নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজেকে সফল আত্মকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখায় জাতীয় যুব পুরস্কার পেলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের কুমারপাড়া গ্রামের আমিষ ফুডস এন্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বিল্লাল মিয়া।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় যুব দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গত মঙ্গলবার যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল তার হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া মতিউর রহমান বিল্লাল মেকানিক্যাল প্রকৗশল বিদ্যায় পড়াশোনা শেষ করে ব্যতিক্রম কিছু করার। তার সাথে সহযোগিতার হাত বাড়ান আরও দুই মেধাবী যুবক প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ ও প্রকৌশলী আব্দুল আলীম। স্বপ্নচারী তিন যুবক সকল প্রতীক‚ লতাকে পেছনে ফেলে আড়াইহাজার উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়নের কুমারপাড়া নিজ গ্রামে দশ বিঘা জমির উপর ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ‘আমিষ ফুডস এন্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ নামে ডেইরি ফার্মের প্রতিষ্ঠা করা হয়।
২০২০ সালে শুরু করা হয় বাণিজ্যিকভাবে দুধ ও মাংসের জন্য গরু বিক্রি। সাত লাখ টাকা বিনিয়োগ করে তারা সেই ডেইরি খামারের এখন সম্পদের পরিমাণ প্রায় কয়েক কোটি টাকা। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পেয়েছেন ইতিমধ্যে জাতীয় স্বীকৃতি।
বিল্লাল জানালেন, নিজেরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে প্রতিনিয়ত। আর সেই থেকেই তাদের পথচলা শুরু। তাদের খামারটি এখন শুধু দুধ উৎপাদন করেই থেমে নেই, তৈরি করছে দুগ্ধ জাতীয় খাবার এবং পালন করছে মাংস উৎপাদনকারী গরুও। খামারটি সর্বসাকুল্যে বর্তমানে ১২৩ বিঘায়। এর মধ্যে রকমারি প্রাণবৈচিত্র ও প্রাণিসম্পদের খামারের আয়োজনটি ১১ বিঘায়।
এ খামারে বর্তমানে কাজ করছেন ৫৪ শ্রমিক। এলাকার তরুণদের আদর্শ হয়ে উঠেছে আমিষ ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। বর্তমানে ওই খামারে নিয়মিত দুধ দেয় এমন গাভীর সংখ্যা ৫২টি। গত কোরবানিতেও এ খামারের একটি বাণিজ্যিক সাফল্য রয়েছে। আগামী কোরবানির জন্য গরু মোটাতাজাকরণ শুরু হয়েছে।
বর্তমান সময়ে প্রাণিসম্পদের খামার পরিকল্পনার সঙ্গে ঘাস চাষের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিতে হয়। সফল খামারিরা মনে করেন খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধান না করে খামার গড়লে লাভবান হওয়া কঠিন। এই শিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ এ সময়ের কৃষির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে যথেষ্টই সচেতন।
বিল্লাল জানালেন, শেডে গরু তোলার আগেই ঘাসের শতভাগ জোগান নিশ্চিত করে নিচ্ছেন তিনি। খামারে রয়েছে চার প্রজাতির ১৫৮টি ছাগল, ২৬টি টার্কিশ দুম্বা, ৬টি হরিণ, দুই প্রজাতির হাঁস, পুকুরে মাছের চাষ ইত্যাদি। কোনো কিছুই স্বল্পমেয়াদী লাভের জন্য নয় বরং একে একটি পরিবেশসম্মত আধুনিক খামার হিসেবে গড়ে তোলার মিশন রয়েছে উদ্যোক্তাদের। একটি শেডে রয়েছে রংবেরঙের পাখপাখালি। কিচিরমিচির শব্দে মুখরিত। খামারের এক পাশে পুকুর। সেখানে চলছে মাছ চাষ। পুকুর পাড় ঘেঁষে হাঁসের খামার। আছে দুই প্রজাতির হাঁস। রাজহাঁস ও খাকি ক্যাম্বেল। বিল্লাল জানালেন, খামারে ১৫০০ ক্যাম্বেল ও রাজ হাঁস, ৪৩টি খরগোশ, ৮০টি কবুতর, ১৪টি সৌখিন পাখিসহ পুকুরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে।
আমিষ ফুডস অ্যান্ড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, বাণিজ্যের পাশাপাশি মানুষকে নির্ভেজাল পণ্য পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টাতেই এ উদ্যোগ। উদ্যোগের সঙ্গে যতটা না বাণিজ্যিক লাভের বিষয় যুক্ত তার চেয়ে বেশি সামাজিক দায়বদ্ধতা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড