• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বন্ধে ‘রুখে দাঁড়াও’ কর্মসূচি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ অক্টোবর ২০২০, ১৩:২১
রুখে দাঁড়াও কর্মসূচি
নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বন্ধে ‘রুখে দাঁড়াও’ কর্মসূচি (ছবি : দৈনিক অধিকার)

সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আমাল ফাউন্ডেশন। মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গিয়ে নারীদের যৌন হয়রানি ও সহিংসতাসহ নানাবিধি ঘটনার সাক্ষী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ইশরাত করিম ইভ।

দেশে স্বেচ্ছাসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় ২০২০ সালে ফোবস্ ম্যাগাজিনের এশিয়ার সেরা ৩০ এ স্থান পান এই নারী স্বেচ্ছাসেবী। আন্তর্জাতিক কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী ‘রুখে দাড়াও’ প্রচার অভিযানের উদ্বোধনকালে কন্যা তথা নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বন্ধ করতে নারী-পুরুষ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে আমাল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ইশরাত করিম ইভ বলেন, কন্যা প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগেই চর বা বস্তিবাসী বাবা-মা উদ্বেগে থাকেন। যৌন হয়রানি ও মানসিক হেনস্তা থেকে মেয়েকে বাঁচাতে একরকম ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যেই বিয়ে দিয়ে থাকেন।

তিনি বলেন, কেবল চর কিংবা বস্তীতেই নয় সারাদেশেই পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সব জায়গাতেই এমন চিত্র। হর-হামেশায় তার কাছে এসব খবরগুলো আসে। নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির অভাব, কুসংস্কার, শিক্ষার অভাব আর সমাজের দুশ্চরিত্র লোকদের কারণেই এই সমস্যাটি থেকে পরিত্রাণ মিলছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই মুহূর্তে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নারীকে ঘর থেকে বের হয়ে এসে শিক্ষা ও কর্ম পরিসরে অংশগ্রহণ নিতে হবে। যদি নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানি বন্ধ না হয়, তবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা কেবল স্বপ্নই থেকে যাবে বলে মনে করেন তিনি। এজন্য তিনি নারীদের অগ্রগামী করার উদ্যোগ নিতে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানকেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

এ দিকে, পত্র-পত্রিকার সাম্প্রতিক খবরে জানা যায়, ঘরের বাইরে ছাড়া বাংলাদেশের নারীরা পারিবারিকভাবেই বেশি সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এর মধ্যে প্রতি তিনজন নারীর মধ্যে দুইজনই সহিংসতার শিকার।

ইশরাত করিম ইভ বলেন, এসব সংবাদ গণমাধ্যমে ঠিকমতো উঠে আসছে না। গণমাধ্যমে ঘরের বাইরের সহিংসতা ও যৌন সহিংসতা যতটা গুরুত্ব পায়, পারিবারিক সহিংসতা ততটা গুরুত্ব পায় না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ৭৫ শতাংশ প্রতিবেদনই ধর্ষণ বা গণধর্ষণ সম্পর্কিত। অথচ বেশিরভাগ সহিংসতাই পারিবারিক সহিংসতা।

প্রতিবেদনের বরাতে তিনি আরও বলেন, সহিংসতার শিকার প্রায় ৯৭ শতাংশ ভুক্তভোগীর অভিযোগ আদালতে শুনানির পর্যায়ে যায় না। অনেক সময় গেলেও তা বাতিল হয়ে যায়। সহিংসতায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে মাত্র তিন দশমিক এক শতাংশ নিজেদের পক্ষে বিচার পেলেও মামলা খারিজ বা অপরাধীকে খালাস করে দেওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তিনি বলেন, আইন থাকার পরও রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা। যার কারণে অপরাধীরা ছাড়া পেয়ে যায় এবং বারবার একই ধরণের অপরাধগুলো করতে থাকে। এই প্রতিবন্ধকতাগুলো চিহ্নিত করার লক্ষ্যেই আমাল ফাউন্ডেশন দেশের ৬৪ জেলায় ‘রুখে দাঁড়াও’ প্রচার অভিযান কর্মসূচীর আয়োজন করেছে। এর মাধ্যমে মানুষের মাঝে সামাজিক সচেতনতার কাজটি করা হবে, দেশের আইন-কানুন সম্পর্কে নারীদের সচেতন করা হবে।

আরও পড়ুন : আইন ও অধিকার ফাউন্ডেশনের বগুড়া সদরের নতুন কমিটি

৬৪টি জেলার ৬৪টি কমিউনিটি সংগঠনকে যুক্ত করে এই কাজটিকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এই সংগঠনগুলোর মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীরা আর যেন সহিংসার স্বীকার না হয় সেজন্য কাজ করবে। আবার কোথাও সহিংসতার কিংবা যৌন হয়রানি হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে যেন ব্যবস্থা নিতে পারে, সে বিষয়েও সহযোগিতা করবে আমাল ফাউন্ডেশন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড