আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউরেশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় দেশ হংকংয়ে গণতন্ত্রকামীদের সরকারবিরোধী বিক্ষোভে দীর্ঘদিন যাবত ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ। গত চার মাসের বেশি সময় যাবত চীনপন্থি শাসক ক্যারি ল্যামের পদত্যাগের দাবিতে চলা আন্দোলন ক্রমশ সহিংসতার দিকে যাচ্ছে। যে কারণে বিক্ষোভ দমনে এবার চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা ‘রয়টার্স’ জানায়, রবিবার (১৩ অক্টোবর) বিদেশ সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট নেপালি প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সঙ্গে বৈঠকের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেন। হংকংয়ের সড়কে বিক্ষোভরত জনতার উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জিনপিং বলেন, ‘বাহিরের কোনো শক্তি চীনকে বিভক্ত করতে পারবে না। কখনো যদি এমনটা চেষ্টা করা হয় তাহলে এর জন্য তাদের চরম ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।’
এ সময় নেপালি প্রধানমন্ত্রীও তাকে আশ্বস্ত করেন, তাদের দেশের মাটিতে কখনোই চীনবিরোধী এমন কোনো কার্যক্রম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। বিশ্লেষকদের ধারণা, হংকংয়ে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতিকে উল্লেখ করেই জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রকে এমন হুমকিটি দিয়েছেন।
দীর্ঘ ২২ বছর পর প্রথম কোনো চীনা প্রেসিডেন্ট হিসেবে নেপাল সফরে গেলেন জিনপিং। তার এই সফরে দেশ দুটির মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হতে পারে। যার মাধ্যমে উভয় দেশই ব্যাপকভাবে লাভবান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৈঠক শেষে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কোনো বহির্শক্তি যদি চীনের যে কোনো অংশকে পৃথক করতে চায় তাহলে তারা খণ্ড-বিখণ্ড দেহের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে কেউই তাদের আর বাঁচাতে পারবে না।’ এমনকি বিদেশিদের সকল অন্যায় কাজে কেউ সমর্থন দিলেও চীন শক্ত হাতে তাদের প্রতিহত করবে বলে দাবি করেছেন জিনপিং।
প্রায় ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকদের অধীনে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অঞ্চলটি শক্তিশালী চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। ঐতিহাসিক এই দিবসটির ২২ বছর পূর্তিতে সোমবার আন্দোলনে সড়ক অবরোধ করেন গণতন্ত্রকামী এসব লোকজন। প্রতি বছরের এই দিনে কর্মকর্তারা এক দিকে সরকারি ভবনগুলোতে উৎসব পালন করেন আর অপর দিকে গণতন্ত্রকামীরা অবস্থান নেন রাজপথে।
দীর্ঘদিন যাবত হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল থেকে অঞ্চলটিকে স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দেয় দেশটি। এর আগে গত মাসেও চীনপন্থি এক বিল নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ইউরেশিয়ার দক্ষিণপূর্ব উপকূলের এই দেশ।
আরও পড়ুন :- হামলায় অনড় এরদোগান, এবার হুমকি দিলেন ইউরোপকেও
মূলত চীন এবং তাইওয়ানে আসামি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত একটি বিলের বিপক্ষে তখন গোটা দেশে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনকারীদের মূল ক্ষোভ দাঁড়ায় চীনের সঙ্গে সমঝোতা নিয়ে। বেইজিংয়ের দুর্বল আইন ব্যবস্থা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের রেকর্ডের কারণে হংকংয়ের সাধারণ মানুষ সেখানে কাউকে ফেরত পাঠাতে চাইছেন না। তাদের মতে, পার্লামেন্টে বিলটি পাস হলে তা অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ক্ষেত্রে চীনা হস্তক্ষেপের সুযোগ অনেকাংশে বাড়িয়ে দেবে।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড