• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কনিকার ‘ত্রিনয়নী’

  নিশীতা মিতু

২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:১৪
ত্রিনয়নী
ত্রিনয়নীর কর্ণধার কনিকা ভট্টাচার্য

নরসিংদী জেলার মেয়ে কনিকা ভট্টাচার্য। বর্তমানে স্বামী আর দুই সন্তানকে নিয়ে বাস করছেন ঢাকায়। সংসার সামলানোর পাশাপাশি করছেন ব্যবসা। পোশাক ও গয়নার অনলাইন প্রতিষ্ঠান ‘ত্রিনয়নী’র কর্ণধার তিনি। উদ্যোক্তা এই নারীর সঙ্গে আড্ডা হয় ‘দৈনিক অধিকার’ এর-

বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা আর ঘরের কাজে মাকে সাহায্য করে শৈশব কেটেছে কনিকার। শখ ছিল সেলাইয়ের মাধ্যমে নানা নকশা করা। হাতের কাজের প্রতি প্রচণ্ড আকর্ষণ ছিল তার। পাড়ার মেয়েরা কোনো নতুন নকশা করলে দ্রুত সেটি রপ্ত করে ফেলার চেষ্টা করতেন।

অনলাইন ব্যবসায় কীভাবে আসলেন জানতে চাই কনিকার কাছে। তিনি বলেন, বিবিএ শেষ করে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানিতে চাকরিতে ঢুকি। এরপর এমবিএ, পড়াশোনা, সংসার-সন্তান, চাকরি সবকিছু নিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলাম। সময়ের সঙ্গে পেরে উঠতে পারছিলাম না। শেষে বাধ্য হয়ে চাকরি ছেড়ে দেই। এর কিছুদিন পর আমার দ্বিতীয় সন্তান আসে পৃথিবীতে‌।‌ তখন আরও বেশি কষ্টকর হয়ে যায় নতুন করে চাকরি শুরু করা।‌

চাকরিতে যে সময় দেওয়ার প্রয়োজন সেই সময় ছোট বাচ্চাদের সামলে দেওয়া কষ্টকর হবে ভেবে দিন পার করি। কিন্তু কিছু না করতে পারার যে দুঃখ তা আমাকে তাড়া করে বেড়াত। তখন সিদ্ধান্ত নিলাম ‌কিছু একটা করতে হবে। সেই কিছু একটা কী খুঁজে বেড়াতাম।‌ পরে সিদ্ধান্ত নিলাম আমার যাতে দক্ষতা আছে তা নিয়েই কাজ করবো। তখন অনলাইন ব্যবসার চিন্তা করি আর সেই অনুযায়ী কাজ শুরু করি।

২০১৯ সালে যাত্রা শুরু করে ত্রিনয়নী। হ্যান্ড পেইন্ট শাড়ি, ব্লক প্রিন্ট শাড়ি, হাতে তৈরি গয়না, বিছানার চাদর, পর্দা ইত্যাদি দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করেন কনিকা। ক্রেতা যেন নিজের পছন্দের সেরা পণ্যটি পান তা নিশ্চিতে প্রাধান্য দেন কাস্টোমাইজ কাজকে।

ত্রিনয়নীর কিছু পণ্য

কনিকা বলেন, ক্রেতার পছন্দ অনুসারে কাজ করে দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এছাড়াও আমি যেহেতু শাড়ি, গয়না, বিছানার চাদর, শাল ইত্যাদি নানান পণ্য নিয়ে কাজ করি তাই ক্রেতা এক জায়গাতেই প্রয়োজনীয় অনেক ধরনের পণ্য পেয়ে থাকেন একসঙ্গে। এতে ক্রেতার সময়ও বাঁচে আবার ডেলিভারি চার্জও কমে আসে।

ত্রিনয়নীর যাত্রা শুরু করার কিছুদিনের মধ্যে করোনার তাণ্ডব শুরু হয়। তবে মহামারিতে সবকিছু থমকে গেলেও সচল থেকেছেন কনিকা। ক্রেতাকে প্রয়োজনীয় পণ্যটি ঘরে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে গেছেন সবসময়। বাধার সম্মুখীন হলেও করে গেছেন কাজ।

ব্যবসার ক্ষেত্রে ক্রেতার সঙ্গে সমন্বয়কে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন কনিকা। তিনি বলেন, আমি সবসময় চেষ্টা করি ক্রেতার চাহিদা অনুসারে পণ্যের যোগান দিতে। তাই কাস্টমাইজ প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। হয়তো এই জন্যই আমার রিপিট ক্রেতা বেশি।

ব্যবসাক্ষেত্রে পরিবারের পুরো উৎসাহ পেয়েছেন কনিকা। স্বামী, সন্তানসহ পরিবারের সবাই সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। মাঝেমধ্যে শিশু সন্তানরাও মা কে কাজে সাহায্য করতে চেষ্টা করেন।

কখনো থেমে যাওয়ার কথা চিন্তা করেননি কনিকা। কাজ করে সামনে এগিয়ে যাবেন- এমনটাই ভাবেন সবসময়। তার মতে, উদ্যোক্তা জীবনে অনেক বাধা বিপত্তি আসতেই পারে। সব উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে, তবে সাফল্যের দেখা মিলবে।

ত্রিনয়নীকে নিয়ে কী স্বপ্ন দেখেন, জানতে চাই কনিকার কাছে। তিনি বলেন, প্রত্যেক উদ্যোক্তার জীবনে কিছু স্বপ্ন থাকে নিজের উদ্যোগকে নিয়ে। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। আমি স্বপ্ন দেখি ত্রিনয়নী বাংলাদেশের একটা ভালো মানের একটা ব্র্যান্ড হবে। ত্রিনয়নীর পণ্য দেশের সীমানা পেরিয়েছে বহুবার, এর পরিধি বিস্তৃত হবে, আমাদের দেশীয় পণ্যের আরও একটু বিস্তার ঘটবে ত্রিনয়নীর হাত ধরে।

ওডি/নিমি

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড