নিশীতা মিতু
সহজলভ্য একটি ফল কলা। এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে কম বেশি সবাই জানেন। কিন্তু পাকা কলা অতিরিক্ত পেকে গেলে অনেকেই তা আর খেতে চান না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন কলার স্থান হয় ডাস্টবিনে। আপনিও কি কলার খোসা কালো হয়ে গেলে কিংবা কলা অতিরিক্ত পেকে গেলে ফেলে দেন? তবে আপনার জন্যই রইলো কিছু উপায়-
ব্রণ দূর করতে-
চাইলেই কলার খোসাকে ফেস ম্যাসেজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। এই ফলটিতে রয়েছে উচ্চ নিউট্রিশিয়ান যা ব্রণ সমস্যায় দারুণ কাজ করে। একটি কলার খোসা হাতে নিন এবং তা দিয়ে ত্বক ঘষুন। এক্ষেত্রে কলার খোসার ভেতরের অংশ ঘসবেন।
১০/১৫ মিনিট ঘষার পর মুখ শুকিয়ে নিন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি মুখে লাগিয়ে সারারাত অপেক্ষা করেন আর সকালে মুখ ধুয়ে ফেলেন।
সিল্কি, নমনীয় ও সুন্দর চুল পেতে-
অতিরিক্ত পাকা কলা খেতে অস্বস্তি হলেও চুলের মাস্ক হিসেবে এটি দারুণ একটি উপাদান। চুল পড়া সমস্যা, চুলের আগা ফেটে যাওয়া সব সমস্যার সমাধান রয়েছে এতে। পাকা কলার হেয়ার প্যাক ব্যবহারে আপনি পাবেন লম্বা, নমনীয় ও সিল্কি চুল। কীভাবে ব্যবহার করবেন?
একটি পাকা কলা, একটি অ্যাভোকাডো ও দুই চামচ নারকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে নিন। ভালো করে মিশিয়ে এই মিশ্রণ চুল ও মাথার ত্বকে ম্যাসেজ করুন। এবার আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন এই হেয়ার প্যাক ব্যবহারে বাড়বে চুলের ঘনত্ব, হবে লম্বাও। ব্যবহারের পর বাড়তি মিশ্রণ ফ্রিজে রেখে পরবর্তীতে ব্যবহার করতে পারেন।
বডি স্ক্রাব হিসেবে-
ত্বকের যত্নে কলাকে বডি স্ক্রাব হিসাবেও ব্যবহার করা যায়। এর জন্য একটি অতিরিক্ত পাকা কলা, এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর চিনি ও ২/৩ ফোঁটা এসেন্সিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন। সবগুলো উপাদান ভালো করে মিশিয়ে চিনি গলে যাওয়ার আগেই গায়ে ঘষুন। ডেড সেল দূর হয়ে মিলবে উজ্জ্বল ও নমনীয় ত্বক।
কালির দাগ দূর করতে-
দাগ দূর করার ক্ষেত্রেও পাকা কলার জুড়ি নেই। শিশুদের গায়ে কালির দাগ পড়লে তা সহজেই দূর করতে পারবেন কলা দিয়ে। একটি কলা নিন এবং এর খোসা ছাড়িয়ে নিন। খোসার ভেতরের অংশ দিয়ে কালি লাগা ত্বক ঘষুন। দাগ দূর হয়ে ত্বক পরিষ্কার হবে।
অন্য ফল বা সবজি পাকাতে-
কলা অন্য ফল ও সবজিকে পাকাতে সাহায্য করে। এমন যদি হয় আপনি বাজার থেকে কোনো ফল কিংবা সবজি আনলেন যা ঠিকমতো পাকেনি তবে কাগজের ব্যাগে সেই ফল বা সবজির সঙ্গে একটি পাকা কলা রাখুন। পরদিনই দেখুন জাদু!
গাছের পাতা পরিষ্কার করতে-
অনেক গাছপ্রেমীই ঘরের ভেতর গাছ রাখতে ভালোবাসেন। এসব গাছের পাতা পরিষ্কার করতে গিয়ে বাঁধে বিপত্তি। পাকা কলার খোসার সাদা অংশ দিয়ে পাতা পরিষ্কার করুন। ধুলোবালি দূর হয়ে পাতা হবে উজ্জ্বল।
সার হিসেবে-
আপনার বাগানের গাছের জন্য কিন্তু কলার খোসা দারুণ সার। কলার খোসা ছোট ছোট করে কেটে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিন। বেশি গভীরে পুততে হবে না। রং বিলীন হয়ে গেলে এগুলো উপকারী সার হিসেবে কাজ করবে।
জুতা পরিষ্কার করতে-
ধরুন, জরুরি প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হবেন কিন্তু জুতা পরিষ্কার করার কালি খুঁজে পাচ্ছেন না। তখন উপায়? কলার খোসার সাদা অংশ জুতায় ঘষে নিন। জুতোজোড়া হবে চকচকে। তবে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত পাকা কলা ব্যবহার না করে হালকা পাকা কলা ব্যবহার করুন।
পিঠা তৈরিতে-
আর কিছু না হোক অতিরিক্ত পাকা কলা দিয়ে কিন্তু দারুণ মজার পিঠা বানাতে পারেন। পাকা কলার সঙ্গে ময়দা, চিনি আর ডিম চটকে নিয়ে গরম তেলে ভেজে প্রস্তুত করুন কলার পিঠা।
এখনো কি অতিরিক্ত পাকা কলা ফেলে দেওয়ার কথা ভাবছেন? নাহ, এমন ভুল না করে বরং নিজের প্রয়োজনে কাজে লাগিয়ে ফেলুন।
তথ্যসূত্র- ব্যান্টার।
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড