আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে কুর্দি গেরিলাদের বিরুদ্ধে তুরস্কের ব্যাপক সেনা অভিযানের পর এবার অঞ্চলটিতে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কারণে বিদ্রোহীদের নিধনে চলমান অভিযানে তুরস্কের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকালে সোচিতে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক শেষে এমনটাই দাবি করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি বৈঠকটির পর আমাদের ‘অপারেশন পিস স্প্রিংয়ের’ সামনে আরও বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। কেননা অঞ্চলটির কুর্দি বিদ্রোহীদের দমনে আমাদের মধ্যে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, সিরিয়ায় চলমান তুর্কি অভিযান নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলতে এরদোগান আচমকা দেশটি সফরে যান। যেখানে তারা বিষয়টি নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন। যদিও সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অন্যতম প্রধান মিত্র হচ্ছে এই রাশিয়া।
হঠাৎ মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণায় এক রকম বিপাকে পড়ে যাওয়া কুর্দিরা শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করেছিল। তবে কুর্দি নেতাদের দাবি, এখন আর তারা রাশিয়া এমনকি সিরিয়া সরকারের ওপরও আস্থা রাখতে পারছেন না।
এ দিকে বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট এরদোগান এক বিবৃতিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে; কেননা অঞ্চলটি থেকে বিদ্রোহীদের বিতাড়িত করার এই লড়াইয়ে রাশিয়া আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন আমাকে বলেছেন, সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের সকল রাজনৈতিক বিষয়ে তিনি অবগত। তাই অতীতের মতো এবারও তাদের সমর্থন আমাদের পাশে রয়েছে।’
অপর দিকে সূত্রের বরাতে তুর্কি বার্তা সংস্থা ‘আনাদোলু এজেন্সি’ জানায়, দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হওয়ার পর উভয় পক্ষের মধ্যে ১৪ অনুচ্ছেদের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। যেখানে তারা কুর্দি বাহিনীকে প্রতিহত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে একমত পোষণ করেন।’
এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে 'অপারেশন পিস স্প্রিং' নামে চলমান তুর্কি সেনাদের অভিযান বন্ধে টানা পাঁচদিনের এক অস্ত্রবিরতির মার্কিন প্রস্তাবে সম্মত হয় তুরস্ক। যদিও এরই মধ্যে সেই সময়ও শেষ হয়ে গেছে। তবে নির্ধারিত সেই সময়ের মধ্যে মার্কিন সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর সঙ্গে তুর্কি সেনাদের বেশ কয়েকবার বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
যদিও গত ৯ অক্টোবর অঞ্চলটিতে অবস্থানরত প্রায় হাজার খানেক মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মূলত এর পরপরই সিরিয়ায় কুর্দি নিধনের নামে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। যদিও তখন সেসব সেনাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো নতুন সিদ্ধান্তে সেনাদের এখন আর যুক্তরাষ্ট্রে নয়; বরং তাদের ইরাক মিশনে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়।
আরও পড়ুন :- অনুমোদন ছাড়াই ইরাকে সেনা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
জাতিসংঘের তথ্য মতে, সিরিয়ায় তুরস্কের সেনা অভিযান চালানোর পর সেখানে কয়েক ডজন বেসামরিক নিহত হয়েছে। তাছাড়া সেখানে অবস্থানরত কমপক্ষে ১ লাখ ৬০ হাজার লোক এরই মধ্যে অঞ্চলটি ছেড়ে পালিয়েছে।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড