• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

স্বপ্নকে বাস্তব করে রেস্টুরেন্ট পরিচালনা করা এক নারী

  লাইফস্টাইল ডেস্ক

০৪ মার্চ ২০২০, ১২:৪৫
নারী উদ্যোক্তা
বিয়ে বাড়ি রেস্টুরেন্টের কর্ণধার আতিয়া রহমান পুষ্প (ছবি- সম্পাদিত)

আতিয়া রহমান পুষ্প। জন্ম ১৯৮৯ সালে। ময়মনসিংহে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় অনার্স ও মাস্টার্স শেষ করেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নেন্স স্টাডিজে মাস্টার্স করছেন। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন বড় কিছু হবার কিংবা নিজে কিছু করার। ছোটবেলার সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে লড়ে গেছেন নিজেই।

বর্তমানে পুষ্প ঢাকা শহরের নাম করা একটি রেস্টুরেন্ট ‘বিয়ে বাড়ির’ কর্ণধার। তবে এর পেছনে রয়েছে অনেক গল্প, অনেক রূঢ় বাস্তবতা। আশা, স্বপ্ন আর নানা প্রতিবন্ধকতায় তিনি পাড়ি দিয়েছেন অনেক পথ।

পড়াশুনা শেষ করার আগেই বিয়ে হয় পুষ্পের। পরে ঘর-সংসার আর সন্তান মানুষ করতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু উদ্যোক্তা হবার নেশাকে কখনোই পেছনে ফেলতে পারেননি তিনি। স্বপ্ন বাস্তব করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ধানমন্ডিতে শুরু করেন বিয়ে বাড়ি রেস্টুরেন্টের যাত্রা। চেয়েছিলেন আর আট দশটা রেস্টুরেন্টের থেকে আলাদাভাবে সাজাবেন তার প্রতিষ্ঠানটি।

বাসায় যারা বিয়ের ঝামেলা করতে চান না, কিংবা যারা আগে বিয়ে করে কখনো বর কনের স্বাদ পাননি তাদের জন্যই এই আয়োজন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার। তবে সবকিছুর উপরে তিনি চেয়েছেন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোকে তুলে ধরতে। ঐতিহ্যবাহী খাবার এখন প্রায় অনেকটাই হারিয়ে যাবার সংকটে। বর্তমানে তরুণ সমাজ বেশি আসক্ত বিদেশি খাবারের প্রতি। দেশীয় খাবারের চাহিদা যেন হারিয়েই যাচ্ছে। সেই জায়গা থেকেই যাত্রা বিয়ে বাড়ি রেস্টুরেন্টের।

প্রায় তিন বছর পার হয়েছে বিয়ে বাড়ি রেস্টুরেন্টের। সবদিক মিলিয়ে এখন ঢাকা শহরের প্রসিদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান বিয়ে বাড়ি। কারণটাও সোজা। যেখানে ছিল শ্রম, মেধা আর ভালোবাসা। তবে একজন নারী হিসেবে ছিল অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ। নানান মানুষের নানান কথা আর ভুল মন্তব্য ছিল প্রতিনিয়ত। কিন্তু সেসব পেছনে ফেলে পুষ্প এগিয়েছেন তার গতিতে। সামাজিকভাবে প্রথমে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পিছিয়ে পড়লেও, মনোবল ছিল অটুট।

নারী হিসেবে যখন তিনি উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তখন অনেকেই বলেছিল রেস্টুরেন্ট কেন? আরও তো অনেক কিছু আছে। যেমন ফ্যাশন, পার্লারসহ আরও অনেক কিছু। তবে ক্ষেত্র নির্বাচন করেই যে শুধু উদ্যোক্তা হতে হবে এমন ভুল ধারণা ভাঙতে চেয়েছিলেন এই তরুণ উদ্যোক্তা।

বর্তমানে পুষ্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন প্রায় ত্রিশ জনের। যারা খুব দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটিতে। পুরুষ-নারী কর্মী মিলে প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে। কর্মীদের দেওয়া হয় নানা সুযোগ। ক্লাস কিংবা পরীক্ষার জন্য শিথিল করা হয় কাজ।

সামাজিক কাজের দিক থেকেও সবসময় এগিয়ে এসেছেন এই নারী। পথ শিশুদের নিয়ে রেস্টুরেন্টে খাওয়ানো, বয়স্ক মানুষদের পাশে দাঁড়ানো কিংবা বৃদ্ধাশ্রমে পিতামাতাদের সঙ্গে সময় কাটানো আর তাদের পাশে দাঁড়ানোতে আত্মতৃপ্তি খুঁজে পান এই তরুণ উদ্যোক্তা। খুব বেশি কিছু না তবে অল্প হলেও চান এই মানুষদের পাশে দাঁড়াতে।

আরও পড়ুন : কালো বলে ক্লাসে বসা মানা, বাইরে দাঁড়িয়েই ডাক্তার!

আতিয়া রহমান পুষ্প স্বপ্ন দেখেন তার প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাবে ঠিক তার স্বপ্নের মতো করে। যেটি তিনি শুরুতেই দেখেছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন একজন নারী স্বপ্ন দেখতে চাইলে তা সম্ভব। তবে তার পেছনে দিতে হবে শ্রম, মেধা আর ভালোবাসা। চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে যে উপরের দিকে যেতে পারবে তিনিই পরবেন রাজমুকুট।

একজন নারী হিসেবে পুষ্প সবসময় চেয়েছেন দেশের জন্য কিছু করতে। আগামীতেও দেশের জন্য কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে যেতে চান এই নারী। তরুণ নারী ও উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে পুষ্প বলেন, ‘নিজেকে আগে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে তবেই দেশ ও জাতির জন্য কিছু করা যাবে। সৎ সাহস আর সৎ উদ্দেশ্য এই দুটোই একজন নারীর শক্তি। তবেই আগামীতে এগিয়ে যাবে নারীরা।’

ওডি/এনএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড