• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সিরিয়ায় তুর্কি আগ্রাসনে গৃহহীন লক্ষাধিক বেসামরিক

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১২ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৩৬
তুরস্কে সেনা অভিযান
তুরস্কে সেনা অভিযানে গৃহহীন বেসামরিকরা। (ছবিসূত্র : দ্য টেলিগ্রাফ)

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে তুরস্কের চলমান অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৭৭ জন কুর্দি সেনা নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়া আহত হয়েছেন বাহিনীর আরও কমপক্ষে হাজার খানেক সদস্য। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) তুর্কি জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

তুর্কি সেনাদের চলমান অভিযানে গত কয়েকদিনে প্রায় এক লাখেরও অধিক লোক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন বলে এরই মধ্যে দাবি করেছে জাতিসংঘ। গত বুধবার (৯ অক্টোবর) অভিযানটি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘের পাঠানো বিবৃতির বরাতে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, তুরস্কের অব্যাহত সামরিক অভিযানের ফলে উত্তরাঞ্চলীয় তাল তামের শহর ও হাসাকেহ নগরীর বিভিন্ন স্থাপনা ও বিদ্যালয়ে অসংখ্য লোক আশ্রয় নিয়েছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় শরণার্থী সংকট ক্রমেই চরম আকার ধারণ করছে উল্লেখ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সমন্বয় কার্যালয় (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, তুর্কি সেনাদের চলমান অভিযানের কারণে সেখান থেকে লক্ষাধিক বেসামরিক তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও সহায়তাকারী সংস্থাগুলোর মতে, এবারের হামলায় গৃহহীনদের এই সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখের অধিক হতে পারে। যাদের অধিকাংশই তাল আবিয়াদ শহর থেকে পালিয়েছেন। তারা বর্তমানে নিজেদের মৃত্যু ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এ দিকে অবিলম্বে এই সেনা অভিযান বন্ধ করার জন্য তুর্কি প্রশাসনকে এরই মধ্যে অনুরোধ জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরান। তাছাড়া তুরস্কের এই আগ্রাসন ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত, ইতালির মতো বহু দেশ। এমনকি সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। তবে এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের সমর্থন কিন্তু তুর্কি প্রশাসনের প্রতিই আছে।

এত কিছুর পরও এরদোগান কিন্তু একরোখা। নিজের টুইট পোস্টে ‘পিস স্প্রিং’ (শান্তির বসন্ত) আনার কথা উল্লেখ করে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করেছেন তিনি।

কোনো দেশের পরোয়া না করে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) উল্টো তিনিই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) হুমকি দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তুরস্কের এই অভিযানকে আগ্রাসনের তকমা দেওয়া হলে, আঙ্কারা থেকে অবিলম্বে ৩৫ লক্ষাধিক শরণার্থীকে সরাসরি ইউরোপেই ফেরত পাঠানো হবে।’

অপর দিকে সিরিয়ার কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে তুর্কি হামলা অব্যাহত থাকায় দেশটির ওপর অচিরেই এক বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এমনকি ন্যাটো বাহিনীতে তুরস্কের সদস্য পদ থাকা নিয়েও এবার আলোচনা শুরু হয়েছে বলে এরই মধ্যে দাবি করেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। খবর ‘ব্লুমবার্গে’র।

ফরাসি ইইউ বিষয়ক মন্ত্রী এমিলি ‘দ্য মনতচালিন’ গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আগামী সপ্তাহের মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ এক বৈঠকে চলমান তুর্কি আগ্রাসনের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে। যদিও এই একই ইস্যুতে ফিনল্যান্ড এবং নরওয়ে এরই মধ্যে তুর্কি প্রশাসনের কাছে নিজেদের সমরাস্ত্র বিক্রি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।

আরও পড়ুন :- হামলায় অনড় এরদোগান, এবার হুমকি দিলেন ইউরোপকেও

এর আগে গত বুধবার (৯ অক্টোবর) সিরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর ওপর সশস্ত্র অভিযান শুরু করে তুরস্ক। যা এখনো অব্যাহত আছে।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড