস্থ্যকেই হুমকির মুখে ফেলতে পারে। বিশেষ করে এইসব খাবার খেলে বুকে জ্বালাপোড়া, অ্যাসিডিটি এবং শরীর দুর্বলের মতো সমস্যায় পড়তে পারেন।

বেশি বেশি পানি :

গরমের এই সময়ে এমনিতেই শরীরে পানির চাহিদা বেশি থাকে। গর্ভবতী মায়েদের বেলায় সেটা আরও বেশি প্রয়োজন। সারাদিন রোজা থাকার সময় অনেক পানি পিপাসা পেতে পারে। এরজন্য সেহেরির সময়ে একেবারে অনেক পানি পান না করে, ইফতার থেকে সেহেরির আগ পর্যন্ত ধাপে ধাপে পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ইফতারে বিভিন্ন রকম শরবত এবং ফলের জুস পান করুন। এতে শরীর সহজে ক্লান্ত হবে না। বাদ দিতে হবে চা-কফি পান করা। রোজা অবস্থায় এটি শরীরকে অনেক দুর্বল করে দেয়।

বাড়তি শক্তির উৎস খেজুর :

গর্ভবতী মায়ের অতিরিক্ত ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন রোজার সময়ে। আর ক্যালোরির সুন্দর একটি উৎস হলো খেজুর। মরুভূমির এই ফলটিকে বলা হয়ে থাকে ফলের রাজা। স্বাস্থ্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফলটি গর্ভবতী মায়েদের জন্য বেশ উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে। রোজার সময়ে এই ফলটি যত বেশি খাওয়া যাবে শরীর তত সুস্থ থাকবে। গর্ভবতী নারীরা ইফতার এবং সেহেরিতে কয়েকটি খেজুর খেতে পারেন নিয়মিত।

ত্বক সুরক্ষিত রাখতে হবে :

গর্ভাবস্থায় নারীদের ত্বকে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসময় ত্বকে র‍্যাশ হতে পারে। হাত -পায়ে পানি চলে আসতে পারে। এসব অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। আর নিয়মিত গোসল করলে অনেক ত্বকের সমস্যা থেকে বেঁচে থাকা যাবে।

এতকিছুর পরও যদি দেখা যায় রোজা রাখা গর্ভবতীদের জন্য বেশ কষ্ট হয়ে যাচ্ছে তবে এ বিষয়ে ধর্মীয় বিধান মেনেই রোজা রাখা ছেড়ে দিতে পারবেন।

ওডি/এসএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড