• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মনের অস্থিরতা দূর করতে চাই ভালো ঘুম

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২২ মার্চ ২০২০, ১৩:০৮
ঘুম
প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমান (ছবি- প্রতীকী)

নানারকম চিন্তায় ঘুম আসছে না একবারেই? মনকে শান্ত করা যাচ্ছে না কোনোভাবেই? এর পেছনে অনেক অনেক কারণ নিহিত থাকতে পারে। ঘুমানোর ঠিক আগে আগে মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে ওঠা কোনো নেতিবাচক খবর, উজ্জ্বল আলো বা সারাদিনের কর্মকাণ্ড, খাদ্যাভ্যাস- এই সবকিছু মিলেমিশে আপনাকে রাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিছানায় জেগে থাকতে বাধ্য করতে পারে। বিশেষ করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে মানসিক সমস্যায় ভোগা, অস্থিরতা আর উদ্বিগ্নতাকে সামলে ঘুমোতে না পারাটা খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। তবুও, সুস্থ থাকতে হলে ঘুমোতে হবে।

একজন মানুষের শরীর রোগ প্রতিরোধ ভালোভাবে করতে পারে তখনই, যখন তার ঘুম, খাবার এবং অন্যান্য সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চলে। ঘুমের অভাব অনেক ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা ডেকে নিয়ে আসে আরও বেশি। তাই সুস্থ থাকতে এবং চারপাশের মানুষকে সুস্থ রাখতে আজ রাত থেকেই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে ঘুমিয়ে পড়ুন দ্রুত।

১। নেতিবাচক খবর এবং উজ্জ্বল আলো পরিহার করুন

এমনিতেই রাতে ঘুমানোর আগে যদি মোবাইল বা ল্যাপটপের মতো কোনো প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার করা হয়, সে ক্ষেত্রে ঘুম না আসার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এর পেছনে কাজ করে এই যন্ত্রগুলো থেকে নিঃসরিত আলো। এটি আমাদের শরীরে মেলাটোনিনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।

তবে সেটা বাদেও বর্তমানে ঘুমানোর আগে মোবাইলের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রবেশ করা মানেই নেতিবাচক অনেক খবর দেখতে পাওয়া। যেটি আমাদের মানসিক অস্থিরতাকে আরও বেশি বাড়িয়ে দেয়। তাই, ঘুমানোর অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে মোবাইল, ল্যাপটপ বা এমন যন্ত্রকে দূরে রাখুন।

২। চিন্তা করুন সময় বুঝে

বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া, ঘুমানো বা মুভি দেখার যেমন নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, তেমনি সময় মেনে চিন্তা করুন। কথাটি শুনতে হয়তো হাস্যকর লাগছে। আসলেই, চিন্তা কি আর বলে কয়ে আসে! তারপরেও, চেষ্টা করুন। কয়েকদিন দিনের নির্দিষ্ট একটি সময়েই নেতিবাচক সব ব্যাপার আর সমস্যা নিয়ে চিন্তা করুন। একটা সময় এটি আপনার অভ্যাস হয়ে দাঁড়াবে। ঘুমানোর আগে আগে এই চিন্তাগুলো সে ক্ষেত্রে আপনাকে অস্থির এবং উদ্বিগ্ন করে তুলবে না।

৩। মস্তিষ্ককে বিশ্রামের সঙ্গে অভ্যস্ত করুন

অবশ্যই আমাদের মস্তিষ্ক নিজ থেকেই বিশ্রাম নিতে অভ্যস্ত। তবে ঘুমানোর ঠিক আগে আগে একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন। এই যেমন- ঘুমানোর ঠিক ঘণ্টাখানেক আগে শুয়ে পড়ুন, একটা বইয়ের দুইটি পাতা পড়ুন। এরপর কোনো গান শুনুন। এ রকম একটি পদ্ধতিতে প্রতিদিন কাজ চালালে আপনার মস্তিষ্ক বুঝে যাবে যে কখন ঘুমানোর সময় এসেছে।

৪। ভালো কথার তালিকা বানান

ঘুমাতে যাওয়ার সময় নেতিবাচক কথা মনে হতেই পারে। আর সেগুলো আমাদের মস্তিষ্ককে আলোড়িত করতেই পারে। এই অবস্থাকে এড়িয়ে চলতে কিছু ইতিবাচক ঘটনার তালিকা করুন এবং ঘুমানোর আগে সেগুলো মনে করুন। দেখবেন, মন শান্ত হয়ে গিয়েছে কিছুটা।

৫। পেশি ও হৃদপিণ্ডকে স্থির করুন

ভালোভাবে ঘুমানোর জন্য হৃদপিণ্ডকেও শান্ত করাটা জরুরি। তাই, ঘুমের ঠিক আগে আগে নিজের শরীরের পেশিগুলোকে শান্ত করার চেষ্টা করুন। একই সঙ্গে হৃদপিণ্ডকে শান্ত করে তুলতে ৪-৭-৮ প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন। এ ক্ষেত্রে প্রথমে চার পর্যন্ত গুণে নিঃশ্বাস নিন, এরপর সাত পর্যন্ত গুণে নিঃশ্বাস আটকে রাখুন এবং সর্বশেষ আট পর্যন্ত গুণে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। আপনার হৃদপিণ্ড স্থির হয়ে আসবে।

ঘুমের শিডিউল মেনে চলুন

সবসময় ঘুমের সময়টা একই রাখার চেষ্টা করুন। কারণ একেক দিনে একেক সময়ে ঘুমালে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ফলে শরীর এটাই বুঝতে পারবে না যে, কখন ঘুমানো উচিত এবং কখন ঘুমানো উচিত নয়। তাই প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় মেনে ঘুমিয়ে যান।

আরও পড়ুন : আতঙ্কে নয়, ঘরে কাটানো দিনগুলো কাজে লাগান এভাবে

আর যদি মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়ার মতো কোনো সমস্যা তৈরি হয়, তাহলে বাড়তি কোনো চিন্তা না করে বিছানা থেকে উঠে পড়ুন। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন এবং ৪-৬-৭ প্রক্রিয়ায় নিঃশ্বাস নিয়ে আটকে রেখে ছেড়ে দিন। এতে করে হৃদপিণ্ড স্থির হবে। শরীর একটু ক্লান্ত হবে। আর বাড়তি সতর্করা হিসেবে এক গ্লাস পানি ও একটি বিস্কুট খেয়ে নিন।

ঘুম কেন ভেঙ্গে গেল তা নিয়ে বাড়তি চিন্তা না করে ঠিক কোন ব্যাপারটি আপনাকে ভাবাচ্ছে সেটা লিখে ফেলুন। তারপর আবার বিছানায় ফিরে যান। দেখবেন, ধীরে ধীরে আবার ঘুম চলে এসেছে!

সূত্র- এভরিডেহেলথ

ওডি/এনএম

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড