• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইয়েমেনে আগ্রাসন বন্ধ হলেই সৌদির সঙ্গে আলোচনা, দাবি ইরানের

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৯ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৩০
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ। (ছবিসূত্র : দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট)

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের উপর সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের চলমান আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে দেশটির সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না বলে দাবি ইরানের। এখন কেবল ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধ হলেই রিয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে তেহরান।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিবেশীদের সহযোগিতা করতে তেহরান পুরোপুরি প্রস্তুত। সৌদি তাদের আগ্রাসন থামিয়ে আঞ্চলিক ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চাইলে আমরাও সে আহ্বানে সাড়া দেব।’

বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান ইরানের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সম্ভাব্য আলোচনায় মধ্যস্থতা করতে সম্প্রতি প্রতিবেশী ইরাক ও পাকিস্তানের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এবার সে সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়েই ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।

জাওয়াদ জারিফ বলেন, ‘সৌদি আরব যখন ইরানের সঙ্গে সংলাপের আগ্রহ প্রকাশ করেছে তখন তাদের অবশ্যই ‘মানুষ হত্যা’ বন্ধ করে আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। সে ক্ষেত্রেই রিয়াদ কেবল তেহরানকে তাদের পাশে পাবে।’

ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতার ভিত্তিতে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠাই আমাদের ঘোষিত নীতি। যে নীতির ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সম্প্রতি জাতিসংঘ ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ‘হরমুজ প্রণালীর শান্তি’ পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন। এমনকি একটি ‘আশার জোট’ গঠনের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন।’

এর আগে গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সৌদি আরব সফরে যান। যেখানে তাকে রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যকার মধ্যস্থতার জন্য প্রত্যক্ষ উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ করেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। পাক প্রধানমন্ত্রীকে এমবিএস খ্যাত সৌদি যুবরাজ বলেন, ‘আমি সবসময়ই যুদ্ধ এড়াতে চাই।’

সম্প্রতি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনের সাইড লাইনে ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পাকিস্তানি এই নেতার কথা হয়েছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ইমরান রিয়াদের এই প্রস্তাবকে তেহরানের সরকার প্রধানের কাছে তুলে ধরেছেন।

গত শনিবার (৫ অক্টোবর) মার্কিন গণমাধ্যম ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’ জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের আরামকোর দুটি তেল স্থাপনায় হামলার পর সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পুরোপুরি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে রিয়াদ। যার প্রেক্ষিতে সৌদি আরবের সার্বিক তেল উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। মূলত এরপরই তেহরানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মধ্যস্থতা করতে পাকিস্তান ও ইরাকের শরণাপন্ন হন বিন সালমান।

এ দিকে রিয়াদের পক্ষ থেকে নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে ইরানের সঙ্গে মধ্যস্থতার বিষয়ে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের শরণাপন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। যদিও সৌদি যুবরাজ সরাসরি এ অনুরোধটি করেছেন বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে এবার তা অস্বীকার করেছে রিয়াদ।

যদিও তেহরানের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়, আমাদের দিক থেকে আলোচনার বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। বিষয়টি নিয়ে তেহরানের অবস্থান পুরোপুরি উন্মুক্ত। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম ‘আল-জাজিরাকে’ সাক্ষাৎকার দেন ইরানি স্পিকার আলী লারিজানি। তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব এবং অঞ্চলটির অন্যান্য দেশের সঙ্গে সংলাপের ব্যাপারে ইরান পুরোপুরি উন্মুক্ত। কেননা তেহরান-রিয়াদ সম্পর্ক এ অঞ্চলের নিরাপত্তাগত ও রাজনৈতিক বহু সমস্যা সমাধানে সক্ষম।’

অবশ্য ইরান বলছে, মার্কিনসহ যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেই কেবল তারা সব ধরনের আলোচনায় আগ্রহী। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রও এখন আলোচনার কথা বলছে। এমনকি সৌদি আরবও তাদের আলোচনার দ্বার খুলতে শুরু করেছে।

অপর দিকে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী আদিল আবদুল মাহদী গত সপ্তাহেই আল জাজিরাকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। যেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস তেহরানের সঙ্গে উত্তেজনার পারদ কমিয়ে আনতে চাইছে রিয়াদ। আর এমনটা হলে কেবল সেই দেশ দুটিই নয়; গোটা মধ্যপ্রাচ্য এর সুফল ভোগ করতে পারবে।’

আরও পড়ুন :- ইমরানের মধ্যস্থতায় আলোচনায় সম্মত ইরান-সৌদি

ইরাকি প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রত্যেকেই আলোচনা বিষয়ে উন্মুক্ত। তাই এখনই সুযোগ; যা সকল পক্ষকে কাজে লাগাতে হবে।’

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড