• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিশ্বব্যাপী ভাষা বৈচিত্র্য : অস্ট্রেলিয়ায় তৃতীয় প্রধান ভাষা আরবি

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৫৪
অস্ট্রেলিয়ার জনগণ
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন ভাষাভাষী জনগণ। (ছবিসূত্র : এসবিএস)

বিশ্বব্যাপী ভাষার মানচিত্র তৈরির ক্ষেত্রে সাধারণত খুব সরলীকরণ করা হয়ে থাকে। যেখানে মোটাদাগে বলা হয়, অমুক ভাষা অমুক অঞ্চলের জন্য। যদিও মানুষ সব সময়ই এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে ভ্রমণ করে থাকেন। যে কারণে তাদের সঙ্গে নিজ নিজ মাতৃভাষাও সেই ভ্রমণের অংশ হয়। এই যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সফরে গেলে কুইন্স এবং ব্রুকলিনের মতো অঞ্চলগুলোর দেখা মিলবে, যেখানে বোঝার কোনো উপায় নেই যে, সেটি বাংলার কোনো মুলুক নয়। যে কারণে ভাষা নিয়ে এমন সরলীকরণের আদতে তেমন একটা সুযোগ নেই।

সে যাই হোক, ওশেনিয়া অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ায় ভাষা ব্যবহারের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিশ্ব মুসলিমদের কাছে অতি পরিচিত ভাষা ‘আরবি’। বিশ্বব্যাপী ভাষা বৈচিত্র্যের দিক থেকে এটা যেমনটা সুখের, ঠিক তেমনই দুঃখেরও বটে। কেননা আদিবাসীদের ভাষা বিলুপ্তির দিক থেকেও এক রকম ঝুঁকিতে রয়েছে আধুনিকতার দিকে এগুতে থাকা এই দেশটি।

বিভিন্ন গবেষণার প্রতিবেদনে আসে বিস্মিত সব তথ্য। যেখানে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় প্রধান ভাষা হচ্ছে আরবি। তাহলে দ্বিতীয় কোনটি? কেন না মান্দারিন এবং কেন ভাষাটি অনেক অঞ্চলেরই প্রথম তিনটি ভাষার একটি হয়ে উঠেছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা। সেখানে মূল ভাষা ইংরেজির পর অন্য ভাষাগুলোর অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ নিলে দেখা যায়, ফরাসি অথবা স্প্যানিশ।

এ দিকে অস্ট্রেলিয়ার এই ভাষার অবস্থান সম্পর্কে নিওম্যাম স্টুডিওসের গবেষণা তথ্যকে এরই মধ্যে সমর্থন জানিয়েছে দেশটির আদমশুমারিও। যেখানে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৪৬ লাখ। যার মধ্যে মাত্র আড়াই শতাংশই কথা বলে মান্দারিন ভাষায়। আর আরবিতে কথা বলে প্রায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ লোক, সংখ্যার হিসাবে যা ৩ লাখ ২১ হাজারের অধিক।

এবার কথা হলো- মান্দারিন জনগোষ্ঠীর উৎস না হয় চীন। তবে আরবি তো কোনো একক দেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা নয়। অস্ট্রেলিয়ার এই আরবি ভাষাভাষীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাহলে ঠিক কারা?

এসব বিষয়ে এসবিএস এরাবিকের তথ্যে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার আরবি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীদের অধিকাংশই লেবানিজ। এ প্রসঙ্গে আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়ায় আরবি ভাষাতে কথা বলা প্রায় ৭৮ হাজার লোকই দেশটিতে লেবানন থেকে পাড়ি জমিয়েছেন। মূলত এর পরেই রয়েছে ইরাকের অবস্থান। দেশটিতে সেখান থেকে আগত অভিবাসীদের সংখ্যা প্রায় ৬৭ হাজার। যে তালিকায় মোট ৩৯ হাজারের অধিক প্রতিনিধি নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মিসর।

বিশ্লেষকদের মতে, ওশেনিয়া দ্বীপরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ায় আরবদের অভিবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৮৮০ সালের দিকে। মূলত এর প্রায় একশ বছর পর অর্থাৎ ১৯৮০ সালের দিকে দেশটিতে এ অভিবাসনের হার বৃদ্ধি পায় সবচেয়ে বেশি। মূলত অস্ট্রেলিয়া সরকারের অভিবাসীদের প্রতি উদারীকরণের পথ ধরেই এ হার ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যে কারণে দেশটির বর্তমান সরকারি নীতিতে নিজস্ব ভাষার চর্চাকে অনেকাংশে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আর মূলত এটিই দেশটিতে পাড়ি জমাতে বিভিন্ন ভাষাভাষী লোকদের উৎসাহিত করছে। এবার এটাই হয়তো বর্তমানে স্থানীয় আদিবাসী ভাষাকে চাপে রেখেছে।

আরও পড়ুন :- সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা চালাচ্ছে তুরস্ক

অপর দিকে নিওম্যাম স্টুডিওসের গবেষণায় উঠে এসেছে আরও দারুণ কিছু তথ্য। যেখানে বলা হয়, ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশে মারাঠা ভাষায় কথা বলে ৮ কোটিরও অধিক লোক, যা গোটা বিশ্বে জার্মান ভাষায় কথা বলা লোকের মোট সংখ্যার প্রায় কাছাকাছি। যদিও মাতৃভাষা হিসেবে এই জার্মান ভাষা ব্যবহার করে মাত্র ৯ থেকে সাড়ে ৯ কোটি লোক। আবার চীনে ‘উ’ নামের একটি ভাষায় কথা বলা মানুষের সংখ্যাও প্রায় ৮ কোটির অধিক।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড