সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয়, ভাজাপোড়া খাবার না খাওয়ার ব্যাপারে তো নিশ্চয় শুনেছেন। সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু শুধু কি এগুলোই? চলুন, জেনে নেওয়া যাক অন্যান্য কিছু দৈনন্দিন মুখরোচক খাবারের কথা, যেগুলো গ্রহণের ব্যাপারে পুষ্টিবিদরা সবসময়ই মানা করে এসেছেন।
১। বেকন, সসেজ, হট ডগ
উপরিউল্লিখিত এই প্রতিটি খাবারই প্রক্রিয়াজাত মাংস দ্বারা তৈরি। গবেষণানুসারে, যেটি আমাদের শরীরে ক্যানসার এবং হৃদপিণ্ডের নানারকম সমস্যা তৈরি করতে সক্ষম। শুধু উপরের খাবারগুলোও নয়, প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো খুব প্রয়োজন না পড়লে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিন।
রাস্তার পাশ দিয়ে চলার সময় বিভিন্ন আউটলেট থেকে ইচ্ছে হলেই চিকেন বল বা চিকেন সসেজ কিনেছেন আপনি। হয়তো ভালো স্থান থেকেই কিনছেন। কিন্তু খাদ্যমান ভালো বলেই যে এই খাবারটি আপনাকে সুস্থ রাখবে তা কিন্তু নয়। শুধু মাংস নয়, যে কোনো প্রক্রিয়াজাত খাবারের বেলায়ই এই কথাটি সত্যি।
প্রক্রিয়াজাত খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণটাও বেশি থাকে। সাধারণত দিনে ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি এবং ৫০ ঊর্ধ্বদের জন্য দিনে ১,৫০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম খাওয়া উচিত নয়। এতে করে কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের সমস্যা বেড়ে যায়। আর হ্যাঁ, প্রক্রিয়াজাত খাবারে সোডিয়ামটাও বেশি পরিমাণেই থাকে। তাই প্রক্রিয়াজাত মাংস ও খাবারকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।
২। কফি বা চায়ের চিনি
কফি পান করুন। কিন্তু সেটাতে চিনি না মেশানোর চেষ্টা করুন। বিশেষজ্ঞরা নারীদের দিনে ৬ চা চামচ এবং পুরুষদের নয় চা চামচের বেশি চিনি খেতে মানা করেন। তবে এই পরিমাণটা আরও কমিয়ে দিতে পারেন, কারণ কফি বা চায়ে ব্যবহার করা এই চিনি একজন মানুষের হৃদপিণ্ডের সমস্যাকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।
আর হ্যাঁ, চেষ্টা করুন কফি শপে না গিয়ে চা বা কফির তেষ্টাটা ঘরেই মিটিয়ে নিতে। এতে করে আপনি ঠিক কতটা চিনি খাচ্ছেন সেটার হিসেব থাকবে আপনার কাছে।
৩। প্রক্রিয়াজাত পেস্ট্রি
দোকানে থরে থরে সাজানো নানারকম পেস্ট্রির মধ্য থেকে যে কোনো একটি আপনি বেছে নিতেই পারেন। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এর মাধ্যমে আপনার শরীরে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে। তাই নানারকম লোভনীয় পেস্ট্রির দিকে না গিয়ে প্রাকৃতিকভাবে যে ফলে মিষ্টি স্বাদ রয়েছে সেগুলো দিয়ে তৈরি করা পেস্ট্রি খান বা বাড়িতেই বানিয়ে নিন। এতে করে স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেকটাই কমে আসবে।
৪। ফ্রস্টিং
বাড়িতে কেক বানাতে গেলে বা অন্যান্য অনেক খাবারেই আমরা ফ্রস্টিং ব্যবহার করি। কিন্তু এই ফ্রস্টিং-এ ট্রান্স-ফ্যাট থাকে বিধায় এটি শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক হয়ে পড়ে। চেষ্টা করুন ফ্রস্টিং এড়িয়ে চলতে। আর যদি ব্যবহার করতেই হয় সে ক্ষেত্রে এমন ফ্রস্টিং ব্যবহার করতে যেটার লেবেলে ট্রান্স-ফ্যাটের ব্যাপারে লেখা আছে। সাধারণত, প্রতি পরিবেশনায় শুন্য দশমিক পাঁচ ফ্রস্টিং ব্যবহার করা হলে সেখানে ০ শতাংশ ট্রান্স-ফ্যাট থাকা স্বাস্থ্যকর।
৫। সিরিয়াল
সকালে ঝটপট নাশতায় বা শিশুদের জন্য মুখরোচক কিছু বানাতে সিরিয়াল ব্যবহার করেন সবাই। আর এই সিরিয়ালের ভেতরে থাকে চকলেট ফ্লেভার, ভ্যানিলা ফ্লেভার আরও কত কী! চেষ্টা করুন চিনি নেই এমন সিরিয়াল বেছে নিতে। আর যদি কিছুটা চিনি থেকেই থাকে, তাহলে তৈরি করার সময় বাড়তি চিনি সেটাতে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
হয়তো প্রাথমিকভাবে এই খাবারগুলোকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলা বেশ কঠিন হবে আপনার জন্য। সে ক্ষেত্রে অবশ্য খারাপ ও ভালো- দুটোর মিশ্রণ তৈরি করে ফেলতে পারেন আপনি। এই যেমন- উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য লবণাক্ত বাদাম খাওয়া মানা। প্রাথমিকভাবে ঝুঁকি কমাতে আপনি সাধারণ বাদামের সঙ্গে কিছু লবণাক্ত বাদাম মিশিয়ে নিতে পারেন। এরপর একটু একটু করে লবণাক্ত বাদাম খাওয়া একেবারেই বাদ দিতে পারেন।
শুরুটা তো করুন! তাহলে একটু একটু করে একটা সময় আর অনেক বেশি সুস্থ রাখতে পারবেন আপনি নিজেকে এবং নিজের চারপাশের মানুষগুলোকে।
সূত্র- এভরিডেহেলথ
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড