• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

যৌন সমস্যা ছাড়াও ইয়াবা সেবনে যেসব ক্ষতি

  লাইফস্টাইল ডেস্ক

১১ জুলাই ২০১৯, ২১:৩৫
ইয়াবা
ছবি : সংগৃহীত

প্রায় প্রতিদিনই খবর বেরোয় ইয়াবাসহ কেউ না কেউ গ্রেফতার হচ্ছে। এত মানুষ গ্রেফতার হওয়ার পরও থেমে নেই এই মরণ নেশা কেনাবেচার। সেই সাথে দিনকে দিন বেড়েই চলেছে ইয়াবাসেবীদের সংখ্যা। এর কারণ হিসেবে বলা যায় ইয়াবা খেলে কী ক্ষতি হয় সে সম্পর্কে সচেতনতার অভাব। এটি এমন একটি নেশা যা একবার সেবন করলে আর অন্য কিছুই ভালো লাগে না মানুষের। কিন্তু ধীরে ধীরে যা ক্ষতি করার করে দেয় এই প্রাণঘাতী মাদক। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ৫৮ ভাগ মাদকসেবীই ইয়াবা সেবন করে। আর মোট মাদকাসক্তের ২৮ শতাংশ আসক্ত ফেনসিডিল এবং হেরোইনে। ইয়াবা সেবন করলে কী ধরনের শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা হতে পারে চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে।

শারীরিক সমস্যা

যৌন ক্ষমতা লোপ পায় :

ইয়াবা সেবন করার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করা। ইয়াবার মধ্যে যৌন উত্তেজক ক্ষমতা রয়েছে বলেই এর প্রতি মানুষের নিষিদ্ধ আকর্ষণ কাজ করে। এটির আসক্তি মানুষকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরে এর থেকে বের হয়ে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রথম দিকে কম মাত্রায় ইয়াবা সেবন করলেও ধীরে ধীরে কম মাত্রা আর কাজ করে না। ফলে ডোজের পরিমাণ বাড়াতে হয়। ফলে শুরু হতে থাকে শারীরিক নানা সমস্যা। এক সময় দেখা যায় যৌন ক্ষমতা কমতে কমতে একেবারে লোপ পেয়ে গেছে। সন্তান জন্মদানে অক্ষম করে তোলে এই প্রাণঘাতী মাদক।

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ :

ইয়াবাতে এমন কিছু ক্ষতিকর উপাদান রয়েছে যা একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মস্তিষ্ককে একেবারে অকেজো করে দিতে পারে। এরমধ্যে মেথামফেটামিন এবং ক্যাফেইন রয়েছে বেশি পরিমাণে। ক্যাফেইন ক্ষেত্রবিশেষে মস্তিষ্কের উপকার করলেও অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদানের সাথে মিশে এটিও মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। এটি সেবনের ফলে মস্তিষ্কের কিছু ছোট ছোট রক্তনালি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর এই ঘাতক মাদকটি দীর্ঘদিন সেবন করলে কম বয়সে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্যারালাইজড হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকগুণ।

কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয় :

ইয়াবা সেবন করলে শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হলো এটি আপনার কিডনিকে পুরোপুরি বিকল করে দিতে পারে। এই উত্তেজক মাদকটি গ্রহণ করলে শরীর বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আর এর প্রভাব পড়ে পরিপাকতন্ত্রে এবং কিডনিতে। শরীরের ভেতরের তাপমাত্রার হেরফেরের কারণে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াটা অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার।

ফুসফুসে সমস্যা :

ইয়াবা সেবনের ফলে ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে। বিশেষ করে ধোয়ার মাধ্যমে ইয়াবা সেবন করা হয় বিধায় ফুসফুসে ছিদ্র হয়ে যাবার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে। এছাড়া শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বুকধড়ফড় করার সমস্যারও সূত্রপাত হতে পারে ইয়াবা সেবনের মাধ্যমে।

ইয়াবা গ্রহণ করলে এই রোগগুলো ছাড়াও আরও কিছু রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মাদকসেবীদের রক্তচাপ বাড়া, মাথা ব্যথা, চোখে কম দেখা, স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া, ঘুমের সমস্যা, কর্মক্ষমতা হারানোর মতো সমস্যায় পড়ার জন্য ইয়াবার বেশ বড় ভূমিকা রয়েছে।

মানসিক সমস্যা

আত্মহত্যার প্রবণতা :

ইয়াবা সেবনের ফলে যে সমস্যাটি সবচেয়ে বেশি প্রকট হয়ে দেখা দেয় সেটি হলো আত্মহত্যার প্রবণতা। তুচ্ছ কোনো কারণে কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই আত্মহত্যা করার ইচ্ছে জাগে মনের ভেতর। অদ্ভুত একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায় ইয়াবা সেবনকারী। মনের মধ্যে বাসা বাঁধে হতাশা। আর তা থেকে হুট করে একদিন আত্মহত্যা করে বসে।

আচরণে পরিবর্তন :

যারা ইয়াবা সেবন করে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। জগতের কোনো কিছুই তাদের সহ্য হয় না। দৈনন্দিন ব্যবহারের মধ্যে আমূল পরিবর্তন ঘটে যায়। অল্পতেই রেগে যাওয়া, চুরি করা, মিথ্যা বলা এমনকি নানা রকম হিংস্র আচরণ করতেও পিছিয়ে থাকে না ইয়াবা সেবনকারী।

সিজোফ্রেনিয়া :

ইয়াবা সেবনের ফলে সিজোফ্রেনিয়া এবং হ্যালুসিনেশনের মতো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। উল্টাপাল্টা জিনিস দেখা কিংবা মারাত্মক ভয় পেয়ে অনেকে পাগলও হয়ে যেতে পারে। কেউ কেউ নানা রকম গায়েবি আওয়াজ শুনতে পায়, কেউ কেউ সব কিছু উল্টা দেখে। এমন সব সমস্যার ফলে ধীরে ধীরে মানসিক সমস্যা বাড়তে পারে ইয়াবা সেবনের ফলে।

এছাড়াও একাকিত্বে ভোগা, সন্দেহ করা, বিষণ্ণতা এবং রাগ বেড়ে যাবার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে ইয়াবা সেবনের মাধ্যমে। তাই ইয়াবা সেবন থেকে পরিচিতজনদের বিরত রাখার চেষ্টা করুন।

ওডি/এসএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড