• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সফল হতে চাইলে জীবনে

  লাইফস্টাইল ডেস্ক

২৮ মে ২০১৯, ২২:৩৬
সাফল্য
ছবি : প্রতীকী

সবার জীবনেই সফলতা কাম্য। কিন্তু সফল হবার ইচ্ছে পোষণ করাটা যত সহজ সফল হওয়াটা ততটাই কটিন। একজন মানুষ চাইলেইতো আর সফল হতে পারে না। নারী বা পুরুষ যেকোন মানুষের জন্যই এটি একটি কঠিন কাজ। বিশেষ করে একজন নারীর জন্য সাফ্ল্য অর্জন করা আরও বেশি কঠিন। তবে সফল হতে চাইলে বেশ কিছু মূলমন্ত্র অনুসরণ করতে হয়। নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল বিশ্বের কয়েকজন নারী জানাচ্ছেন তাদের সফলতার চাবিকাঠির কথা। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী সেই মূলমন্ত্র।

গুরুত্ব দিন নিজেকে :

জীবনের যে ক্ষেত্রেই আপনি সফল হতে চান না কেন সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে নিজেকে। নিজের যত্ন নেওয়া শিখতে হবে আপনাকে। নিজেকে গুরুত্ব দিতে না পারলে আপনি খেই হারিয়ে ফেলবেন। খুঁজে পাবেন না জীবনের কোন ভারসাম্য। এমা থম্পসন একজন নামকরা অভিনেত্রী। নিজেকে গুরুত্ব দেবার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সবার আগে নিজের শারিরীক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বিশেষ করেকোন কাজ করতে যাবার জন্য আপনি শারিরীক এবং মানসিকভাবে কতটা ফিট সেটি খেয়াল রাখুন।'

নিজের পরই গুরুত্বের তালিকায় যাদের নাম আসবে তারা অতি কাছের আপনজন। বিশেষ করে পরিবার এবং ঘনিষ্ঠদের ব্যাপারেও আপনাকে সচেতন হতে হবে সফল হতে চাইলে। তাদের অনেক পরামর্শ আপনার সত্যিকার সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে পারে। তাই তাদের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ নিন।

থামাবেন না এগিয়ে যাওয়া :

জার্মানির অসউইজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থেকে ফিরে এসেছিলেন এক মনোবিজ্ঞানী। সেটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা। তার নাম এডিথ এজের। তিনি নিজেকে সবসময় একজন পর্বতারোহী ভাবতে পছন্দ করেন।

‘যখন একজন পর্বতারোহী ওপরে উঠতে থাকেন, তিনি পিছলে পড়েন। দুই তিন ধাপ নিচে নেমে যান। কিন্তু ওপরে ওঠা থামান না। আমি সেরকমই। পিছলে পড়ে গেলেও থামাই না ওপরে ওঠা। এমনকি এটা কোনদিনও থামাবো না।’ এমনভাবেই নিজের সাফল্যের পেছনের গল্প বলছিলেন তিনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেরর সময় অসউইজ কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে এডিথের বাবা মায়ের মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন সেবার। সেখান থেকে মুক্ত হবার পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। সেখানে তিনি মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ালেখা করেন।

"মানুষ আমাকে হয়তো মেরে ফেলতে পারবে। অত্যাচার অত্যাচারে জর্জরিত করে ফেলতে পারেবে। পাশবিক যন্ত্রণা চালাতে পারবে। কিন্তু আমার আত্মা আর এগিয়ে যাবার চেতনা কেউ শেষ করে দিতে পারবে না।" নিজের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এমনই জানালেন এই মনোবিজ্ঞানী।

অন্যের মন্তব্যে কান দিবেন না :

পৃথিবীতে আপনি নিজে আপনাকে যতটা চেনেন আর কেউই ততটা চেনে না। কারণ নিজের সম্পর্কে আপনার যা ধারণা তা অন্যের অনুমোদন ছাড়াই আপনি বিশ্বাস করতে পারেন। বিখ্যাত কমেডিয়ান এবং লেখক জো ব্রান্ড এর মতে, ‘সফল হতে চাইলে অন্যরা আপনার সম্পর্কে কী বললো অতসবে কান দিবেন না। আমি কখনোই মাথা ঘামাই না আমাকে নিয়ে অন্যেরা কী ভাবছে। নিজের চেহারা আমি যথেষ্ট পছন্দ করি। কিন্তু আরও বহু মানুষ তা পছন্দ করে না বলেই মনে হয়।’

তিনি আরও যোগ করে বলেন "আমি একটা জিনিস বিশ্বাস করতে শিখেছি, আমাকে কেমন দেখায় সেটা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার বন্ধু বা যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের কাছেও সেটা ততটা বড় ব্যপার না। এটা মনে রাখা জরুরী বলে আমি মনে করি। কারণ বেঁচে থাকা এবং ভালো থাকার জন্য আপনাকে সারা জীবন নিজের উপরই ভরসা করতে হবে।"

বদলে ফেলুন দৃষ্টিভঙ্গি :

অনেক খারাপ সময় আসে মানুষের জীবনে। এমন অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের মনে হয় বেঁচে থাকার কোন অর্থ নেই। সবকিছুর কবর হয়ে গেছে। একদম ডুবে গেছি আমি। কিন্তু ব্যাপারটা অন্যভাবেও ভাবা যায়। হয়তো নতুন কোন কিছুর শুরু হতে যাচ্ছে আপনার জন্য। এমনটাই ভেবে থাকেন সফল অভিনেত্রী কেলেসি ওকাফর।

তিনি বলেন, "আমার স্থির বিশ্বাস, আপনাকে আসলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি নিজের জীবন বা সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কেমন মনোভাব পোষণ করেন। ইতিবাচকভাবে দেখার অভ্যাস করা দরকার আমাদের।"

তার মতে, ডুবে যাওয়া এবং বীজ বোনা দুটোই মাটি বা পানির নিচে হয়ে থাকে। কিন্তু দুইক্ষেত্রে মানে হয় সম্পূর্ণ দুই রকম। তিনি বলেন,"আমার জীবনে এমন অনেক মুহূর্তই আছে যে সময়টাতে মনে হয়েছে আমার মরে যাওয়া উচিত। কখনোবা আমার মনে হয়েছে আমি মরে গেছি। কিন্তু সেসব মুহূর্তেই আবার আমি নতুন করে সব শুরু করেছি।"

ইতিবাচক মানুষের সংস্পর্শে থাকুন :

মেরি পরটাস একজন সফল মানুষ নিজের কাজের ক্ষেত্রে। তাকে বলা হয় বিপণন গুরু বলে। কারো চারপাশে যদি সবস্ময় ইতিবাচক মানুষ থাকে তবে সে মানুষ ব্যর্থ হয় খুবই কম। কেননা নিজের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা কিংবা ব্যর্থতা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত থাকার কোন সুযোগ থাকে না। এমনটাই বিশ্বাস করেন তিনি।

সফলতার মন্ত্র হিসেবে তিনি বলেন, "এজেন্সিতে লোক নিয়োগের সময় আমরা এমন মানুষই নিয়োগ দেই, যারা নিজের চারপাশ নানান কাজ দিয়ে আলো করে রাখেন। আলো ছড়ান চারপাশে, যারা অন্যকে হীনমন্যতায় ডুবিয়ে দেন তাদের নয়।"

তিনি বলছেন, "যারা সব সময় সব পরিস্থিতিতে ইতিবাচক থাকেন, সব কাজ 'পারব' বলে রাজি হয়ে যান ও সেটা পাবার জন্য নিজের সেরাটা দেন এমন মানুষ পছন্দ আমাদের।""যারা নিজেরা এনার্জিতে ভরপুর থাকেন, তারা অন্যকেও উৎসাহ দিতে পারেন। যদি উন্নতি করতে চান, তাহলে যারা মনমরা থাকেন বা অহমপূর্ণ আচরণ করেন তাদের থেকে দূরে থাকুন।"

সূত্র : বিবিসি

ওডি/এসএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড