নিশীতা মিতু
ছোটবেলায় যখন প্রশ্ন করা হয়, বড় হয়ে কী হতে চাও? আমরা উত্তর দেই ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার। কেউবা বলে বড় হয়ে আমি ছবি আঁকব, কেউ বলে বিমান চালাব। বড় হতে হতে সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবতার স্পর্শে বদলে যায়। গুটিকয়েকজন অবশ্য নিজেদের ছোট্ট বেলার স্বপ্নকে আঁকড়েই বড় হন।
একজন নারী জ্যোতি। পুরো নাম শামসুন নাহার জ্যোতি। ছোট থেকে বড় হতে হতে গায়িকা, চাকুরীজীবী, ব্যাংকার সব পেশাতেই উঁকি দিয়েছেন। এই তালিকাতেই নতুন করে যুক্ত হয়েছে অনলাইন ব্যবসার নাম। বর্তমানে এমবিএ করছেন জ্যোতি। সেসঙ্গে দেড় বছর ধরে যুক্ত আছেন অনলাইন ব্যবসার সঙ্গে। নারীদের গয়নার অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘বিভব’ সামলাচ্ছেন। উদ্যোক্তা এই নারীর সঙ্গে আড্ডা হয় তার ব্যবসায়ী জীবনে পথ চলা নিয়ে।
জ্যোতির বাবা ব্যবসা করতেন। ছোটবেলা থেকে ভাবতেন বাবার মতো তিনিও ব্যবসা করবেন। কিন্তু ব্যবসা করতে তো পুঁজি লাগে। সেটা কে দিবে? লস হলেই বা কী করবে?— এসব ভেবেই আর আগাননি তখন। জ্যোতি বলেন, ‘চাকরি বাজারের যে ভয়াবহ অবস্থা তা দেখে মনে হলো এত পড়াশোনা, বিসিএস, অফিসে বসের ঝাড়ি, হেনস্থা, প্রতিদিন সব ফেলে অফিসে বসে থাকা সম্ভব না।’
নিজের ভাবনার সঙ্গে মিলে গেল কাছের মানুষের ভাবনাও। ব্যস, প্রিয়জনদের পূর্ণ ভরসা পেয়ে হুট করেই নেমে পড়লেন ব্যবসার মাঠে। মাত্র ২ হাজার টাকা হাতে নিয়ে শুরু করেছিলেন পথ চলা। ছোটখাটো কিছু গয়না কিনেছিলেন সেই টাকা দিয়ে। বাসার মানুষ আর ভার্সিটিতে বিক্রি করে সূচনা হয় কাজের। এরপর সেই টাকা খাটিয়ে আর কিছু জমানো টাকা পুঁজি করে শুরু করেন অনলাইন ব্যবসার যাত্রা।
অন্য আট দশটি অনলাইন প্রতিষ্ঠান থেকে ‘বিভব’ নামটা বেশ কিছুটা ভিন্ন মনে হলো। আর তাই জানতে চাইলাম নামকরণের গল্প। জ্যোতি বললেন, ‘কেবল আপনি নয়, বিভব নিয়ে যখনই কথা বলি, সবার খুব সাধারণ প্রশ্ন থাকে এই নামের মানে কী? কোথায় পেলেন এই নাম? এই প্রশ্ন শুনে আমি হাসি। আসলেই নাম খুঁজে পেতে সময় লাগেই। আমি চেয়েছিলাম প্রতিষ্ঠানের নাম এমন কিছু হোক যার অর্থ থাকে। বিভব অর্থ ধন বা ঐশ্বর্য। আর নারীদের কাছে তাদের গয়না অনেকটা অমূল্য কিছুই। ডিকশনারি ঘেঁটে তাই এই নাম রাখলাম।
বিভবের কিছু গয়না
অল্প কদিনের মাঝেই ক্রেতাদের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠে ‘বিভব’। এখানে পাবেন, বিভিন্ন রকম কানের দুল, আংটি, হার, চুড়ি, ইন্ডিয়ান, চায়না দেশীয় প্রডাক্ট। জ্যোতি বলেন, বিভবের প্রতি সবার আস্থা রয়েছে। এখানে যা পাবেন ভালো পণ্যই পাবেন।
ভালো লাগে যখন কোনো ক্রেতা পণ্যের প্রশংসা করেন, আমার সংগ্রহের প্রশংসা করে। খারাপ অভিজ্ঞতা খুব কম। তবুও মাঝে মাঝে কিছু ফেইক কাস্টমার পাই, যারা প্রোডাক্ট অর্ডার করে ঘুরাতে থাকে, প্রোডাক্ট নষ্ট করে রিটার্ন করে। তবে সেসব মানুষের সংখ্যা একেবারের হাতে গোণা।
ব্যবসা করতে এসে বড় বোন, ছোট বোন পেয়েছি অনেকে। অনেকে বলেন আমাকে দেখে অনলাইন বিজনেসে আসছে, ব্যাপারটি আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।
আগামীতে হয়তো নিজের একটা ছোট্ট দোকান দেওয়ার চেষ্টা করব। ভাল লাগে যে নিজের টাকায় আব্বু আম্মুর জন্য আর কাছের মানুষদের জন্য করতে ভাবতে হয় না। সব মেয়েদেরই উচিত কিছু না কিছু করা।'
উদ্যোক্তা এই নারীর জন্য ‘দৈনিক অধিকার’ এর পক্ষ থেকে রইল শুভেচ্ছা।
বিভবের ফেসবুক পেজের লিংক- বিভব - BeevoB
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড