নিশীতা মিতু
কম কষ্টে হাতের নাগালে সব জিনিস পাওয়ার জন্য বর্তমানে প্রায় সবাই ছুটছেন অনলাইন কেনাকাটার দিকে। ক্রেতার চাহিদার ওপর নির্ভর করে ব্যবসায়ীরা শুরু করে নিত্য নতুন ব্যবসা। কেউ বিক্রি করছেন পোশাক, কেউবা গয়না। আবার কেউ কেউ অনলাইনের মাধ্যমেই বিক্রি করছেন ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিস।
তবে সবার থেকে একটু ভিন্ন পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন মাইশা আতিকা। ব্যবসা করার ভাবনাটা ছিল বেশ আগে থেকেই। তবে চেয়েছিলেন এমন কিছু নিয়ে ব্যবসা করতে যা অন্যদের থেকে কিছুটা হলেও আলাদা হয় আবার অন্যদেরও উপকারও করা হয়। পড়াশোনা ও প্রাইভেট চাকরি সামলানোর পাশাপাশি এই তরুণী নিজের অনলাইন ব্যবসা সামলাচ্ছেন। কিন্তু কী নিয়ে ব্যবসা করছেন তিনি? কীভাবেই বা এই পথ চলার শুরু? সেসব নিয়েই গল্প হয় তার সঙ্গে।
২০১৭ সাল থেকে ব্যবসা করছেন আতিকা। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ‘হামানদিস্তা’। সাধারণত কিছু গুঁড়ো করা কিংবা বাটার প্রয়োজনে আমরা হামানদিস্তা ব্যবহার করে থাকি। তার প্রতিষ্ঠানের নাম শুনে সেই কথাই মনে পড়ল। আতিকা জানালেন, তার পেজে রূপচর্চায় ব্যবহৃত ভেষজ পণ্যগুলো পাওয়া যায়।
ব্যবসায় আসার গল্প শুনতে চাই আতিকার কাছে। তিনি বলেন, ‘এইচএসসি পরীক্ষার পর থেকেই শখ ছিল একটা বিজনেস করব। খুব ছোট পরিসরে, অনলাইনে। কিন্তু পুঁজি, প্রোডাক্ট সব কিছু নিয়ে খুব কনফিউজড ছিলাম। কোন বা কী ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করব?
একদিন একটি বাটিতে মসুর বাটা আর দুধের মালাই নিয়ে একটা ফেইসপ্যাক বানিয়ে জোর করে আম্মুকে লাগিয়ে দেই। সেদিন হুট করে একটা ব্যাপার মাথায় আসে। আমার মায়ের মতই অনেক মেয়ে আর অনেক নারী আছেন যারা পরিবারের, বাড়ির ফার্নিচার কিংবা বাড়ির কোণায় রাখা ফ্রেমের যত্ন নিলেও নিজের যত্ন নিতে ভুলে যায়। আয়নায় নিজেকে দেখার সময় তাদের হয়ে ওঠে না।’
এই ভাবনা থেকেই আতিকা ঠিক করলেন এ বিষয় নিয়ে কাজ করবেন। কর্মজীবী নারীদের জন্য রূপচর্চা ও চুলের যত্নে ব্যবহার উপযোগী পণ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করলেন তিনি। তবে তরল পণ্য নয়, হামানদিস্তার বেশিরভাগ পণ্যই শুকনো থাকে। শুকনো গুঁড়োকে পানির সাথে মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে হয়।
'হামানদিস্তা'র কিছু পণ্য
বেশ যত্ন সহকারে পণ্যগুলো তৈরি করেন আতিকা। প্রতিটি পণ্য যেন অর্গানিক হয় এবং ত্বকের জন্য ক্ষতির কারণ না হয় সেটা নিশ্চিত করেন। সাধারণত তিনি এমন পণ্যগুলো রাখেন যেগুলোর উপকারিতা সবারই জানা। এই যেমন মসুর ডাল, নিম পাতা, আমলকি ইত্যাদি উপকারী উপাদানের গুঁড়ো দিয়েই তৈরি করা হয় পণ্যগুলো।
ব্যবসা শুরুর ৩ দিনের মধ্যেই পেজের নাম ও পণ্যগুলো সবাই ভালোভাবে গ্রহণ করতে শুরু করে। শুরুতে পুঁজি কিংবা ক্রেতা কম থাকলেও বর্তমানে সব বেড়েছে। নিজের প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্রেডলাইসেন্স, নিবন্ধিত লোগোও করিয়েছেন আতিকা।
নিজের ভালো লাগার অনুভূতি ব্যক্ত করে আতিকা বলেন, ‘কর্মব্যস্ত নারীরা হামানদিস্তা থেকে নিজেদের প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে সহজেই নিজের যত্ন নিতে পারছেন। এই ব্যাপারটি আমার বেশ ভালো লাগে। সবার সাহায্য করতে পারাটা বেশ আনন্দের।’
আতিকারা চার বোন। বাবা যেন কখনো ছেলে সন্তানের অভাব বোধ না করেন তার জন্যই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করছেন নিজেরা। আতিকা মনে করেন, ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। নারী আর পুরুষ কেবল দুটি বিশেষণ।
হামানদিস্তার ফেসবুক পেজের লিঙ্ক- HamaanDista – হামানদিস্তা
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড