• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অতিরিক্ত আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করবেন কীভাবে?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২৪ জুলাই ২০১৯, ০৮:২৪
আবেগ
ছবি : প্রতীকী

রেহনুমা (বয়স ৩০)। প্রতিদিন অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত থাকেন। সাথে থাকে বাসার বাড়তি কাজ আর ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা এগিয়ে দেওয়ার চিন্তা। তাই, সব মিলিয়ে মেজাজটা বেশ রুক্ষ হয়ে থাকে তার। আর এর সাথে যখন সন্তানদের চিৎকার বা হালকা দুষ্টুমি যোগ হয়, তখনই মেজাজটা পুরোপুরি খারাপ হয়ে যায় রেহনুমার। অনেক সময় বাচ্চাদের গায়ে হাতও তুলে ফেলেন তিনি। আর সাথে নিজের মানসিক চাপ তো আছেই।

কিন্তু কেন এমন হয়? সন্তানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে কষ্ট পান রেহনুমা নিজেও। মন খারাপ হয় তার। তাহলে এমনটা কেন করেন তিনি?

এমন মানসিক অবস্থাকেই মূলত অনিয়ন্ত্রিত আবেগ বলা হয়। এক্ষেত্রে, একজন মানুষের স্বাভাবিক চিন্তা করার ক্ষমতা লোপ পায় এবং পদ্ধতি বদলে যায়। অনেক বেশি নিজের ওপরে মানসিক চাপ নিয়ে ফেলেন মানুষ। অতিরিক্ত ভাবতে থাকেন। ফলে একটা সময় অস্বাভাবিক সব ব্যবহার করে ফেলেন তিনি। যেখানে হয়তো নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন তিনি, সেটাও আর করতে পারেন না।

একটু ভেবে দেখুন তো! কখনো কি এমন হয়েছে যে, খুব রেগে গিয়ে কোন কাজ করেছেন; কিংবা মনে হয়েছে যে এই রাগ বা কষ্ট কখনোই কমবে না। অথচ, একটু পরেই এই আবেগ অনেকটাই কমে এসেছে আর মনে হয়েছে যে এতটা রাগ দেখানো বা কোনো কাজ করা ঠিক হয়নি?

এমনটা আমাদের সবার সাথেই হয়ে থাকে কখনো কখনো। কিন্তু যদি এটি আপনার সাথে বারবার ঘটে থাকে তাহলে একটু সময় দিন নিজেকে। একটু ভাবুন। কী হচ্ছে আপনার সাথে? আপনি মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছেন না তো? নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে কি কষ্ট হচ্ছে আপনার? আপনি কি অতিরিক্ত ভাবছেন সবকিছু নিয়ে?

যদি ব্যাপারটি সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হয়ে থাকেন, তাহলে ছোট্ট কিছু কাজ আপনাকে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারবে। সেগুলো হলো-

১। অন্যকে বোঝা-

খুব রাগ হচ্ছে, খুব কষ্ট হচ্ছে? এই আবেগের পেছনের কারণটা নিয়ে ভেবে দেখেছেন তো? সাধারণত, অন্য কারও কোনো কাজের ফলাফল হিসাবে আপনার রাগ বা কষ্ট হচ্ছে এমনটা মনে হলেও আরেকটি খুব জোরদার কারণ থাকতে পারে পুরো ব্যাপারটির পেছনে। আর সেটি হলো অন্যকে নিয়ে কম ভাবা এবং নিজেকে নিয়েই বেশি ভাবতে থাকা।

আপনি যদি অন্য যে মানুষটি আছেন, তার জায়গা থেকে ভেবে দেখেন তাহলে হয়তো নিজের কোনো কিছু পাওয়া বা না পাওয়া নিয়ে অনেক বেশি আবেগ খেলা করবে না আপনার মধ্যে। ফলে, অতিরিক্ত আবেগ জন্মই নেবে না। নিজেকে খুব সহজেই শান্ত করতে পারবেন আপনি।

রেহনুমার ক্ষেত্রে, প্রাথমিকভাবে তিনি এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিলেন। তিনি নিজের সন্তানের সাথে খারাপ ব্যবহার করার আগে সন্তানের জায়গা থেকে নিজেকে ভাবার চেষ্টা করেছিলেন। সারাদিন স্কুলে ক্লাস করার পর মাকে কাছে পেয়ে অনেক বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়ে রেহনুমার দুই ছেলেমেয়ে। আর তাদের যে মাকে ঘিরে খেলাধুলো, তার কারণও এটাই। ব্যাপারটি এভাবে ভাবার পর সন্তানদের সাথে সহজ হতে রেহনুমার আর খুব বেশি সময় লাগেনি।

২। নিজেকে ও অপর পক্ষকে সংযুক্ত করা-

সন্তানদের নিয়ে এভাবে ভাবার পর রেহনুমা নিজেকে নিয়েও ভেবেছেন। কেন তিনি এমন অতিরিক্ত আবেগী হয়ে উঠছেন তার পেছনে থাকা কারণগুলো সম্পর্কে চিন্তা করেছেন। একইসাথে, সন্তানদের খারাপ লাগার সাথে নিজের খারাপ লাগাকে মিশিয়ে নিয়েছেন তিনি। এতে করে নিজের প্রতি এবং অন্যদের প্রতি আরও বেশি সহানুভূতিশীল হওয়া সহজ হয়ে গিয়েছে তার জন্য।

তাই, যদি কোনো কারণে হুট করে রাগ বা অন্য কোনো আবেগ চলে আসে আপনার মধ্যে এবং সেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে একটু ঠান্ডা হয়ে বসুন। আবেগের কারণ থেকে দূরে সরে অন্য কিছুতে মন দিন। এতে করে কিছুক্ষণ পরেই আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এবং আপনি ভালো বোধ করবেন।

সূত্র- ওয়েবএমডি।

ওডি/এনএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড