• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হার্ট অ্যাটাক সংক্রান্ত ৮ তথ্য

  লাইফস্টাইল ডেস্ক

২৮ মার্চ ২০২০, ১৬:৩৮
হার্ট অ্যাটাক
ছবি : সংগৃহীত

মেডিসিননেট ডটকমের গবেষণা অনুসারে, ‘রক্ত জমাটবদ্ধতার কারণে করোনারি আর্টারি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হৃদপিণ্ডের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ও মারা গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। করোনারি আর্টারি হচ্ছে রক্তনালী যা হৃদপিণ্ডকে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ করে।’ এ প্রতিবেদনে হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ৯টি তথ্য উপস্থাপন করা হলো।

কিভাবে বুঝব যে হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে?

এক নম্বর নিয়ম হচ্ছে: নিজে নিজে ডায়াগনোসিস করবেন না। অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন যদি সামান্যতম সন্দেহ হয় যে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে। বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক জনিত মৃত্যু হয় হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে। জরুরি সেবা চাওয়ার পূর্বে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা প্রাণঘাতী হতে পারে। যদি আপনার এখানে উল্লেখিত উপসর্গসমূহের যেকোনো একটি থাকে জরুরি ভিত্তিতে মেডিক্যাল সেবা গ্রহণ করুন।

বুকে অস্বস্তি : অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাক বুকের কেন্দ্রে ব্যথা হওয়ার সঙ্গে জড়িত, এ ব্যথা কয়েক মিনিটের বেশি থাকতে পারে অথবা চলে যাওয়ার পর আবার আসতে পারে। আপনি বুকে চাপ, নিষ্পেষণ, ভার অথবা ব্যথা অনুভব করতে পারেন।

শরীরের উপরিভাগে অস্বস্তি : এক বা উভয় বাহু, পিঠ, ঘাড়, চোয়াল অথবা পাকস্থলীতে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত দিতে পারে।

শ্বাসকার্যে সমস্যা : হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম একটি উপসর্গ হচ্ছে শ্বাসকষ্ট। এ উপসর্গটি বুক ব্যথার সঙ্গে অথবা বুক ব্যথা ছাড়া দেখা দিতে পারে।

অন্যান্য সতর্ক সংকেত : শরীরে এমন উপসর্গ হয় কিনা লক্ষ্য রাখুন যা স্বাভাবিকভাবে অনুভব করেন না, যেমন- ঠাণ্ডা ঘাম, বমিবমি ভাব, মাথাঘোরা, অত্যধিক অবসাদ অথবা খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে এমন অনুভূতি।

বুকে হাতি বসে আছে এমন অনুভূতি সম্পর্কে যা শুনেছি তা কি সত্য? হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের পেশীর দিকে রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয় এবং হৃদপিণ্ডের পেশী মারা যেতে শুরু করে, যে কারণে বুক ব্যথা হতে পারে- কিন্তু কখনো কখনো বুক ব্যথা হয় না, বিশেষ করে নারীদের। অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাক হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি নিয়ে ধীরে ধীরে তৈরি হয়।

উপসর্গ ছাড়াও কি আমার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে? হ্যাঁ, হতে পারে। এটি যে কারো ক্ষেত্রে হতে পারে, তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি হতে পারে- যাকে বলে নীরব হার্ট অ্যাটাক। আপনি প্রত্যাশিত উপসর্গের সম্মুখীন নাও হতে পারেন, যেমন- বুক ব্যথা। কিন্তু বমিবমি ভাব, শ্বাসকষ্ট ও মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন।

এমন কোনো সময় আছে যখন হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে? যেকোনো মুহূর্তে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সকালের প্রথম দিকের ঘণ্টাগুলোতে হয়ে থাকে। সকাল ৬টা থেকে মধ্যাহ্নের মধ্যে ৪০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক অধিক কমন। অনুরূপভাবে, সকালে হৃদরোগ সম্পর্কিত হঠাৎ মৃত্যু ২৯ শতাংশ বেশি কমন।

হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে এমন সময় কি করা উচিত? যদি আপনি মনে করেন যে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে, তাহলে অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন এবং শান্ত থাকুন। তারপর শান্তভাবে বসুন বা শয়ন করুন এবং অ্যাসপিরিন ৩০০ এমজি ট্যাবলেট ধীরে ধীরে চিবান- অ্যাসপিরিন হার্ট ড্যামেজ হ্রাসে সাহায্য করে অথবা রক্ত জমাটবদ্ধতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী প্লেটলেটের আঠালো অবস্থা কমিয়ে মারাত্মক রক্ত জমাটবদ্ধতার বিকাশ হ্রাসে সহায়তা করে।নিশ্চিত হোন যে দরজা খোলা আছে যাতে ইমারজেন্সি রেসপন্ডাররা আপনার ঘরে প্রবেশ করতে পারে। কোনোকিছু খাবেন না বা পান করবেন না। আপনার সঙ্গে আসার জন্য কোনো আত্মীয়, প্রতিবেশী বা বন্ধুকে কল করুন।

হাসপাতালে যাওয়ার পর আমি কি আশা করতে পারি? প্রথমত আপনাকে কার্ডিয়াক মনিটরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে এবং ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপ প্রদান করা হবে। হৃদপিণ্ডের ইলেক্ট্রিক্যাল ইমপালস ও কোনো অনিয়মিত ছন্দ বা হার্ট অ্যাটাক নির্দেশ করতে পারে এমন অন্য কোনো অস্বাভাবিকতা পরিমাপ করতে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) টেস্ট সম্পাদনের সময় আপনাকে অক্সিজেন ও ব্যথার ওষুধ দেওয়া হবে। হৃদপিণ্ডের পেশী ড্যামেজ হয়েছে কিনা জানতে ডাক্তাররা আপনার ব্লাড স্যাম্পল নিতে পারে এবং কোনো সাসপেক্টেড হার্ট অ্যাটাকের পর ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত এটি পুনরায় নিতে পারেন। এ রক্ত পরীক্ষায় ট্রোপনিন নামে এনজাইমের মাত্রা পরিমাপ করা হয় যা হৃদপিণ্ডের পেশি ড্যামেজ হলে বা মারা গেলে রক্তপ্রবাহে রিলিজ হয়। আপনার দশা অথবা অ্যাটাকের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে সর্বোত্তম চিকিৎসা না দেওয়া পর্যন্ত ডাক্তাররা আপনাকে হাসপাতালে রাখতে পারেন।

আমার কি সার্জারি প্রয়োজন হবে? যদি আপনি দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছেন, ডাক্তাররা করোনারি অ্যানজিওপ্লাস্টি নামক পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার করোনারি আর্টারি খোলার চেষ্টা করতে পারে। আপনার কুঁচকি থেকে করোনারি আর্টারি পর্যন্ত একটি সরু টিউব প্রবেশ করানো হবে যার আগায় থাকবে একটি বেলুন এবং অল্প পরিমাণে ডাই বা রঞ্জক পদার্থ ইনজেক্ট করা হবে যাতে এক্স-রে ভিডিওতে ব্লকেজের অংশটা দেখা যায়। আর্টারি প্রশস্ত করতে বেলুন ফোলানো হয় এবং যখন টিউব অপসারণ করা হয় তখন সাধারণত স্টেন্ট নামক একটি ছোট ধাতব কয়েল বা রিং আর্টারি খোলা রাখতে রেখে দেওয়া হয় যা ভবিষ্যতে ব্লকেজ হওয়া প্রতিরোধ করে। কিছু স্টেন্ট আর্টারি পরিষ্কার রাখতে ওষুধ রিলিজ করে।

আরও পড়ুন : হেনস্তার শিকার হওয়া শিশুদের লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাকের পর আমি কি ব্যায়াম করতে পারব? প্রকৃতপক্ষে, ব্যায়াম আপনার দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে কিন্তু আপনার নিরাপদ ব্যায়াম রুটিন তৈরি করতে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। তারা আপনাকে কার্ডিওভাস্কুলার ব্যায়াম যেমন- ওয়াকিং, জগিং, সাইক্লিং বা সুইমিং সাজেস্ট করতে পারেন যা আপনার হৃদপিণ্ডের পেশী শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। আপনার ডাক্তার বিপদ কেটে যাওয়ার সংকেত না দেওয়া পর্যন্ত ট্রেনিং শুরু করবেন না।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড