• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শিশুর খেলনার ব্যাপারে আপনি কতটা সচেতন?

  নন্দিনী চৌধুরী

১৬ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৫১
শিশুর খেলনা
ছবি : নন্দিনী চৌধুরী

কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে বাচ্চা পালার সবচাইতে কষ্টের কাজ কোনটি, আমি বলবো বাচ্চার সাথে খেলা। হ্যাঁ! না খাওয়ানো, না ঘুম পাড়ানো... আমার কাছে সবচাইতে কঠিন কাজ মনে হয় খেলা। কারণ খেলা ছাড়া এদের আর কোন কাজ নেই আর এরা অতি দ্রুত বোর হয়ে যায়। এইতো এক ন্যানো সেকেন্ডের মাঝেই বোর হয়ে যাবে। আর এই বোরড বাচ্চাদের মত ভয়ংকর পৃথিবীতে কিছুই না। আপনাকে সম্পূর্ণ পাগল বানিয়ে ফেলার ক্ষমতা এরা রাখে।

তাই তাদের বিনোদন তাদের খাওয়া, ঘুমের মতই অতি গুরুত্বপূর্ণ। আর এই বিনোদনের সবচাইতে বড় অংশ খেলা।

আমার সম্পর্কে প্রচলিত আছে আমি ভীষণ কিপটা। আমি ছেলেকে নিতান্তই কমদামী জামা কিনে দেই। আমি আসলেই রাস্তার পাশের ভ্যান থেকে ছেলের জামা কিনি। কারণ বাচ্চারা খুব দ্রুত বড় হয় এক জামা এরা বেশিদিন পরতে পারে না। এমনও হয়েছে ট্যাগও খুলিনি এমন জামাও আমি কাউকে দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি কারণ আমার ছেলের ছোট হয়ে গিয়েছে। তাই এই ক্ষেত্রে আমি টাকা নষ্ট করতে রাজি না। আমি টাকা নষ্ট করি ওর বই আর খেলনা কেনার পিছনে।

আমার এক পরিচিতি বাচ্চার খুব বদনাম ভীষণ দুষ্ট, সারাক্ষণ টিভি দেখে ইত্যাদি। আমি খেয়াল করে দেখলাম সেই বাচ্চারাই বেশি দুষ্ট হয় যাদের করার কিচ্ছু নেই। খেলবে তেমন খেলনাও নেই। তাই আমার মতে, বাচ্চাকে খেলার যথেষ্ট সরঞ্জাম দিন। তার মানে এইনা যে, যা চাইবে তাই দেবেন। চেষ্টা করুন এমন কিছু সিলেক্ট করতে যা তার মানসিক ও শারীরিক উন্নতিতে কাজ করবে।

এখন আর সেই দিন নেই যে খেলনা বলতেই বোঝায় মেয়েদের টিনের হাড়িপাতিল আর ছেলেদের প্লাস্টিকের বন্দুক। বাচ্চাদের খেলনার এখন অনেক রকমফের হয়।

আমার ছেলের বয়স যখন ৪ মাস তখন আমি ওকে প্লে জিম কিনে দিয়েছিলাম। তার কিছুদিন পর জাইলোফোন। এই দুটো খেলনাই ওর হাত আর চোখের কর্ডিনেশন বাড়াতে সাহায্য করেছিল। এই মুহূর্তে ওর সব খেলনার মাঝে আমার খুব পছন্দ ওর একটা টুল সেট আছে সেটা। প্লাষ্টিকের সেই হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, ড্রিল মেশিন এগুলো নাড়াচাড়া করতে করতে এই টুলগুলো সম্পর্কে ও জানতে পারছে। আরেকটা জিনিস আমার খুব পছন্দের। সেটি হলো পাজল সেট। আর আমি মনে করি প্রতিটি বাচ্চার অবশ্যই একটা সাইকেল থাকা উচিত। এখনকার ইট পাথরের নগরীতে বন্দি এই জেনারেশনের একমাত্র ফিজিক্যাল এক্টিভিটি এটাই।

এইরকম অনেক রকমের খেলনা আছে যা বাচ্চাদের বুদ্ধিবৃত্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আমিতো মনে করি রিমোট কন্ট্রোল গাড়িও বাচ্চার মনোযোগ আর বুদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই শিশুর বিকাশে তার বিনোদনের দিকেও মনোযোগ দিন।

খেয়াল রাখুন-

খেলনা সিলেক্ট করার সময় মাথায় রাখুন সেটা যাতে হিংসাত্মক কিছু না হয় যেমন প্লাষ্টিকের বন্দুক, তলোয়ার এই টাইপ কিছু।

খেলনা যাতে অবশ্যই শিশুর উপযোগী হয়। শিশুর বিলাসিতা যাতে প্রশ্রয় না পায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে সেক্ষেত্রে কোটা সিষ্টেম যেমন মাসে একটা খেলনা টাইপ কিছু করা যায়।

সবশেষে একটা কথা, খেলনা যেটাই হোক দিনের কিছু সময় হলেও নিজেই শিশুর সাথে সেটা দিয়ে খেলুন। আপনার চাইতে বড় বিকাশ মাধ্যম ওর জন্য আর কিছুই না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড