সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
সাধারণত, বিয়ে হওয়া মানেই একই বিছানায় দুজন মানুষের ঘুমানো বোঝায়। সঙ্গীর সাথে বিছানা ভাগ করে নিতে অবশ্য চিকিৎসকেরাও উৎসাহ দিয়ে থাকেন। এতে করে সম্পর্ক ভালো হয়, ভালোবাসা বাড়ে। মানসিক সম্পর্কও আরও দৃঢ় হয়। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে, সব সম্পর্কে কিন্তু ব্যাপারটি একইরকমভাবে ঘটে না। যেহেতু সঙ্গীর ঘুমের অভ্যাস আপনাকে প্রভাবিত করতে পারে, তাই এক্ষেত্রে সমস্যাও তৈরি হয়।
অনেকসময়, সঙ্গীর ভিন্নরকম ঘুমের অভ্যাসের কারণে অন্যজন ঘুমাতে পারেন না। আবার অনেকে একা ঘুমোতে পছন্দ করেন। এই সবকিছু মিলেই অনেকে সম্পর্কে স্লিপ ডিভোর্সকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক স্লিপ ডিভোর্সের পেছনে থাকা আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণকে।
সঙ্গীর ঘুমের অভ্যাস-
অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, সঙ্গীদের মধ্যে একজন একটু রাত করে কাজ করেন বা বাড়ি ফেরেন। ফলে, অন্যজনের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সময় এই ভিন্ন ভিন্ন সূচী মট মিলিয়ে একজন মানুষের কাজের ওপরে বড় রকম প্রভাব রাখে। এই যেমন- আপনি যদি রাত ১১ টায় ঘুমিয়ে যান এবং সকাল ৭ টায় উঠে কাজ করতে বেরিয়ে পড়েন, আর অন্যদিকে আপনার সঙ্গী যদি রাত ৩ টায় ঘুমিয়ে যান এবং পরদিন বেলা ১২ টা পর্যন্ত ঘুমান, তাহলে আপনাদের একসাথে এক বিছানায় ঘুমানো দুজনকেই ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। এক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন বিছানায় ঘুমানোর দরকার পড়ে।
শারীরিক কোনো সমস্যা-
ধরুন, আপনার নাক ডাকার অভ্যাস আছে। এই শারীরিক সমস্যার জন্য হয়তো আপনার সঙ্গী রাতে ঘুমাতে পারেন না। এক্ষেত্রে যে শুধু আপনার সঙ্গীর শারীরিক সমস্যা হবে তা নয়। একইসাথে, আপনাদের মানসিক সম্পর্কেরও অবনতি হতে পারে। কারণ, দিনের পর দিন আপনার সঙ্গী ঘুমাতে না পারলে এবং এর কারণ আপনি হলে সেক্ষেত্রে তার বিরক্তির কারণ তো আপনি হবেনই।
সঙ্গীর অসুস্থতা-
আপনার সঙ্গীর ঘুমের অভ্যাসের কারণে আপনি না ঘুমাতে পারলে একটা সময় আপনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। সেক্ষেত্রে, আপনাদের উচিত হবে চিকিৎসকের সাথে কথা বলা। নিজেদের যে সমস্যা আছে সেটাকে দূর করার চেষ্টা করা। এতে করে আপনি যেমন ঘুম না হওয়ার কারণে তৈরি হওয়া শারীরিক সমস্যা থেকে দূরে থাকতে পারবেন, তেমনি আপনার সঙ্গীও তার ঘুম না আসার কারণ হিসেবে কাজ করা শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে।
নিরাপত্তার জন্য ঘুম-
এমন কিন্তু নয় যে, আপনি সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে না ঘুমালে আপনার শুধু শারীরিক সমস্যা হবে। একইসাথে, এটি কিন্তু আপনার নিরাপত্তায়ও প্রভাব ফেলবে। ঘুম না হলে গাড়ি চালানো, চলাফেরা করা, অফিসে কাজ করা- সব রকমের কার্যক্রমেই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে করে চাকুরিক্ষেত্রে সমস্যা হওয়া থেকে শুরু করে বড় রকমের দূর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার মতো ব্যাপারও তৈরি হতে পারে। সঠিক পরিমাণে ঘুম না হলে আপনার মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করতে পারবে না। ফলে, এমন নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকেই যাবে।
একসাথে না ঘুমানো মানেই নিজেদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়া? ব্যাপারটি কিন্তু একেবারেই এমন নয়। আপনি একসাথে না ঘুমিয়েও আপনার সঙ্গীর সাথে সব রকমের সম্পর্ক খুব ভালোভাবে চালিয়ে নিতে পারেন। তবে এর জন্য প্রয়োজন হবে খুব ভালো সম্পর্কের।
আপনার যদি সঙ্গীর সাথে খুব ভালো বোঝাপড়া থাকে তাহলে এমন ছোটখাটো কিছু পরিবর্তনে আপনি যে শুধু শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো থাকবেন তাই নয়, বরং আগের চাইতে অনেক বেশি ভালো পর্যায়ে থাকবেন।
তাই, সমস্যা যেটাই হোক, ঘুমের এই পরিবর্তন নিয়ে সঙ্গীর সাথে কথা বলুন। সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা প্রয়োজন। আর সেই সুস্থতার জন্যই দরকার পরিমাণ মতো ঘুম। নির্দিষ্ট পরিমাণ ঘুমান। নিজে সুস্থ রাখুন, সম্পর্ককেও সুস্থ রাখুন।
সূত্র- ওয়েবএমডি
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড