নিজস্ব প্রতিবেদক
দারিদ্রতার কষাঘাতে সপ্তম শ্রেণীতে ওঠার পর লেখা পড়া বন্ধ হয়ে যায় রাকিবের। অসহায় মা-বাবাকে সাহায্যের জন্য ১৫ বছর বয়স থেকে রড় মিস্ত্রির কাজ করে সে। এরপর অভাব-অনটন দূর করে বোন ও প্রতিবন্ধী ভাইয়ের দুঃখ দেখে পরিবারের মুখে হাঁসি ফোটাতে একটু বেশি আয়ের আসায় ঢাকা চলে যায়। বাধ্য হয় উঁচু ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ কাজও করতে।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের ইশোরকোল গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে রাকিব মিয়া (২০)। তিন সন্তানের মধ্যে রাকিব দ্বিতীয়।
প্রায় ১৪ মাস ধরে সে ঠিকঠাক কাজ করে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন দূর স্বপ্নের মত বিপদ ঘনিয়ে এলো রাকিবের জীবনে।"একটা ৭ তলা ভবনে কাজ করছিলো রাকিব,কাজও প্রায় শেষের দিকে এমতাবস্থায় সাইটের সাটারের বোর্ড খুলতে ছিলেন রাকিব কোমরে বেল না থাকায় কাঠ খুলতে গিয়ে ছাদ থেকে পা পিছলে নিচে পরে যায় রাকিব।নিচে পরে জ্ঞান হারায় সে।
সেখান থেকে তার সহকর্মীরা গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ডা. জানান রাকিব প্রাণে বেচে গেলেও তার কোমরের নিচে ডান পায়ের হাড় খুব বাজে ভাবে ভেঙ্গে গিয়েছে।
এমতাবস্থায় ডাক্তার জানান অপারেশনের পর তার কোমরের বল লাগাতে হবে। এর জন্য চিকিৎসা বাবদ চার লাখ টাকার প্রয়োজন।
রাকিব টাকার অভাবে গুরুতর অসুস্থ অবস্থাতেই বাড়ি ফিরে আসে। ছেলের এই পরিস্থিতি দেখে তার দরিদ্র মা-বাবা বুঝতে পারছেনা কি ভাবে কি করবেন। এত টাকা জোগাড় করবেই বা কিভাবে।
স্থানীয় সানলাইট ফেডারেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রাকিবের এই অবস্থা দেখে হাট-বাজার থেকে স্বল্প কিছু চিকিৎসা সহায়তা বাবদ টাকা তুলে রাকিবের পরিবারকে দেয়। তা দিয়ে রাকিবের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।
রাকিব জানায়,আমি আগের মত সুস্থ হয়ে কাজ করতে চাই। বাবা মায়ের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। সমাজের বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। আমি কি পঙ্গুই থেকে যাবো আজীবন? সুস্থ হয়ে আগের মত চলা ফেরা করতে পারবো না।
কিন্তু হতদরিদ্র কৃষক বাবা মানিক মিয়ার পক্ষে ছেলের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ছেলের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় করেছি। খেয়ে না খেয়ে ছেলের চিকিৎসা করেছি। এখন রংপুরে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য আমার নেই। মানুষের বাড়িতে দিন হাজিরা কাজ করি,তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে। ছেলের চিকিৎসার জন্য এত টাকা জোগাড় করবো কিভাবে। কেউ যদি কিছু অর্থ সহায়তা করতো তাহলে কিছুটা উপকৃত হতাম।
রাকিবের মা বলেন, আমরা গরিব মানুষ, তাই ছেলেটাকে চিকিৎসা করাতে পারছি না। অপারেশনের জন্য প্রায় চার লাখ টকার প্রয়োজন যা আমাদের পক্ষে যোগার বহন করা সম্ভব নয়। এসময় তিনি বিত্তবানদের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
স্থানীয়রা জানায়,রাকিব খুব পরিশ্রমী ছেলে।পরিবারে অভাব অনটন থাকায় রাকিব লেখাপড়া বাদ দিয়ে কর্মের পথ বেঁচে নেয়। ভালো কিছু করার আশায় ঢাকায় যায় কিন্তু লালিত স্বপ্ন আর পূরণ হলো না রাকিবের। তার চিকিৎসার জন্য যে খরচ দরকার তার পরিবারের পক্ষে জোগার করা একবারেই অসম্ভব। কোন বিত্তবান ব্যক্তি যদি চিকিৎসার জন্য কিছু সহায়তা করতো তাহলে তার অপারেশন করা সম্ভব হবে।
সাহায্যের জন্য রাকিবের পরিবারের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা- নাম: রাকিব মিয়া (২০) পিতা- মানিক মিয়া গ্রাম: ইশোরকোল, পোস্ট: কাকিনা, থানা: কালীগঞ্জ, জেলা: লালমনিরহাট।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড