• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ক্যাকটাস খেয়েই বাঁচবে মানুষ

  সৈয়দ মিজান

২১ মে ২০১৯, ১৫:৪২
ক্যাকটাস
ভবিষ্যৎ পৃথিবীতে ক্যাকটাস একটি জনপ্রিয় খাবারে পরিণত হবে। (ছবি : বিবিসি)

শুধুমাত্র খাবারের কারণেই প্রতি বছর বিশ্বে কোটিরও বেশি মানুষ মারা যায়। নানা সময়ে গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। তবে ধীরে ধীরে পৃথিবীতে খাদ্যের পরিমাণ কমে আসবে একটা সময়। নতুন বিকল্প খাবারের সন্ধান শুরু করে দিয়েছেন এরই মধ্যে বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্বাস্থ্যবান থাকা এবং পৃথিবীর পরিবেশকেও ঠিক রাখা একসঙ্গে করাটা খুবই কঠিন কাজ।

নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভবিষ্যতে পৃথিবীবাসীদের খাবার হতে পারে শ্যাওলার মতো কিছু জলজ উদ্ভিদ, ক্যাকটাস আর কিছু শস্যদানা। এই গবেষণা জানাচ্ছে, এইসব খাবারগুলো হতে পারে ভবিষ্যতের সুপার ফুড। সুপার ফুড বলতে বোঝায় এমন খাবার যা একই সাথে স্বাস্থ্যকর এবং পৃথিবীর পরিবেশ এবং জীব বৈচিত্রেরও কোনো ক্ষতি করবে না। এই প্রতিবেদনে ৫০টি সুপার ফুডের তালিকা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে কয়েকটিকে বিজ্ঞানীরা আলাদা গুরুত্ব দিয়ে বর্ণনা করেছেন।

মোরিঙ্গা :

এই গাছটিকে ডাকা হয় জাদুর গাছ নামে। এটি এমন একটি গাছ যেটি খুব দ্রুত বাড়ে। একই সাথে এটি প্রচণ্ড খরা এবং মরুভূমিতেও টিকে থাকতে পারে অনায়াসে। এই গাছটির ওষুধি গুণও কম নয়। দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অনেক অঞ্চলেই এটি দিয়ে নানা রকম ভেষজ ওষুধ তৈরি করা হয়। এই গাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ এর উপস্থিতি রয়েছে। ক্যালসিয়াম এবং পটাসিয়ামের পরিমাণও রয়েছে এই গাছে প্রচুর। পাতা জাতীয় এই গাছটিকে স্যুপ বা কারি জাতীয় খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ভবিষ্যত পৃথিবীতে হয়তো এই গাছটিই হয়ে উঠবে প্রধান খাদ্য। বর্তমানে ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ায় এই গাছটি ব্যাপকহারে চাষ করা হচ্ছে।

মোরিঙ্গা

আগামী দিনের সুপার ফুড মোরিঙ্গা। (ছবি : বিবিসি)

ওয়াকামি :

ওয়াকামি এক ধরনের শৈবাল। প্রাচীনকাল থেকেই এটিকে খাবার হিসেবে খেয়ে আসছে জাপানিরা। সমুদ্রের তীরে এই শৈবালটিকে চাষও করা শুরু হয়েছে বেশ আগে থেকেই। জাপানে এর জন্মস্থান হলেও বর্তমানে ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ড এবং আর্জেন্টিনাতে এই শ্যাওলাটি চাষ করা হচ্ছে। এটি চাষের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। বিশেষ করে এটি সারা বছরই ফুল দিয়ে থাকে। এমনকি প্রয়োজন পড়ে না কীটনাশক এবং কোনোরকম সারেরও।

ওয়াকামি শ্যাওলাটি শুকিয়ে খেলে এর নোনতা স্বাদে মন ভরে যায়। এই শ্যাওলাটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন এবং ওমেগা থ্রি এর মতো উপকারী উপাদান। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যারা প্রাণিজ প্রোটিন এড়িয়ে চলেন ত্যাদের জন্য এই শ্যাওলাটি বেশ উপকারী। রোগ নিরাময়েও রয়েছে এটির বেশ ভূমিকা। বিশেষ করে এই শ্যাওলাটি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কার্যকর।

বামবারা

বামবারা আফ্রিকান অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় খাবার। (ছবি : বিবিসি )

ক্যাকটাস :

ক্যাকটাস কমবেশি সবাই চেনেন। ভবিষ্যতের পৃথিবীতে ফ্যাকাসে হয় না এমন জাতের ক্যাকটাসও থাকবে সুপার ফুডের তালিকায়। এই জাতের ক্যাকটাস মেক্সিকোতে বেশ জনপ্রিয় খাবার। এই ধরনের ক্যাকটাসের কাঁটাযুক্ত পাতা এবং ফল কাঁচা খাওয়ার উপযোগী। এছাড়া রান্না করে অথবা জ্যাম ও জেলি বানিয়ে খাওয়ার প্রচলনও আছে এই উদ্ভিদটিকে। মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপেও উৎপাদন হয় এই ক্যাকটাসের।

এই ধরনের ক্যাকটাসের কিছু বিশেষত্ব আছে। যেমন এটিতে টাইপ টু ডায়াবেটিস কমানোর উপাদান পাওয়া গেছে। এছাড়া শরীরে জমে থাকা বাড়তি চর্বি কমিয়ে ফেলতেও এর জুড়ি নেই। তবে এই ক্যাকটাস সবার পেটে সয় না। এটি খেয়ে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

ফোনিও :

প্রাচীনকাল থেকেই আফ্রিকা অঞ্চলে এই শস্যদানাটি বেশ জনপ্রিয়। এটির স্বাদ বাদামের মতো। বিশেষ করে মালির বামবারা গোত্রের লোকেদের কাছে এটি খুব জনপ্রিয় খাবার। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ৫ হাজার বছর আগেও এটি মিশরের দিকে চাষ করা হতো। মূলত মরুভূমিতে জন্মায় এই গাছটি। এই শস্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, জিঙ্ক এবং ম্যাগনেশিয়ামের উপস্থিতি।

ফোনিও

বাদামের মতো স্বাদ রয়েছে এই শস্য দানা ফোনিওতে। (ছবি : বিবিসি )

বামবারা :

কিছুটা কম স্বাদের এই খাবারটি মূলত মটরশুটি জাতীয়। এটি অনেকটা তৈলাক্ত চীনা বাদামের মতো খেতে। যে কোনো ধরনের মাটিতেই এটি উৎপাদন করা যায়। আফ্রিকাতে এই উদ্ভিদটি পাওয়া গেলেও বর্তমানে থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়ার অনেক জায়গাতেই এটি চাষ করা হচ্ছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন এটি একটি পরিপূর্ণ খাবার। এটি সিদ্ধ করে, ভেজে কিংবা পুড়িয়ে খাওয়া যায়। এমনকি অনেক জায়গায় এটি দিয়ে স্যুপও বানানো হয়। এতে রয়েছে প্রচুর অ্যামিনো অ্যাসিড যা রক্তে তৈরিতে সাহায্য করে। মানুষের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতেও এর ভূমিকা অপরিসীম।

সূত্র : বিবিসি

ওডি/এসএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড