নিশীতা মিতু
ছোটবেলা থেকে আঁকিবুঁকির প্রতি ঝোঁক ছিল রুপার। কিন্তু পরিবারের সম্মতি না থাকায় সেদিকে আগানো হয়নি। ছবি আঁকার ব্যাপারে ইসলামের বিভিন্ন বিধিনিষেধ থাকার কারণে একসময় আঁকাআঁকি ছেড়েই দেন বলা চলে। তবে এখন নিয়মিত আঁকছেন তিনি। রং আর তুলি দিয়ে ক্যানভাসের গায়ে ফুটিয়ে তুলছেন কুরআনের বাণী, যাকে আমরা ক্যালিগ্রাফি বলে থাকি আরকি।
কীভাবে ক্যালিগ্রাফি জগতে এসেছেন তা নিয়ে কিছু সময় কথা হয় শারমিন আক্তার রুপার সঙ্গে। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে অনার্স করেছেন এই নারী। ২০১৫ সাল থেকে যুক্ত আছেন ক্যালিগ্রাফির সঙ্গে। আরবি, ইংরেজি, বাংলা ক্যালিগ্রাফি আর ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং করছেন নিয়মিত। তবে সবচেয়ে বেশি করা হয় আরবি ক্যালিগ্রাফি।
রুপা বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আঁকাআঁকিতে প্রবল ঝোঁক ছিল। ইচ্ছে ছিল চারুকলায় ভর্তি হওয়ার। কিন্তু পরিবারের সম্মতি না থাকায় তা আর হয়ে ওঠেনি। আল্লাহর অশেষ রহমাতে ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক খ্যাতিপ্রাপ্ত ক্যালিগ্রাফার শ্রদ্ধেয় মাহবুব মূর্শিদ স্যার এর কিছু ক্যালিগ্রাফি দেখে আকাঁআকির ইচ্ছেটা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
উনার আরবি ক্যালিগ্রাফিগুলো আমাকে এতই অনুপ্রাণিত করে যে আমি অনেক ভেবে আশ্বস্ত হই যে এখানে ধর্মের নিষেধাজ্ঞা তো একদমই নেই বরং আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে সহজে পৌঁছে দেওয়ারও একটা সুযোগ আছে।’
রং তুলির প্রতি নিজের ভালোবাসা থেকেই ক্যালিগ্রাফি জগতে রুপার আগমন। নিজের কাজগুলোর মাধ্যমে যখন আল্লাহ্র বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দেন, তখন মানসিক প্রশান্তি পান তিনি।
চলার পথে কোনো বাধা এসেছিল কি না জানতে চাই তার কাছে। রুপা জানান, কোনো প্রকার বাধা আসেনি তার কাজে। বরং কাছের মানুষগুলো সাপোর্ট দিয়ে গেছে এবং যাচ্ছে।
নিজের কাজের মাধ্যমে মানুষের যে ভালোবাসা আর সম্মান পান, তা বেশ উপভোগ করেন রুপা। ভালোলাগার তালিকায় আছে দেশের বাইরে ক্যালিগ্রাফি পাঠানোর মতো কিছু অনুভূতি।
সম্প্রতি জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত "তুর্কি-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্যালিগ্রাফি প্রতিযোগিতা ২০১৭" তে বাংলাদেশের সেরা ৩০ জন ক্যালিগ্রাফার এর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছিলেন রুপা। অংশ নিয়েছেন ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় জাদুঘরে অনুষ্ঠিত ১০ম জাতীয় ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীতেও।
আমাদের দেশের মানুষ কি ক্যালিগ্রাফিকে সঠিক মূল্যায়ন করে? জানতে চাইলে রুপা বলেন, ‘সত্যি বলতে আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ ক্যালিগ্রাফি বিশেষ করে আরবি ক্যালিগ্রাফির সঠিক মূল্যায়ন করেন না। হয়ত আমরাই এখনও তাদের সামনে এই শিল্পের মাহাত্ম্যটা সেভাবে তুলে ধরতে পারিনি।
বলতে খুব কষ্ট হয় যে, দৃশ্য বা প্রাণীর ছবি খুব সহজেই লাখ লাখ টাকায় বিক্রি করা যায়। কিন্তু আরবি ক্যালিগ্রাফির দাম ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা শুনলেও অনেকে অবাক হয়ে যায়।’
নিজের কাজগুলোকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চান রুপা। একদিন মানুষ ক্যালিগ্রাফির সঠিক মূল্যায়ন করবে- এমনটা আশা করেন তিনি।
রুপার করা ক্যালিগ্রাফি পেজের ফেসবুক লিঙ্ক : Haarf
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড