নাবিলা বুশরা
ছোটবেলাগুলো খুব আনন্দের হয়। রঙিন জামা-জুতো পরে মাঠ জুড়ে ছুটে বেড়ানো, এখানে সেখানে সেই জামা গায়েই হুট করে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাওয়া- খুব আনন্দের কিছু সময়, খুব ভালো লাগার কিছু সময়। সেই রঙিন জামার ভেতর খুব সুন্দর কিছু জামা আমরা কমবেশি সবাই পড়েছি। সেটা হচ্ছে কুশিকাটার জামা। নানা রঙের সুতো দিয়ে বাহারি নকশায় জামা বাচ্চাদের গায়ে জড়ানো দেখতেও দারুণ লাগে।
মাঝে এমন কুশি কাটার জামার প্রচলন কিছুটা কমে গেলেও নতুন করে আবার ফিরে এসেছে এই কাজগুলো। তবে এখন আর এই কুশি কাটা শুধু জামার ভেতরেই সীমাবদ্ধ নেই। এখন এ দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানান কিছু। যেমন- টেবিল ম্যাট, বাচ্চাদের জুতো, বাহারি রঙের টুপি, নানা ধরনের শো-পিস।
এমনই বাহারি কাজ করা একজন হচ্ছেন জান্নাতুল ফেরদৌস তন্বী। ছোটবেলা থেকেই কাজ ভালোবাসা এ মানুষটা বড় একটা স্বপ্নের হাঁটা পথে ছোট্ট করেই শখের একটা পেইজ খুলেছেন। পেইজের নাম ‘হ্যান্ডিক্রাফট শপ বাই তন্বী’।
সদ্য মা হওয়া তন্বী লেখাপড়া করেছেন একাউন্টিং এ। সম্পন্ন করেছেন অনার্স, মাস্টার্স।
নিজের কাজ নিয়ে তন্বী জানান, ‘বরাবরই আমার খুব শখ ছিল হাতের কাজ করার। প্রথমে পুঁথির কাজ করতাম। পুঁথি দিয়ে নানা ধরনের ফল,ফুল শো -পিস এগুলো বানাতাম, জামায় হাতের কাজ করতাম,ওয়ালম্যাট বানাতাম। এরপর ব্লক বাটিকের কাজও শিখেছি ২০০৫ সালে।
তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম নিজস্ব একটা দোকানের। এসবের মাঝেই হঠাৎ কুশিকাটার কাজটার প্রতি ঝোঁক চলে আসল। ছোটবেলায় কুশিকাটার মাজুনি বানিয়েছি, টেবিল ম্যাট বানিয়েছি। কিন্তু এই কুশিকাটা দিয়ে যে এতকিছু বানানো যায় তখন জানতাম না। কাজ শেখার পর অবাক হয়ে দেখলাম কুশিকাটা দিয়ে নানা ধরনের গয়না, বাচ্চাদের জামা, জুতা, টুপি, শো-পিস, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর রাগ, বড়দের জামা জুতো সবই বানানো যায়। আর নতুন নতুন আইডিয়া দিয়ে জিনিস বানানোর পর খেয়াল করলাম গ্রাহকরা বেশ ভালোভাবেই এটাকে গ্রহণ করেছে।
তখনই ভাবনায় এলো তাহলে শুধু অফলাইনে কেন, অনলাইনে চাইলেও তো আমি শুরু করতে পারি গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি। সেই ভাবনা থেকেই এই পেইজ খোলা।’
কেমন সাড়া মিলছে- এ প্রশ্নের জবাবে তন্বী জানান, ‘অনলাইনে বিশ্বস্ততা ব্যাপারটি খুব জরুরি। একজন গ্রাহক না দেখেই আমার কাছ থেকে পণ্য নিচ্ছেন। তাই তাদের মাঝেও কিছুটা দ্বিধা কাজ করে। গ্রাহকের কথা মাথায় রেখেই শুরু থেকেই আমি আমার কাজকে নিখুঁত করার চেষ্টা করেছি। এখনও করে যাচ্ছি। আর তাই সাড়াও মিলছে দারুণ।’
এই অনলাইন শপ নিয়ে ভবিষ্যৎ ভাবনা কী সেটাও জানালেন তন্বী। এই অনলাইন কাজের মাধ্যমে তিনি ছড়াতে চান সবার মাঝে। একদিন তার এই অনলাইন শপটিই অনেক বড় হবে, থাকবে নিজস্ব একটি কারখানা। আর সেই কারখানাটি হবে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্য একটি সুবিশাল কর্মক্ষেত্র।
তন্বীর এই স্বপ্ন পূরণ হোক। তার পথচলা আরও সুগম হোক। শুভকামনা তার জন্য।
পেইজের লিংক: https://www.facebook.com/tonny.nakhlu/
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড